পাতা:ইন্দিরা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩).pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইন্দিরা।

পড়িল। আমি সে দিগের কপাট অল্প খুলিয়া দেখিলাম। দেখিলাম, যে একজন কৃষ্ণবর্ণ বিকটাকার মনুষ্য।

 দেখিতে২ আর এক জন মানুষ গাছের উপর হইতে লাফাইয়া পড়িল! দেখিতে দেখিতে আর একজন, আবার একজন! এইরূপে চারিজন প্রায় এক কালীনই গাছ হইতে লাফাইয়া পড়িয়াই-পাল্কী স্কন্ধে করিয়া। উঠাইল। উঠাইয়া ঊর্দ্ধশ্বাসে ছুটিল।

 দেখিতে পাইয়া আমার দ্বারবানেরা “কোন্ হায় রে! কোন হায়রে রব তুলিয়া জল হইতে দৌড়াইল।

 তখন বুঝিলাম যে, আমি দস্যু হস্তে পড়িয়াছি। তখন আর লজ্জায় কি করে! পাল্কীর উভয় দ্বার মুক্ত করিলাম। দেখিলাম যে, আমার সঙ্গের সকল লোকে অত্যন্ত কোলাহল করিয়া পশ্চাদ্ধাবিত হইয়াছে। প্রথমে ভরসা হইল। কিন্তু শীগ্রই সে ভরসা দূর হইল। তখন নিকটস্থ অন্যান্য বৃক্ষ হইতে লাফাইয়া পড়িয়া বহু সংখ্যক দস্যু দেখা দিতে লাগিল। আমি বলিয়াছি, জলের ধারে বটবৃক্ষের শ্রেণী। সেই সকল বৃক্ষের দিয়া দস্যুরা পাল্কী লইয়া যাইতেছিল। সেই সকল বৃক্ষ হইতে মনুষ্য লাফাইয়া পড়িতে লাগিল। তাহাদের কাহারও হাতে বাঁশের লাঠি, কাহারও হতে বটের ডাল।