পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী
১৪৯

আলোর তার কাটিয়া দেওয়া হয়। বহু পোষ্টাফিস ও থানা পুড়াইয়া দেওয়া হয়, আক্রান্ত বা লুষ্ঠিত হয়, রাস্তাসমুহের ক্ষতিসাধন করিয়া অচল করা হয়। বড় বড় সহরে ট্রামগাড়ী মটর ট্রাকে পোড়াইয়া দেওয়া হয়। নেতৃবর্গের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দোকানপাট স্কুল কলেজ কলকারখানা বন্ধ হয়। ছাত্র ছাত্রী স্কুল কলেজ ছাড়িয়া দিনের পর দিন এই আন্দোলনে যোগ দেয়। চাষী, মজুর, কাজ ছাড়িয়া দলে দলে “ইংরাজ ভারত ছাড়” “কর না হয় মর” এই ধ্বনি করিয়া আকাশ বাতাস মুখরিত করে। বড় বড় কলকারখানায় ধর্ম্মঘট হইয়াছিল। আইনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করিয়া ছোট বড় শোভাযাত্রা বাহির করা হইয়াছিল। কয়েক জায়গার কোর্টে, পোষ্টাফিসে ও রেল ষ্টেশনে হানা দিয়া কাগজ পত্র পোড়াইয়া দেওয়া হয়। কয়েক স্থানে রেলপথের ক্ষতি করিয়া ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়। অনেক জায়গায় ইউনিয়ন বোর্ড অফিস, আফগারি দোকান, হাইস্কুল, আয়কর অফিস, রেলওয়ে ষ্টেশন আগুন দিয়া পোড়াইয়া দেওয়া হয়। কয়েকখানি ট্রেণও আগুণে পোড়াইয়া দেওয়া হয়। কয়েকজন পুলিশ অফিসার, কনেষ্টবল ও হাকিম নিহত হয়। এই সকল কার্য্যের প্রতিরোধের জন্য সরকার বাহাদুর অমানুষিক অত্যাচার করিয়াছিলেন। পুলিশ অনেক সভা ও শোভাযাত্রায় লাঠি চালাইয়া ছত্রভঙ্গ করে। অনেক স্থলে পুলিশ ও মিলিটারী গুলি চালায়, ইহাতে বহুলোক নিহত ও আহত হয়। পুলিশ অনেক স্থলে দলপতিদের ঘরে আগুন দিয়া পোড়াইয়া দেয়। সরকারের হিসাবে দেখা যায়—৯৪০ জন নিহত, ১৬০০০ হাজার আহত হয়, পুলিশ ৪৭০ জায়গায় গুলি চালায়, ৬০২২৯ জন লোক গ্রেপ্তার হয়, বহু গ্রাম আগুন লাগাইয়া পোড়াইয়া দেওয়া এবং লোকের বনভূমি লাঙ্গল দিয়া চাষ হয়।