পাতা:নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন (প্রথম ভাগ).pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૭ নয়া বাঙ্গলার গোড়া পত্তন কোন কোন জিনিষ কিনিত ? এক শহর থেকে আর এক শহরে কিংবা এক পাড়া থেকে আর এক পাড়ায় তারা বছরে কতবার যাওয়া-আসা করিত ? আর যাইতে হইলে তখন গরুর গাড়ীতে না নৌকায় যাওয়া হইত ? তার সঙ্গে তুলনায় সেই পরিবার আজকাল কি খায়, কি পরে ? এক শহর থেকে আর এক শহরে, এক পীড়া থেকে আর এক পাড়ায় কতবার যাওয়া আসা করে ? লোকেরা আডডা মারিতে দেশ দেশাস্তরে যায় না, কাজ নিয়েই যায় । বাংলাদেশের অনেক পল্লী শহরেই ফী বৎসর নতুন নতুন নিরেট বাড়ীঘর দু-চার থানা করিয়া মাথা তুলিতেছে। কাপড়চোপড়ের আকার-প্রকার সমাজসুদ্ধ বাড়িয়া চলিয়াছে। এ সব জিনিস জীবন-যাত্রার হিসাবে তুচ্ছ করা চলে না। ইংলণ্ড প্রভৃতি দেশের মত এদেশ সম্বন্ধেও হিসাব করিয়! যদি দেখি, আগে আমরা যতখানি চিঠি লেখালেখি করিতাম, যত লোক রেলে নৌকায় গরুর গাড়ীতে চড়িতাম, থিয়েটারে যাইতাম, এখন তার চেয়ে বেশী লোক চিঠি লেখে, ট্রামে চড়ে, রেলে চলে, থিয়েটারে যায়, তাহলে কি বলিব আমাদের আর্থিক অবস্থা অবনত হইয়াছে ? আগে যেখানে মাত্ৰ পাচ জন লোক জামা পরিত, এখন সেখানে যদি পচিশ জন লোক জামা পরিতেছে, তাহলে কি বলিব আমাদের অবস্থা অবনত হইয়াছে ? আগে যেখানে ছ’ জন চপ কাটুলেটু খাইত— এখন সেখানে দু’শ লোক যদি চপ কাটুলেটু খায়—অর্থব্যয়ের অপব্যয়ের কথা বলিতেছি না, বস্তুনিষ্ঠার দিক থেকে, টাকা খরচ করিবার ক্ষমতার দিক থেকে বলিতেছি—তাহলে কি বলিব আর্থিক হিসাবে দেশ অবনত হইয়াছে ? আগে তিনজন লোকের পয়সা ছিল, অতএব তারা ব্যয় করিত, এখন তিনশ লোকের পয়সা আছে তাই তারা খাইতে পারিতেছে, বাবুগিরিও করিতেছে। এটা কি দারিদ্র্যের লক্ষণ, ক্রমিক অধোগতির সাক্ষী ?