পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শঙ্করাচাৰ্য্য। ○○ এক দিবস শঙ্করাচাৰ্য্য কাশীতে মণিকর্ণিকার ঘাটে স্নান করিয়া নিদিধ্যাসন করিতেছেন, এরূপ সময়ে একটী বৃদ্ধ ব্ৰহ্মাণ তথায় উপস্থিত হইয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি না ব্ৰহ্মসূত্রের ব্যাখ্যা করিয়াছ ? বল দেখি, কোথায় অর্থ করিতে তোমায় বড়ই কষ্ট পাইতে হইয়াছে ?” শঙ্কর বলেন, “যদি আপনি কোথাও বুঝিতে না পারিয়া থাকেন, বলুন, আমি তাহার অর্থ করিয়া দিতেছি।” শঙ্করের কথা শুনিয়া বৃদ্ধ “তদনন্তর প্রতিপত্তেী রংহতি সম্পরিষ্যত্তঃ প্রশ্ন নিরূপণাভ্যাং,” এই সূত্রের অর্থ জিজ্ঞাসা করেন। দুই জনে দুই প্ৰকার অর্থ করেন। ক্ৰমে দুই সূত্রের ব্যাখা লইয়া উভয়ের বাকৃবিতণ্ডা আরম্ভ হয়। শঙ্করাচাৰ্য্য বৃদ্ধের গণ্ডদেশে এক চপেটাঘাত করিয়া, পদ্মপাদ নামক তঁহার শিষ্যকে বলেন, “এই বুড়াটাকে দূর করিয়া দাও।” গুরুর আদেশ শ্রবণ করিয়া পদ্মপাদ আচাৰ্য্যকে নমস্কার করিয়া বলেন,- “শঙ্করাঃ শঙ্করাঃ সাক্ষাৎ ব্যাসোনারায়ণঃ স্বয়ং। তয়োৰ্ব্বিবাদে সম্প্রাপ্তে ন জানে কিঙ্করোম্যহম্।।” भिसावत्र मननन स्राक्षाौन রহিয়াছেন ; শঙ্করাচাৰ্য্য পারান্তর হইতে সনন্দনকে আহবান করিলেন । সনন্দন গুরুর আদেশ শ্রবণমাত্ৰ গমনোদ্যত হইয়া মনে মনে বিবেচনা করিলেন, যিনি অপার ও সুন্দুস্তর সংসার-পারাবার হইতে ভক্তজনগণকে পরিত্রাণ করিতেছেন, সামান্য স্রোতস্বতীতে কি তিনি তারণা করিবেন না ?--অবশ্যই করিবেন। সনন্দন মনে মনে দৃঢ় ভক্তিসহকারে এইরূপ নিশ্চয় ও নির্ভর করিয়া জাহ্নবী-সলিলে যেমন পদনিক্ষেপ করিতে লাগিলেন, পদ স্থাপনার্থ আমনি জলের উপর এক একটী পদ্ম সমুদ্ভূত হইতে লাগিল। সেই পদ্মে পাদবিন্যাসপূর্বক সনন্দন ক্ৰমে ক্ৰমে শ্ৰীগুরুর চরণাস্তিকে সমুপস্থিত হইলেন। শিষ্যের এরূপ অদ্ভূত শক্তি সন্দর্শন করিয়া এবং প্রতি পাদবিন্যাসে পদ্মের উদ্ভব হইতে দেখিয়া শঙ্কর সনন্দনকে ‘পদ্মপাদ’ আখ্যা প্ৰদান করিলেন। সেই অবধি সনন্দন পদ্ম পাদ নামে বিখ্যাত হইয়াছেন।