বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (চতুস্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գe পূর্ণ প্রেমপন্থী মরমীদের পরিচয় পাওয়া যায়। যথা—“স্বর্ধ্যের রশ্মির মধ্যে দীপ্ত রেণুরূপে আমিই ভাসমান, সুৰ্য্যের দীপ্ত গোলকরুপে আমিই দীপ্যমান, আমিই উষার প্রথম জ্যোতিলেখা, আমিই সন্ধ্যার শাস্তপ্রাণ সমীরণ”—ইত্যাদি । জৈনধর্শের অস্তরে যে গভীর প্রাণ আছে তাহার আর একটি মহালক্ষণের কথা এখন বলিব । অনেক সময় মনে হয় একটা বৃক্ষ পুরাতন হইয়া মরিয়া গিয়াছে। বুঝাই যায় না যে, তাহার মধ্যে কোথাও প্রাণ আছে। তাহার পর হঠাৎ একদিন ধখন নব বসন্তাগমে কি আকাশের বারিবর্ষণে দেখা যায় তাহাতে পল্লবমুকুল ধরিয়াছে, তখন আর আশা না হইয়া যায় না । ভারতে এইরূপ একটি নবযুগ আসিল গুরু রামানন্দের সঙ্গে সঙ্গে । তাছার পরই কবীর, রবিদাস, নানক প্রভৃতি নানা মহাপুরুষের সাধনায় উত্তর-ভারতবর্ষের ধর্শ্বের ঐশ্বৰ্য্য উঠিল ভরপুর হুইয়া। জৈনদের মধ্যেও এই সময়ে এক মহাপুরুষের জন্ম হয়, তাহার নাম লোক্ষা শাহ। মূৰ্ত্তিপূজক জৈনধর্মের মধ্যে জন্সিয়াও ইনি কবীর নানক প্রভৃতির মত মূৰ্ত্তিপূজার বিরুদ্ধে ঘোর যুদ্ধ করিয়াছেন। জৈন বৈশুফুলে তাহার জন্ম । আমেদাবাদেই তিনি বাস করিতেন, কিন্তু কেহ কেহ বলেন র্তাহার পূর্বনবাস ছিল কাঠিয়াওয়াড়ে । জযর্ণণ পণ্ডিত স্বত্রীণের একটি হস্তলিখিত লেখায় দেখিয়াছি যে, প্তাহার মতে লোক্ষার সময় ১৪৫২ খৃষ্টাব্দ। লোস্কার গন্ধে আর কোনো খবর স্থত্রীণের সেই লেখায় পাইলাম না, প্তাহার নিরূপিত সময়ের উপরও নির্ভর করিতে পারিলাম না। ১৮৪২ খৃষ্টান্ধ কি স্বত্রীণের মতে লোক্ষার জন্মসুময় ? তাহ কেন যে সম্ভব নহে তাহা পরে দেখান যাইতেছে। কবীর প্রভৃতির মত লোম্বা শাহ পুরাতন শাস্ত্র প্রভৃতি সব একেবারে ছাড়িয়া দিয়া কেবল স্বাধীন আত্মাকুম্ভবের উপর ধৰ্ম্মকে প্রতিষ্ঠিত করেন নাই। তিনি প্রচলিত মূৰ্ত্তিপূজা শাস্ত্রবিরুদ্ধ ব্যর্থ আচার-অনুষ্ঠান, কুসংস্কার প্রভৃতি দূর করিতে প্রধানতঃ প্রাচীন বিশুদ্ধ শাস্ত্রন্থে আশ্রশ্ন করিলেন। তাহার সঙ্গে এই নিবন্ধে অনেকটা মনিপুখজুৰ তুলনা দেওয়া চলে। লোক্ষা শায় ই "বর্তীদের বলে স্থানৰবাসী। লোস্কার স্বত্যুর প্রায় তিন শতাব্দী পরে ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দে কাঠিাওয়াড়ের


SSBS

স্থানকবাসীদের মধ্যে পাঁচটি “সংঘাড়া” বা সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয় । স্থানানুসারে এই পাচ সম্প্রদায়ের নাম (১) গোগুলি, (২) লিমড়া, (৩) বড়ৱালা, (৪) চুড়া ও (৫) গ্ৰাংগঞ্জা । এই গোগুলি শাখার সাধুদের প্রদত্ত বিবরণ অনুসারে লোস্কার কিছু পরিচয় দেওয় যাইতেছে। মুসলমানদের রাজত্ব যখন গুজরাটে স্বপ্রতিষ্ঠিত তখন একদিন লোস্ক শাহ দেখিলেন একটি মুসলমান “চিড়া” নামক যন্থদ্বারা পক্ষীশিকার করিতেছে। এই নিষ্ঠুর ব্যাপার দেখিয়া লোক্ষা মনের দুঃখে মুসলমান রাজার রাজ্যে চাকরি ছাড়িয়া দিলেন এবং সাধারণ শ্রাবক রূপে পুথিলেখার দ্বারা জীবিকানিৰ্বাহ করিতে লাগিলেন ও আমেদাবাদেই রছিলেন। একদিন এক "লিঙ্গধারী” শ্বেতাম্বর জৈন ভদ্রলোক একখানি “দশ বৈকালিক সুত্র” গ্রন্থ লোস্কাকে নকল করিতে দেন । লোঙ্ক গ্রন্থখানি পড়িয়া মুগ্ধ হন ও নকল করিতে গৃহে লইয়া আসেন। তাহার একটি বিধবা কন্যা ছিলেন । র্তাহাকে লইয়া তিনি গ্রন্থখানির দুইটি প্রতিলিপি করিয়া একখানি নিজের কাছে রাখিয়া দিলেন ও আর একখানি সেই ভদ্রলোককে দিলেন । এরূপ ভাবে আরও কিছু গ্রন্থ তিনি সংগ্ৰহ করিয়া খুব ভাল করিয়া তাহ অধ্যয়ন করিতে ও লোকমধ্যে বিশুদ্ধ জৈন-মত প্রচার করিতে লাগিলেন। তাহার মধুর ও সহজ শ্রদ্ধায় উচ্ছ্বলিত উপদেশে লোকের চিত্ত বিশেষভাবে আকৃষ্ট झहेंठ् । তিনি সাধু নহেন, তাই সাধুরা তাহার এই আচরণ পছন্দ করিলেন না। এমন সময় একদল জৈন তীর্থযাত্রী তীর্থযাত্রপ্রসঙ্গে আমেদাবাদে আসিয়া উপস্থিত হন। এই দলের মধ্যে বোধ হয় প্রধান যাত্রী ছিলেন শম্ভুজ নামে এক ভদ্রলোক । তাহার পৌত্রী মোহ বাঈ অতি অল্পবয়সে বিধবা হওয়ায় সেই বালিকা ও তাহার মাতাকে লইয়া তিনি তীর্থযাত্রায় বাহির হন। সেই দলে নাগজী, মোক্তিচংদ, গুলাবচংদ প্রভৃতি ভঞ্জলোকও ছিলেন। আমেদাবাদে লোক্ষা শার নাম শুনিয় তাহারা তাহার উপদেশ শুনিতে যান। সেই যাত্রীদলের নেতা সাধুরা এই-সব কথা শুনিয়া গেলেন চটিয়া, কারণ লোঙ্ক একজন সামান্য বৈঞ্চ গৃহস্থ সাম্র, তিনি সন্ন্যাসীও নহেন। কিন্তু লোস্কার উপদেশ সকলের এত ভাল লাগিল যে, উহাৱা সেই সাধুদের