পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ জৈনধর্মের প্রাণশক্তি «نه বংশে আবুল আলার জন্ম । তাহার পিতামহ স্থলেমান অল মঅআরী দীর্ঘকাল কাজী পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন । চারি বৎসর বয়সে আবুলের ষে দারুণ বসন্ত রোগ হয় তাহাতে তিনি দৃষ্টিহীন হইয় যান। তথাপি তাহার জ্ঞানতৃষ্ণ ছিল এমন অদম্য যে তিনি মোরক্কো হইতে বোগদাদ পর্য্যস্ত নানা স্থানে জ্ঞানাথ হইয়া ঘুরিয়া ধেড়ান। তাহার মত ছিল অতিশয় উদার ও একেবারে অসাম্প্রদায়িক । তিনি এতদূর স্বাধীনচেত ছিলেন যে, কি ধনী, কি প্রতিষ্ঠিত ধৰ্ম্মগুরু কাহারও কোনো অন্যাস্ককে তিনি রেহাই দিয়া কথা বলেন নাই । র্তাহার রচিত “সকৃত জল-জদ" সেই দেশে অতিশয় সম্মানিত কাব্যগ্রন্থ ছিল । উদার মত ও স্পষ্টবাদিতার জন্ত তাহার সময়ে তাহার বিরুদ্ধে বহু তীব্র আন্দোলন চলিয়াছে, কিন্তু তিনি তাহ গ্রাহাঁই করেন নাই। পরিশেষে বোগদাদে গিম্বা ভারতীয় এই সব জ্ঞানীর সঙ্গে তাহার সাক্ষাৎ ঘটে, তার পরই তাহার মতামত একেবারে আশ্চৰ্যরূপে পরিবর্তিত হইয়া যায়। আবুল আলার কাব্যের শক্তিশালী প্রভাব ওমর খয়্যামের মত মহাকবিও এড়াইতে পারেন নাই । এই দলের সঙ্গে পরিচয়ে ও আরও নানা স্থত্রে আবুল মালা ভারতীয় অধ্যাত্মজ্ঞানের প্রতি রীতিমত অনুরক্ত হইয়। উঠিলেন । যোগ সম্বন্ধে তিনি ভারতীয় সাধকদের মতই মৰ্ম্মেয় কথা বলিয়াছেন । তাহার ঈশ্বর তাহার চারিদিকের বা তাহার সমধৰ্ম্মাবলম্বী সকলের স্বীকৃত ঈশ্বরের মত নহেন ; তিনি অনেকটা ভারতীয় যোগীদের ঈশ্বরের মতই সৰ্ব্বব্যাপী নির্লিপ্ত। ধর্শ্বজগতের কুসংস্কার ছিল আবুল আলার অসহ । এই-সব স্কুসংস্কারের বলে যে একদল লোক অন্ত সকলের উপর প্রভুত্ব করিয়৷ বেড়ায় ইহা তিনি সহ করিতে পারিতেন না । স্বৰ্গাদিতে র্তাহার বিশ্বাস ও আস্থা আর রহিল না বরং জৈন বৌদ্ধাদির মত তিনি মনে করিতে লাগিলেন মুক্তিতেই আমাদের দুঃখময় সভার অবগান ও সত্তাই আমাদের সকল দুঃশ্নের আধার। তাই একমাত্র নির্বাণ মুক্তিই প্রার্থনী। তিনি বোগদাদ হইতে স্বদেশে ফিরিয়া ভারতীয় তপস্বীদের মত গুহাতে বাস করিয়া অতি কৃচ্ছ, তপশ্চরণ করিতে লাগিলেন । ইহার পর তাহার কাব্য জার , এক ভাবে ভরপূৱ হইয়া উঠিল । মদ্য মংগু, মাংস ডিম্ব, এমন কি ছদ্ধ প্রভৃতিও তিনি ভাগ করিলেন। তাহার বাক্যের তীব্রতা ক্রমে তপস্তার কৃচ্ছতায় পরিণত হইল। জীবন শাস্তি ও মৈত্রীতে ভরিয়া উঠিল। ক্ষুদ্র বৃহৎ সৰ্ব্বজীবের প্রতি তিনি ছিলেন অপরিসীম করুণাপরামণ। তাহার কবিতাতে দেখা যায়, “কেন বৃথা পগুহিংসায় জীবন কর কলঙ্কিত ? বেচারা কনচারী শিশুদের কেন নিষ্ঠুর হইয়া কর শিকার । চিরদিন তুমিও কিছু ব্যাধ রহিবে না, সেও কিছু বধ্য থাকিবে না। এক দিন তোমাকে এই পাপের ক্ষালন করিতেই হইবে।” সাম্প্রদামিক ভাবে লোকে তাহার বিরুদ্ধ হইলেণ্ড তাহার পাণ্ডিত্য ও তপশ্চৰ্য্যার খাতিরে নানা স্থান হইতে র্তাহার কাছে বহু উপহার আসিত । তিনি তাহা দীনদুঃখীকে বিলাইম দিয়া নিজে মুনিজনোচিত সরল জীবন যাপন করিতেন । - আবুল আলার এই অহিংসবাদেয় মুলে যে ভারতীয় ধর্মের প্রভূত প্রভাব আছে ইহা ত সকল দেশের বিদ্বজনেরাই জানেন । কিন্তু তাহার মতামতে জীবনযাত্রায় তপশ্চর্য্যায় কি বিশেষভাবে জৈনধর্শের কোনো প্রভাব দেখা যায় না ? র্তাহার কবিঙার রস র্যাহারা ইংরেজী ভাষায় আস্বাদ করিতে চান, তাহারা শ্ৰীযুত আমীর রিহানী কর্তৃক অনুবাদিত আবুল আলার “লুদ্ধ মিম্বাত” নামে কাব্যসংগ্রহ পড়িয়া দেখিতে

    • â i ( James T. white, & Co., New York ) 1,

আবুল আলার এই-লব মতবাদ তাহার সঙ্গে সঙ্গেই লুপ্ত হইয়া যায় নাই। পরবর্তী সুফী-মতবাদের মধ্যে তাহ স্থান, পাইয়াছে। তাই বিখ্যাত মরমী কবি জালাল অল দ্বীন রূমীর ( জন্ম ১২৭৭ খ্ৰীষ্টাব্দে ) কবিতার মধ্যেও জন্মাস্তরবদের চমৎকার উল্লেখ মেলে । রূমী বলিতেছেন, “ছিলাম পাষাণু, মরিয়া হইলাম বুক্ষলতা ; হইলাম মানব । এখন আমি বঁচিয়া উঠিব অমরলোকবাসী হইয়া ; ক্রমে সে অবস্থাও অতিক্রম করিয়া আমি জপুৰ্ব্ব অনুপম গতি করিব লাভ ; আমি হইব শূন্ত, শূন্তে হইব লক্ষ্মপ্রাপ্ত”-ইত্যাদি । এই-সৰ কথার মধ্যে কি নিৰ্ব্বাণের ভাব পাই না ? র্তাছায় আবার এমন সব বাণীe আছে যাহাতে ভারতের ~& ছিলাম উদ্ভিদ, মরিয়া হইলাম জন্তু ; ছিলাম জন্তু, মরিয়া ।