বিষয়বস্তুতে চলুন

যাঁদের দেখেছি/দুই

উইকিসংকলন থেকে

দুই

 বাবার একটি অনতিবৃহৎ পুস্তকাগার ছিল। ইংরেজী ও বাংলা দুইশ্রেণীর কেতাবই সাজানো থাকত আলমারিতে। সেখানে প্রায়ই অনধিকার প্রবেশ করতুম গোপনে। ইংরেজী বই প’ড়ে বুঝবার বয়স তখনো হয় নি। তাই প্রদীপ্ত আগ্রহে আক্রমণ করতুম বাংলা বইগুলিকেই। এই পুস্তকাগারের দৌলতে বালক বয়স পার হবার আগেই তখনকার বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে করেছিলুম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন।

 ঐ পুস্তকাগারে ব’সেই গিরিশচন্দ্রের রচনার সঙ্গে প্রথমে পরিচিত হই। কিন্তু তাঁর নাটকগুলি পড়তে আমার ভালো লাগে নি, এখনো ভালো লাগে না। এজন্য তাঁর লিখিত নাটকগুলিকে দোষ দেওয়া যায় না। কারণ গিরিশচন্দ্র সেগুলিকে মঞ্চের জন্যে অভিনয়ের উপযোগী ক’রে লিখেছিলেন—সংস্কৃতে ও ইংরেজীতে যাকে বলে যথাক্রমে ‘দৃশ্যকাব্য’ ও ‘প্লে’। সেগুলির নাটকীয় ক্রিয়া, আখ্যানবস্তু, পাত্র-পাত্রী ও সংলাপ প্রভৃতি মঞ্চের উপরে এমন যথাযথভাবে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে যে, তাদের নাটকত্ব ও নাট্যকারের প্রতিভা চিত্তকে একেবারে অভিভূত ক’রে দেয় এবং তখনই গিরিশচন্দ্রের অতুলনীয় বিশেষত্ব সম্বন্ধে সচেতন না হয়ে থাকা যায় না।

 গিরিশচন্দ্রের অভিনয়োপযোগী নাটকগুলি পাঠোপযোগী হয় না ব’লে বহু বিখ্যাত সাহিত্যিককেই তাঁর সম্বন্ধে ভ্রান্ত মত পোষণ করতে দেখেছি। “প্লে”র মধ্যে তাঁরা খোঁজেন কাব্য বা সাহিত্যরস। নিত্য-দৃষ্ট সংসারে সাধারণ মেয়ে-পুরুষরা যে-ভাবে কথাবার্তা কয়, গিরিশচন্দ্র তাঁর নাটকীয় পাত্র-পাত্রীর মুখে ঠিক সেইরকম ভাষাই দিতে চাইতেন এবং রঙ্গালয়ের নাট্যকারের পক্ষে তাই করাই উচিত ব’লে মনে হয়। বার্নার্ড শ পর্য্যন্ত মত প্রকাশ করেছেন: অভিনয়ের নাটকের পক্ষে উচ্চশ্রেণীর সাহিত্যরস হচ্ছে মারাত্মক।

 ক্ষীরোদপ্রসাদ ও দ্বিজেন্দ্রলাল অলঙ্কৃত ভাষা ও কাব্যরসের পক্ষপাতী ছিলেন, তাই তাঁদের নাটকগুলিও হয়েছে অপেক্ষাকৃত পাঠোপযোগী। কিন্তু এ কথা সকলেই জানেন এবং মানেন যে, নাট্যকার হিসেবে তাঁদের আসন গিরিশচন্দ্রের নীচে।

 বালকবয়স পার হলুম, রঙ্গালয়ে গিরিশচন্দ্রের নাটকের অভিনয় দেখলুম—কেবল নাটকের নয়, তাঁর নিজেরও অভিনয়—সীতারাম, করুণাময়, করিম চাচা ও বীরেন্দ্র সিংহের ভূমিকায়। নাট্যসাহিত্যে এবং নটচর্যায় তাঁর সমান অসাধারণতা দেখে আমার বিস্ময়ের সীমা রইল না। তারপর মিনার্ভা থিয়েটার ঘোষণা করলেন মাত্র এক রাত্রির জন্যে “প্রফুল্লে”র পুনরভিনয়। তারিখ ঠিক স্মরণ করতে পারছি না, তবে আমি তখন তরুণ যুবক। সাগ্রহে অভিনয় দেখতে ছুটলুম। গিরিশচন্দ্র ‘যোগেশ’, অর্ধেন্দুশেখর ‘রমেশ’, দানীবাবু ‘সুরেশ’, স্বর্গীয় তিনকড়ি ‘জ্ঞানদা’, সুশীলাবালা ‘প্রফুল্ল’। প্রেক্ষাগৃহে জনতারণ্য। কষ্টেসৃষ্টে একখানি আসন সংগ্রহ করলুম। যোগেশের ভূমিকায় গিরিশচন্দ্র যে অমৃতায়মান অভিনয় করলেন তা একেবারেই বর্ণনাতীত—অদ্যাবধি তার তুলনা খুঁজে পাই নি— এদেশে তো নয়ই, অন্য কোন দেশেও পাওয়া যায় ব’লে বিশ্বাস করি না।

