পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO80 জীবনী-সংগ্ৰহ । এইরূপ সাধন, ভজন ও সংসারধৰ্ম্ম অনুশীলন করিতে করিতে প্যারীলাল প্ৰায় বার বৎসর কাল অতিবাহিত করিলেন। এই সময়ে তাহার পত্নী সাংঘাতিক পীড়ায় আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুমুখে পতিত হন। পত্নীর মৃত্যুতে তিনি কিছু ব্যাকুল হইয়াছিলেন বটে, কিন্তু ঐ ব্যাকুলতার মধ্যে র্তাহার ঘোরতর বৈরাগ্য জাগিয়া উঠিয়াছিল। তিনি বিষয়কৰ্ম্ম হইতে অবসরগ্রহণ করিয়া নির্জনে বসিয়া সাধনা করিবার মনস্থ করিলেন। প্যারীলালের কোন বন্ধু, প্যারীলালের পত্নী-বিয়োগ হইয়াছে শুনিয়া; দ্বিতীয়বার দারপরিগ্ৰহ করিবার জন্য র্তাহাকে অনুরোধ করিতে অসিয়াছিলেন। তিনি বন্ধুর অনুরোধ-বাক্য শ্রবণ করিয়া বলিয়াছিলেন, “ভাই ! মানুষ সৰ্ব্বদা সংসার-লীলায় উন্মত্ত। সংসারের উন্নতি এবং স্ব স্ব পার্থিব উন্নতি, এই লইয়াই সৰ্ব্বদা ব্যতিব্যস্ত। কিসে রাশি রাশি অর্থসঞ্চয় হইবে, কিসে সংসারের শ্ৰীবৃদ্ধি হইবে, কি উপায়ে মানুষের নিকট প্রশংসনীয় হইবে এই সকল নশ্বর ভাবনায় ক্ষুদ্র মানব জীবন অতিবাহিত করে। ধৰ্ম্মের জন্য তাহদের প্রাণে একটুও পিপাসা হয় না। ভাই। কেবল সংসারখেলায় মজিও না। দেখিতেছি না, রিপুগণের প্রবল আক্রমণে জর্জরিত হইয়া অনন্ত দুৰ্গতি হইতেছে ? কখন কামের বশবৰ্ত্তী হইয়া অশেষ অনিষ্ট সাধিত হইতেছে ; কখন ক্রোধের দাস হইয়া কাটাকাটি মারামারি প্রভৃতি কতই নিষ্ঠুর আচরণ সম্পাদিত হইতেছে। যখন দেখিতেছি, একটী রিপুর পরিণাম অনন্ত দুৰ্গতি, তখন কেন আর সংসারে মজিয়া রিপুর ক্রীতদাস হইয়া, বৃথা আমোদে অমূল্য সময় অতিবাহিত কর ? তুমি জান! এই মুহুর্তেই মৃত্যু আসিয়া ধরিতে পারে ? কোন প্রকার অপত্তি উত্থাপন করিয়া পায়ে মাথা খুঁড়িলেও সে একটুকু অপেক্ষা করিবে না। তাই বলিতেছি, সর্বদাই ধৰ্ম্মের দিকে লক্ষ্য রাখি, ধৰ্ম্মের দিকে চাহিয়া প্ৰত্যেক কাৰ্য্যে অগ্রসর হও। মিথ্যা কাৰ্য্যে ঘুরিয়া, আসার বিষয়ে মাতিয়া, কেন বৃথা