পাতা:ইন্দিরা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩).pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইন্দিরা।

তেছে। সে স্থান আমার নিকট হইতে প্রায় দেড় বিঘা। দেখিলাম যে, সম্মুখে অতি নিবিড় মেঘের ন্যায়, বিশাল দীর্ঘিকা বিস্তৃত রহিয়াছে, চারিপার্শ্বে পর্ব্বতশ্রেণীবৎ উচ্চ অথচ সুকোমল শ্যামল তৃণাবরণ-শোভিত “পাহাড়;”— পাহাড় এবং জলের মধ্যে বিস্তৃত ভূমিতে দীর্ঘ বৃক্ষশ্রেণী; পাহাড়ে অনেক গোবৎস চরিতেছে—জলের উপরে জলচর পক্ষিগণ ক্রীড়া করিতেছে—মৃদু পবনের মৃদু ২ তরঙ্গ হিল্লোলে স্ফটিক ভঙ্গ হইতেছে—ক্ষুদ্রোর্ম্মিপ্রতিঘাতে কদাচিৎ জলজ পুষ্পপত্র এবং শৈবাল দুলিতেছে। দেখিতে পাইলাম যে আমার দ্বারবানেরা জলে নামিয়া স্নান করিতেছে—তাহাদের অঙ্গচালনে তাড়িত হইয়া শ্যামসলিলে শ্বেত মুক্তাহার বিক্ষিপ্ত হইতেছে। দেখিলাম যে বাহকেরা ভিন্ন আমার সঙ্গের লোক সকলেই এক কালে স্নানে নামিরাছে। সঙ্গে দুইজন স্ত্রীলোক—একজন শ্বশুর বাড়ীর, একজন বাপের বাড়ীর, উভয়েই জলে। আমার মনে একটু ভয় হইল—কেহ নিকটে নাই—স্থান মন্দ, ভাল করে নাই। কি করি,আমি কুলবধু মুখ ফুটিয়া কাহাকে ডাকিতে পারিলাম না।

 এমত সময়ে পাল্কীর অপর পার্শ্বে কি একটা শব্দ হইল। যেন উপরিস্থ বটবৃক্ষের শাখা হইতে কিছু গুরু পদার্থ