পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১০৮
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)

“প্রীতিভাজনেষু জ্যোতিবাবু,

 আনন্দবাজার পত্রিকায় পড়লাম আপনি স্পণ্ডিলাইটিসে কষ্ট পাচ্ছেন। আমি স্পণ্ডিলাইটিসে অনেকদিন ধরে ভুগেছি। তখন তদানীন্তন প্রেসিডেন্সী কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ প্রতুল মুখার্জী আমাকে একটা বালা দেন যার মধ্যে হাই ইলেকট্রিসিটি ভোল্ট পাশ করানো হয়েছে। সেটা পরে কয়েকদিনের মধ্যেই আমি সুস্থ হই। আমি আপনাকে কয়েকদিনের মধ্যেই একটি তামার বালা পাঠাব, আশা করি সেটা পরে আপনি উপকার পাবেন।

 আপনার দ্রুত নিরাময় কামনা করি, আমি এখন আরামবাগে আছি।

 পুনঃসম্ভবপর হলে সাইকেলে অন্তত দৈনিক আধঘণ্টা চাপবেন। আপনি বোধহয় জানেন, আমি সাইকেলে চেপে ভাল ফল পেয়েছি।

 স্বাঃ প্রফুল্লচন্দ্র সেন

 ২৮.৭.৮৮

 পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রফুল্লচন্দ্র সেন জানান, তামার বালা পরেছিলেন ১৯৭৯ সালে। শ্রীসেনের কথায়, “স্পণ্ডালাইটিস হয়েছিল। ডঃ নীলকান্ত ঘোষাল দেখছিলেন। কিছুই হল না। কিন্তু যেই তামার বালা ব্যবহার করলাম, প্রথম ৭ দিনে ব্যথা কমে গেল। পরের ১৫ দিনে গলা থেকে কলার খুলে ফেললাম।”

 এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর নাকি তামার বালা বিক্রি খুব বেড়ে গিয়েছিল শহর কলকাতায়। প্রফুল্লচন্দ্র সেনের বক্তব্য এবং জ্যোতি বসুকে লেখা চিঠি শুধুমাত্র সাধারণ মানুষদের মধ্যে নয়, বিজ্ঞানকর্মীদের মধ্যেও যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছিল। যার ফলশ্রুতি হিসেবে শরীরের ওপর ধাতুর প্রভাব কতখানি অথবা বাস্তবিকই পরভাব আছে কি না, বহু প্রশ্নের ও পত্রের মুখোমুখি হয়েছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁদের জানিয়েছি, ‘শরীরের উপর ধাতুর প্রভাব আছে’, এটা সম্পূর্ণ অলীক ধারণা।

‘আর্থ’ না করে আমার বালা পরে জীবনধারণ করার চিন্তা
বাস্তবসম্মত নয়। তামাকে ‘আর্থ’ হওয়া থেকে বাঁচাতে
বালাধারণকারীকে তবে পৃথিবীর ছোঁয়া থেকে
নিজেকে সরিয়ে রেখে জীবন ধারণ করতে
হয়। কারণ, বালাধারণকারী পৃথিবীর
সংস্পর্শে এলেই বালার তামা
‘আর্থ’ হয়ে যাবে।