পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এ'দেশেও চলছে চলবে। দুর্গতিনাশিনী দুর্গা বঞ্চিত, অত্যাচারিত মানুষদের পক্ষে আজ পর্যন্ত কুটোটি নেড়ে দেখেছেন কি? কার দুর্গতি তবে তিনি নাশ করেন? ধনকুবেরগোষ্ঠী ও তাদের সহায়কদের?


 লক্ষ্মীপুজো করলে ধন-দৌলত যদি উপচেই পড়বে, তবে হিন্দুদের ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজোর পরেও এত ভয়ংকর দারিদ্র্য কেন?

 ‘শবেবরাত'-এর রাতে খোদাতালার গুণগান গাওয়ার পরও আমাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এত করাল দারিদ্র্য কেন?

 আমেরিকা ও জাপানের ধনকুবেররা লক্ষ্মীপুজো না করেও, শবেবরাতের নমাজ না পড়েও যদি প্রাচুর্যের পাহাড় বানাতে পারেন, তবে তো লক্ষ্মীপুজো ও শবেবরাতের নমাজ পড়াই প্রাচুর্য কেনার পক্ষে অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।

 গণেশ পুজো না করেও মালটিন্যাশানাল কোম্পানিগুলোর বিশ্ববাণিজ্যের অধীশ্বর হয়ে বসা গণেশের ভূমিকাকে বাতিল করার পক্ষে যথেষ্ট নয় কি?

 শেক্সপিয়ার থেকে বিদ্যাসাগর, মেঘনাদ থেকে হকিং সরস্বতী পুজো না করেও বৌদ্ধিক জ্ঞানে হিমালয় হয়ে উঠে প্রমাণ করে দিয়েছেন, জ্ঞানার্জনে সরস্বতীর ভূমিকা শূন্য।


কারণ: বিশ

মানুষের অগ্রগতিতে কার অবদান বেশি? অবতারদের, নাকি বৌদ্ধিক জ্ঞানের সাধক ও স্রষ্টা বিজ্ঞনী-সাহিত্যিক-শিল্পী-কারিগরদের?


প্রিয় পাঠক-পাঠিকা, এবার আমরা একটু হিসেব-নিকেশ নিয়ে বসব। একটু কষ্ট করে একটা নামের তালিকা তৈরি করুন। যাঁরা ধর্মীয় উপাসনা, ধ্যান, প্রার্থনা, যাগ-যজ্ঞ ইত্যাদির মাধমে ঈশ্বরের দেখা পেয়েছেন বলে দাবি করেন; তাঁদের নামের তালিকা। এবার খুঁজে দেখার চেষ্টা করুন তো, মানব প্রজাতির জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে কোনও অবদান এঁরা রেখে যেতে পেরেছেন কি না?

 গুহা থেকে প্রাসাদ, চাকা থেকে মহাকাশযান, আগুন থেকে লেজার রশ্মি, হাতপাখা থেকে এয়ার-কণ্ডিশনার, প্রদীপ ও মশাল থেকে পাওয়ার হাউজ, ফোঁড়া কাটার নরুণ থেকে মাইক্রোসার্জারির যন্ত্রপাতি এই যে মানব প্রজাতির সংস্কৃতির অগ্রগমন, এর কোথাও কি 'ঈশ্বরদ্রষ্টা’ অবতারদের সামান্যতম অবদান আছে?

 নেই। এই 'নেই' উত্তরটাই বার বার ফিরে আসতে বাধ্য। কারণ এই অগ্রগমন স্পষ্টতই বৌদ্ধিক জ্ঞানের সাহাযোই সম্ভব হয়েছে।

৬৩