পাতা:গ্রীক ও হিন্দু - প্রফুল্লচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রীক ও হিন্দু। ہb چ মাননীয় কাৰ্য্যসমূহেও ইহা নিত্য প্রত্যক্ষবৎ দেখিতেছি। ফলত, বৃত্ত্যাদি সমস্ত, বহিজগতের সহিত সম্বন্ধবিচ্ছিন্ন হইলে, এবস্তৃত অকাৰ্যকর হইয় উঠে যে, মানবপ্রকৃতি, অস্তিত্ব সত্ত্বেও, অস্তিত্ববিহীনতা অপেক্ষা অধমভাব প্রাপ্ত হইয়া, অতিশয় অবাঞ্ছনীয় এবং হেয়তম হইয়া যায়। কিন্তু সৰ্ব্বদর্শী নিয়ন্তার তাহ অভিপ্রেত নহে ; সে অভিপ্রায়ে প্রতি পদার্থের সার্থকতাই নিত্য নিয়ম। অতএব মানবপ্রকৃতি, বাহ্য জগতের সংযোগ ভিন্ন, যে কোন কাৰ্য্যসাধনে সম্পূর্ণ অসমর্থ। আমরা যাহা করি, যাহা বলি, বা আমরা যাহা ভাবি, সে সকলেরই ভাবাভাস অগ্রে আমরা বাহাজগৎ হইতে সংগ্ৰহ করিয়াছি ; নতুবা সেরূপ করিতে, সেরূপ বলিতে, সেরূপ ভাবিতে, বা কিছুই নিম্পন্ন করিতে পারিতাম না । মানবচিত্তের সহ বাহ্যজগতের সংযোগ, প্রথমটি দ্বিতীয়টির ভাসে প্রতিভাসিত হওয়া মাত্র ; যদ্রুপ ফাটকপাত্র, কোন বর্ণবিশিষ্ট পুষ্প বা বস্তু বিশেষের নিকটস্থিত হইলে, সেই পুষ্প বা বস্তুর বর্ণে প্রতিভাসিত হইয়া সেই বর্ণব প্রাপ্ত হয়। এই প্রতিভাস চিত্তমধ্যে ভাবরাশিরূপে পরিণত হইয়া বৃত্তি সকলের স্ফুরণ ও চিত্তের প্রবাহময়ী কাৰ্য্যভিত্তি নিৰ্ম্মাণ করিয়া থাকে। ফলতঃ আমাদিগের চিত্তের যে কিছু চিন্তা, কল্পনা ও ধারণাদি ক্রিয়া, তাহ বহির্জগৎ হইতে প্রাপ্ত যে সকল ভাবাভাসসমষ্টি তাঁহারই, আবশ্বকোচিত নূতন সাজে ও নব সংযোজনে, অন্তর্জগৎ যোগে প্রতিপ্রসবমাত্র। সে যাহা হউক, বাহাজগৎ কি সরল অথচ কৌশলময় স্বল্পতর, কুটতর অদৃশ্ব পন্থা দিয়া মানবচিত্ত সম্বন্ধে তাহার এই সুমহং কাৰ্য্য সকল সম্পাদন করিয়া থাকে আমরা তাহার কিছুই অনুভব করিতে পারি না এবং মনেও কখন এমন খটুক হয় না যে, তলে তলে এতটা কাগু হইয়া যাইতেছে !