 দ্বিজেন্দ্রলালের নিজের মুখেই এই উক্তি শুনেছি: ‘বিলাতে জন্মালে গিরিশবাবু নিশ্চয়ই ‘স্যর’ উপাধিতে ভূষিত হতেন। আমি স্যর হেনরি আর্ভিংয়ের অভিনয় দেখেছি। তিনি গিরিশবাবুর চেয়ে ভালো অভিনয় করতেন না।’

 দ্বিজেন্দ্রলাল আরো বলেছিলেন, ‘করুণাময়ের ভূমিকায় আমি গিরিশবাবুর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলুম। যেখানে আত্মহত্যায় উদ্যত করুণাময় শূন্যে হাত বাড়িয়ে গলায় দেবার দড়ি খুঁজছে, গিরিশবাবুর সেখানকার অভিনয়ের তুলনা হয় না।’

 দ্বিজেন্দ্রলাল “প্রফুল্লে” গিরিশচন্দ্রের ‘যোগেশ’ দেখেছিলেন কিনা জানি না, কিন্তু নাটকের সর্বশেষ দৃশ্যে যোগেশরূপে গিরিশচন্দ্রের যে মূর্তি দেখেছি, তা আজ পর্যন্ত আমার মনের ভিতর আঁকা আছে অগ্নি-রেখায়। ‘আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল’ বলবার সময়ে তাঁর চোখে অশ্রু থাকত না, কিন্তু মনে হ’ত সে দুটো পাথরে গড়া চোখ— চরম শোকে প্রস্তরীভূত হয়ে গিয়েছে! অর্ধেন্দুশেখর যোগেশের ভূমিকায় এই দৃশ্যে নিজের অক্ষমতা বুঝে, দুই হাতে চোখ ঢেকে মাটির উপরে ব’সে পড়তেন।

 “প্রফুল্ল” দেখবার পর আমার আর তর সইল না। দু’একদিন পরেই অপরাহ্ণকালে গিয়ে হাজির হলুম গিরিশচন্দ্রের বাগবাজারের বাসভবনে। এখানে আর একটি কথা গোপন না করাই উচিত। একেবারে নিঃস্বার্থভাবেই আমি সেদিন ‘হিরো ওয়ারসিপ’ বা মহাপুরুষার্চন করতে যাই নি—সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলুম “রাণীদুর্গাবতী” নামে স্বলিখিত নাটকের পাণ্ডুলিপি। মনের খেয়ালে আমি তখন মাঝে মাঝে নাটক রচনার চেষ্টা করতুম। এখন বুঝেছি, সে সব নাটক হয়েছিল অমৃতলালের ভাষায় ‘না-টক না-মিষ্টি’।

 একটি ফর্দা জমি পেরিয়ে গিরিশচন্দ্রের বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করলুম। শুনলুম তিনি বাহির-বাটীর দ্বিতলে বিশ্রাম করছেন। অতবড় নাট্যকার ও অতবড় অভিনেতা আমার মত অনাহূত নাবালকের আবির্ভাব কিভাবে গ্রহণ করবেন, তাই ভাবতে ভাবতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলুম।

 লম্বা একখানি হলঘর। দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকেই দেখা যায়, আলমারিতে সাজানো রয়েছে সারি সারি বই। পশ্চিমদিকে কাঠের ‘পার্টিশান।’ তারই কাছে চাদর-পাতা তোষকের উপরে তাকিয়া ঠেস দিয়ে ব’সে আছেন গিরিশচন্দ্র; ভাবুক, গম্ভীর মূর্তি— আদুড় গা। প্রশান্ত দৃষ্টি তুলে একবার আমার দিকে তাকালেন। নমস্কার করলুম। প্রতি-নমস্কার ক’রে ঘাড় নেড়ে আমাকে বসবার জন্যে ইঙ্গিত করলেন।

