পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তথাকথিত অলৌকিক ক্ষমতাধরেরাও বিশ্বাসবোধকে কাজে লাগিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগ নিরাময় ঘটিয়ে অলৌকিক ‘ইমেজ' বজায় রাখেন অথবা বর্ধিত করেন।

O

বিশ্বাসবোধকে যে শুধুমাত্র চিকিৎসকেরাই কাজে লাগান, তা নয়। অনেক তথাকথিত অলৌকিক ক্ষমতাধরেরাও বিশ্বাসবোধকে কাজে লাগিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগ নিরাময় ঘটিয়ে অলৌকিক ‘ইমেজ' বজায় রাখেন অথবা বর্ধিত করেন।

O


কারণ: চৌত্রিশ

ঈশ্বর বিশ্বাস পৃথিবীর সব ধর্মেই আবহমান কাল থেকে চলে আসছে। কোনও ধর্মই এই বিশ্বাসকে কুসংস্কার বলে মনে করে পরিত্যাগ করেনি। সব ধর্মই কি তবে শুরু থেকে ভূলই করে চলেছে?


বিষয়টিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আমরা আলোচনা করতে পারি।

 এক: বিভিন্ন ঈশ্বর-বিশ্বাসী ধর্মের সৃষ্টি ও আবির্ভাবের ইতিহাসের দিকে নজর দিলে আমরা দেখতে পাব, ধর্মগুরুরা যখন ধর্মকে সমষ্টিগত রূপ দিলেন, সংঘের রূপ দিলেন, প্রতিষ্ঠানের রূপ দিলেন, তখন ধর্মগুলো হয়ে উঠল প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম। প্রায় সব প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের প্রাথমিক ও আবশ্যিক শর্ত হল—‘আত্মা' বা 'পরমাত্মা’য় বিশ্বাস। এই আত্মা-পরমাত্মায় বিশ্বাস নির্ভর মতবাদই 'অধ্যাত্মবাদ'। অধ্যাত্মবাদের উপর বিভিন্ন নিয়ম-কানুন, আচার-আচরণ চাপিয়েছে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম। 'পরমাত্মা' ও নানা ধর্মে পরিচিত হয়েছে নানা নামে। ভগবান—ঈশ্বর—আল্লা-ব্রহ্ম আরও কত কী!

 শুরু হল এক নতুন যুগ। ব্যক্তিগত ধর্ম বিশ্বাসের স্তর অতিক্রম করে সমষ্টিগত ধর্মের যুগ। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের যুগ। এক সময় প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম পরিণত হল মানুষের উপর প্রভুত্ব করার হাতিয়ারে! শাসক ও শোষকদের সক্রিয় সহযোগিতায় বা স্পনসরশিপে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম কি ভাবে শাসক ও শোষক গোষ্ঠীর স্বার্থের সঙ্গে নিজেদের স্বার্থকে জড়িয়ে ফেলেছিল—সে এক দীর্ঘ পরিক্রমার ইতিহাস। আমরা এখানে সে ইতিহাস নিয়ে আলোচনায় যাব না। আমরা বরং ফিরে তাকাব—ঈশ্বর নির্ভর প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম সৃষ্টির আগের মানুষদের সমাজ-সাংস্কৃতিক পরিবেশের দিকে।

 সে সময় মানুষ নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জনা প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চালিয়ে গেছে প্রকৃতির সঙ্গে, পরিবেশের সঙ্গে। এ ছিল প্রতিমুহূর্তে বেঁচে থাকার লড়াই। শিকার

৯২