পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় প্রস্তাব । * > (t কল্পনায় উৎসাহ দেয় । ফলতঃ ঈশ্বর এবং জীব এবং তদুভয়ের মধ্যে যে সাধ্যসাধকভাব, ইত্যাদির সত্যতা ও নিত্যতা সম্বন্ধে, বিশ্বাসে যে প্রকৃতির অনুকুলত, তাহাই সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট প্রমাণ বলিয়া জানিও । অথবা অন্য কথা কি, মনুষ্যমনের এই বিশ্বাস সৰ্ব্বতোভাবেই পূর্ণ প্রাকৃতিক সংস্কারমাত্র । বলিয়াছি, এই বিশ্ব কৰ্ম্মস্বরূপ। বিশ্বই যদি কৰ্ম্মস্বরূপ হইল, কৰ্ম্ম শব্দের অনধীন তবে আর থাকিতে পারে কে ? কিন্তু কৰ্ম্ম কি— কৰ্ম্ম কাহার—কৰ্ত্তা কে ? শক্তির পরিণতি কৰ্ম্ম ; পদার্থমাত্রে কৰ্ম্ম এবং প্রচ্ছন্ন ভাবে হউক কি প্রকাশুভাবে হউক, যেখানে কৰ্ম্মত্ব সেইখানে কর্তৃত্বেরও বিদ্যমানতা ; যেহেতু সংসার এক অদ্বৈত এবং অখণ্ডিত এবং “এতদাত্মমিদং সৰ্ব্বং তৎসত্যং” । কৰ্ম্মত্ব এবং কর্তৃত্বের যুগপৎ একত্র সমাবেশ হইল যেন ; কিন্তু থওদর্শনে কৰ্ম্মভাবকে পৃথক্ করিয়া, পর পর কেবল কর্তৃত্বের অনুসরণ করিতে গেলে কোথায় গিয়া তাহার অবধি হয় ? বীজবৃক্ষবৎ শেষে অবধির অভাবে অনবস্থ দোষ আসিয়া উপস্থিত হয় । কিন্তু এখন এ ভ্রান্তি ও নিৰ্ব্ব দ্ধিতার সীম কোথায় ? জ্ঞান এবং শক্তি অখণ্ডনীয় অনন্তরূপ, এক-এবং-সৰ্ব্ব ; কেবল ভেদজ্ঞানের বশবৰ্ত্তিতায় আধার-আধেয়ভেদে কারক-কৃত অভিধানে খগুরুপ ; এবং দেশকালে আবদ্ধ হইয়া তদ্রুপ সম্বন্ধস্থত্রে জড়িত হয় । কিন্তু দেশকাল ও আধার মাধেয়াতীতে সমষ্টিরূপ, পদাতীতনামশুন্ত নিরঞ্জন । তখন এক কর্তৃত্বে ও এক কৰ্ম্মত্বে সমস্ত আসিয়া সমাহিত হয় । জ্ঞান এবং শক্তি পৃথক নহে ; যে জ্ঞান সেই শক্তি, যে শক্তি সেই জ্ঞান ; উভয় সমাবেশে অস্তিত্ব। অস্তিত্ব হেতু নাস্তিত্বের অভাবে, অস্তিত্ব অনস্ত এবং নিত্য ; কৰ্ম্মত্ব এবং কর্তৃত্বের উহা উপরম স্থান, তদুভয়ের উহা সাম্যাবস্থা ।