 মেঝেয় পাতা ছিল গালিচা কি সতরঞ্জী মনে নেই, তারই উপরে ব’সে পড়লুম।

 চোখের সামনে দেখলুম যেন এক সিদ্ধ সাধকের অপূর্ব মূর্তি। তাঁর প্রথম ও মধ্য জীবনের অনেক উদ্দামতার ও উচ্ছৃঙ্খলতার কাহিনী শুনেছিলুম। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন: ‘মদ, গাঁজা আফিং, চরস, ভাং— কোনটা বা বাকি আছে।... ···সব নেশা করে দেখেছি। বোতল বোতল মদ খেয়েছি— একদিন বাইশ বোতল বিয়ার খেয়েছি।’ কিন্তু সে কোন্ গিরিশচন্দ্র জানি না, আমার সামনে তাঁকে দেখলুম না। এঁর ব্যক্তিত্বের ও গাম্ভীর্যের প্রভাবে মন অভিভূত হয়ে যায় প্রথম দর্শনেই। শ্রদ্ধা হয়, ভক্তি হয়, মাথা নত হয়।

 কয়েক মিনিট কাটল। তারপর তিনি মৃদু কণ্ঠে ধীরে ধীরে শুধোলেন, ‘কি দরকার বাবা?’

 —‘আজ্ঞে, আপনাকে দর্শন করতে এসেছি।’

 —‘এই জরাজীর্ণ দেহটা দেখতে এসেছেন? এটা তো কেবল আবরণ। আসল মানুষ থাকে ভেতরে।’

 —‘আজ্ঞে, আপনার নাটক আর অভিনয় দেখলেই বোঝা যায় আপনার ভিতরে আছে আসল মানুষটি।’

 তিনি কিছু বললেন না, তাঁর ওষ্ঠাধরে ফুটেই মিলিয়ে গেল একটি ক্ষীণ হাসির রেখা।

 অল্পক্ষণের নীরবতা। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলেন একটি ভদ্রলোক। বললেন, ‘আমার স্ত্রীর হাতে একটি ফোড়া হয়েছে, একটা ওষুধ দিন।’ (পরে শুনেছি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় গিরিশচন্দ্রের অসামান্য হাতযশ ছিল)।

 গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘জলপটি লাগাও।’

 ভদ্রলোক খুঁত খুঁত ক’রে বললেন, ‘কোন ওষুধ দেবেন না? খালি জলপটিতে কি কাজ হবে?’

 গিরিশচন্দ্র বললেন— সেই মৃদুকণ্ঠেই, ‘জলপটি অত্যন্ত উপকারী। লোকে এর কদর বোঝে না। অনেক সময়ে বড় বড় ওষুধের চেয়েও জলপটিতে বেশী কাজ পাওয়া যায়। আগে জলপটি দিয়ে দেখ, তারপর দরকার হ’লে অন্য ব্যবস্থা করা যাবে।’

 ভদ্রলোকের প্রস্থান। দুইজন যুবকের প্রবেশ। বয়সে আমার চেয়ে বেশী বড় নয়। হাতে খুব বড় একখানা খাতা— বোধ হয় পাণ্ডুলিপি।

 খাতাখানার দিকে সন্দিগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ ক’রে গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘কি চাই বাবা?’

 একটি যুবক বললেন, ‘একখানা নাটক লিখেছি। আপনাকে শোনাতে এসেছি।’

 ভাবহীন মুখে গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘খানিকটা পড় তো শুনি।’

 যুবক সাগ্রহে পাণ্ডুলিপি পাঠ করতে বসলেন। মিনিট দশেক শোনবার পর গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘বাবা, নাটক রচনা করবার আগে সাংসারিক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়—এখনো সে বয়স তোমার হয় নি। আমি নিজে ত্রিশ বৎসর বয়সের আগে মৌলিক নাটক রচনায় হাত দিই নি।’

 আরো দু’চারটি কথার পর যুবকদ্বয়ের প্রস্থান। গিরিশচন্দ্রের সঙ্গে আরো অল্পক্ষণ বাক্যালাপ করলুম। কি কি কথা হ’ল, সব ভালো ক’রে মনে পড়ে না। বহুকাল আগের কথা, কখনো মনে পড়ে, কখনো পড়ে না।

 গাত্রোত্থান ক’রে বললুম, ‘আপনার কাছে উপদেশ পেতে এসেছিলুম, উপদেশ পেয়েছি।’

 —‘কি উপদেশ বাবা?’

