পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ইহাঙ্গ দক্ষের ২৮শ কস্তার একজনের মৃত্যু। হিন্দু জ্যোতিষের এই সংস্কারযজ্ঞে ইহাই সতীর দেহত্যাগ। এই অভিজিৎ বর্জন হিন্দু জ্যোতিষের ইতিহাসে একটি অতি বিশিষ্ট ঘটনা। নব্য সংস্কারকদলের এই প্রস্তাব যে সহজেই গৃহীত হষ্টল তাহা নহে। সৰ্ব্বদেশে সৰ্ব্বকালে প্রাচীনতার পক্ষপাতী একদল আছেন র্যাকার যতক্ষণ পারেন নুতনকে ঘরে ঢুকিতে দেন না। স্বতরাং অভিজিৎ বর্জন সাব্যস্ত হইল বটে কিন্তু রাশিচক্র গ্রহণ সৰ্ব্ববাদীসম্মত হইল না। রাশিচক্রও পরিত্যক্ত হইল। ইহাই দক্ষের প্রাণনাশ । ৩৬০ অংশে বিভক্ত দ্বাদশ রাশির ও ২৭ নক্ষত্রের বাসস্থান উৰ্দ্ধ-আধো-বিস্তৃত এই আকাশই যে দক্ষ তাঙ্গ হিন্দু জ্যোতিষাভিজ্ঞ মাত্রই অবগত আছেন । যাহা হউক প্রাচীনগণ রাশিচক্র পরিত্যাগ করিলেন বলিয়াই যে নব্যসংস্কারকদল আশা ছাড়িয়া নহে । জ্যোতিষক্ষেত্রে রাশিচক্রের উপকারিত বিষয়ে তাঙ্গর যুক্তির অবতারণা করিতে লাগিলেন। কিছু দিন আলোচনা চলিল। এই আলোচনাচ দক্ষের প্রস্থতি—র্তাহার পুনৰ্জ্জীবনদাত্রী। আলোচনার ফল যাহা সকল সংস্কার সম্বন্ধেই হষ্টয়া থাকে তাঙ্গষ্ট হইল। নব্যদল আপনাদের মত প্রতিষ্ঠিত করিলেন, প্রাচীনগণ ক্রমে ক্রমে হার মানিলেন। ফল হইল, রাশিচক্রের গ্রহণ অর্থাৎ দক্ষের পুনৰ্জ্জীবন । কিন্তু এখনও দক্ষের মুণ্ড পরিবর্তনের কথা বলা হয় নাই। এইখানেই রাশিচক্র যে বাহির হইতে গৃহীত তাতার একটি F-ið sfRfFT HI*J (internal evidence) FÉNtA রহিয়াছে। হিন্দুগণ বহুপূৰ্ব্বেই নক্ষত্রচক্র আবিষ্কার করিয়াছিলেন। সে চক্রের প্রথম নক্ষত্র অশ্বিনী। র্যাহারা নক্ষত্রগণের জারুতি দেখিয়াছেন তাঙ্কার লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন উক্ত নক্ষত্ত্ব একটি অশ্বমুখ । এখন যদি রাশিচক্রেরও উদ্ভাবনকর্তা হিন্দুগণই হইতেন তবে প্রথম রাশির নাম মেষ হইবার কোনই সম্ভাবনা থাকিত না, অশ্বই হইত। কিন্তু রাশিচক্ৰ যাহারা আবিষ্কার করিয়াছেন, হিন্দুরা যেখানে অশ্ব দেখিয়াছিলেন, তাহারা সেখানে মেষ দেখিয়াছেন, এই মেষই রাশিচক্রের মাথা অর্থাৎ প্রথম। স্বতরাং এই চক্র যখন গ্রহণ করা হইল তখন বাধ্য হইয়াই দক্ষের মুণ্ড পরিবর্তিত হইল। দক্ষ এখন ছাগমুণ্ড দিলেন তাঙ্গণ পৌরাণিক আখ্যায়িকার উপাদান \ు)సి লাভ করিলেন। ইহাই দক্ষের মুও পরিবর্তনের ইতিহাস । রাশিচক্রকে যে নক্ষত্রচক্রের উপর চাপাইয়া গোজামিল দেওয়া হইয়াছে তাহারও চিহ্ন বর্তমান আছে। পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি অভিজিৎ বর্জনের কারণ এই যে ঐ নক্ষত্র রাশিচক্রবক্সের এত বাহিরে যে রাশিচক্র রাখিতে গেলে আর সেটা রাখা যায় না। নতুবা ২৮ নক্ষত্রের মধ্যে ঔজ্জ্বল্যে যে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ তাঙ্গকে পরিত্যাগ করিবার আর কোনষ্ট কারণ নাই । চক্রমধ্যে শেষ নক্ষত্র রেবতী অতি নগণ্য, তাহাকে পরিত্যাগ করাষ্ট স্বাভাবিক হষ্টত । এখনও শ্রবণা বা স্বাতী নক্ষত্রচক্রের অত্যন্ত বাহিরে পড়িয়া থাকে, তাহা সহজ চক্ষেরই বোধগম্য। আরও একটা গোজামিল আছে । রাশিগণের মধ্যে বৃশ্চিক রাশির নামেরষ্ট সৰ্ব্বাপেক্ষ বেশ সার্থকতা । অন্ত কোনও রাশির নামকরণে বোধ হয় স্বাধীন দুষ্ট ব্যক্তির এক মত হুইবার । সম্ভাবনা নাই। নক্ষত্ৰচক্রের তিনিটি প্রধান নক্ষত্র ইহার অন্তর্গত। অনুরাধা মস্তকে, জ্যেষ্ঠ বক্ষে, মূলা লাঙ্গুলে। কিন্তু নাক্ষত্রিক গণনায় অষ্টমরাশি বৃশ্চিক ১৮শ নক্ষত্র জ্যেষ্ঠাতেই শেষ হয়। গোজামিলের দরুণষ্ট এটি ঘটিয়াছে। এই ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে দুটি আপত্তির থওন প্রয়োজন । রাশির নাম মেষ কিন্তু দক্ষের মুণ্ড কেন ছাগ ? ইহার উত্তর এই, ছাগ মেষ এক পৰ্য্যায়ভুক্ত পশু বলিয়া একার্থবোধকরূপেই গৃহীত হইয়াছে। অশ্ব সেই শ্রেণীভুক্ত হইলে বোধ হয় রাশির নাম অশ্বই হইতে পারিত। র্তাহারা যে ছাগ মেষ একই অর্থে লইয়াছিলেন তাহার আরও প্রমাণ এই যে গ্ৰীক জ্যোতিযে দশম রাশি ছাগ (Capricornus) কিন্তু হিন্দুগণ তাহা বদলাইয়। মকর করিয়াছেন। ইহার কারণ এই যে মেষ যখন এক রাশির নাম আছে তখন একার্থবোধক আর একটা রাশি চক্ৰে থাকিলে গোলযোগ হইবে । অন্ত কারণে নাম সংস্কারের প্রশ্ন যদি উঠিত তবে সংস্কারের জন্ত ছাগল অপেক্ষ অনেক উচ্চতর জিনিষ ছিল । যাহা হউক, অস্ত আপত্তি এই ষে

  • সাধারণের মনস্তুষ্টির জন্তই এই আপত্তিটির উল্লেখ করা গেল, কেন না, সাধারণতঃ লোকের এই ধারণ যে দক্ষের ছাগমুণ্ড ও প্রথম রাশি মেৰ। কুতরাং এ দুটি স্বতন্ত্র জিনিষ। ৰান্তৰ পক্ষে এখানে