 —‘সংসারে অভিজ্ঞতা না জন্মালে নাটক লিখতে নেই। আমিও আপনাকে আমার নাটক শোনাতে এসেছিলুম। কিন্তু আর তা শোনাবার দরকার নেই।’

 বাগবাজারের গিরিশভবনে আর একবার গিয়েছিলুম। তারপর তাঁর সঙ্গে আমার তৃতীয়বার দেখা হয় “কোহিনূর থিয়েটারে”র সামনেকার প্রাঙ্গণে। ফোয়ারার পাশের রাস্তায় তিনি পায়চারি করছিলেন। নমস্কার ক’রে সুধোলুম, ‘আজ তো থিয়েটারে আপনার কোন কাজ নেই, তবু আপনি এসেছেন!’

 তিনি বললেন, ‘শরীর আর বয় না, তবু অধ্যক্ষ যখন হয়েছি, আসতে হয় বৈকি!’

 মনে হচ্ছে, সেইদিনই তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলুম, ‘কোন সভা-সমিতিতে কখনো আপনার দেখা পাই না কেন?’

 অতি মৃদু হেসে তিনি বলেছিলেন, ‘সভা যাঁরা করেন তাঁরা আমাকে পাবার জন্যে ব্যস্ত নন। আর যেতেও আমার ইচ্ছা হয় না। উচ্চশিক্ষিতরা থিয়েটারে আমাদের অভিনয় দেখে খুশী হন বটে, কিন্তু বাইরে মনে মনে আমাদের ঘৃণা করেন। তাই তফাতে থেকেই মান বাঁচাতে চাই।’

 আজ জীবিত থাকলে গিরিশচন্দ্র দেখতে পেতেন, স্রোত বদলে গেছে। বাঙালী অভিনেতারা আজ আর ঘৃণ্য জীব নন।

 অভিনয়ের ঘণ্টা বাজল। বিদায় নিয়ে আসছি, তিনি ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এখনো নাটক-টাটক লেখে। নাকি?’

 —‘আজ্ঞে না, আপনার উপদেশ ভুলি নি। ত্রিশ বৎসর বয়সের আগে নাটক তো লিখবই না, পরেও কখনো লিখব কিনা জানি না।’

 তাঁর সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয় কাশীধামের রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে। ১৩১৫ কি ১৩১৬ খৃষ্টাব্দের কথা। হাঁপানি পীড়ার আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করবার জন্যে তিনি কলকাতা ত্যাগ করেছিলেন। অপরাহ্ণকালে তাঁর কাছে গিয়ে দেখি, কয়েকজন রোগীকে তিনি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দিচ্ছেন। খানিক পরে বৈঠকে এসে বসলেন ওখানকার কয়েকজন গণ্যমান্য লোক— কারুকেই চিনি না। নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা আরম্ভ হ’ল, গিরিশচন্দ্র কখনো শোনেন, কখনো ধীর-স্থির ভাবে আলোচনায় যোগ দেন।

 গিরিশচন্দ্রের সংলাপে সেদিন একটি জিনিষ লক্ষ্য করেছিলুম। তাঁর মতামতের সঙ্গে যুক্তির সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। পরে জেনেছি, কেবল আলোচনা নয়, তাঁর তর্ক করবার শক্তিও ছিল অসাধারণ। পরিব্রাজক ও প্রচারকরূপে পৃথিবী জুড়ে বিজয়-ডঙ্কা বাজিয়ে এসেছেন যে তীক্ষ্ণধী স্বামী বিবেকানন্দ, তর্কযুদ্ধে তিনিও গিরিশচন্দ্রকে এঁটে উঠতে পারতেন না। ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার কেবল বিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন না, দখল ছিল তাঁর নানা শাস্ত্রের উপরে। তিনিও তর্কের শেষে গিরিশচন্দ্রকে বলেছিলেন, ‘তোমার কাছে হেরে গেলুম, দাও পায়ের ধুলো দাও।’ তারপর স্বামী বিবেকানন্দের দিকে ফিরে বললেন, ‘আর কিছু না, his intellectual power মানতেই হবে।’

 অনেকক্ষণ ধ’রে ব’সে ব’সে আলোচনা শুনলুম কিন্তু সেদিন গিরিশচন্দ্রের সঙ্গে কথা কইবার সুবিধা হ’ল না এবং তারপরেও আর কোনদিন হয় নি, কারণ পরদিনই কাশীধাম ত্যাগ করি।