বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

あや b99శు চাকরের কোন আপত্তি ছিল না ! গৃহিণী সচরাচর একটা বাজিবার পর তাহাদের ছাড়েন, আজ দশটার মধ্যেই কাজ চুকিয় গেল দেখিয়া, সে খুশী বই দুঃখিত হইল না । - ঘামিনী খাওয়া সারিয়া মায়ের ঘরের কাছে গিয়া আয়াকে ডাকিল। আয়ার কাছে খবর পাইল জ্ঞানদা তখনও ঘুমাইয়া আছেন। র্তাহাকে জাগাইতে মান করিয়া এবং তাহার ভাত উপরে আনিয়া ঢাকা দিয়া রাপিতে বলিয়া যামিনী নিজের ঘরে চলিয়া গেল। সবুজ সতেজ পত্রগুচ্ছের ভিতর অৰ্দ্ধপ্রস্ফুটিত গোলাপের মত এই সুসজ্জিত ঘরখানিতে যামিনীকে যেন অধিকতর সুন্দর লাগিত। একথান বই হাতে করিয়া সে খাটের উপর একটু বিশ্রামের চেষ্টায় গিয়া বসিল । একটু শীত শীত করিতে লাগিল বলিয়া তাড়াতাড়ি একটা ধূসর রঙের শাল টানিয়া পা দুখান চাপ দিল । বই পড়িতে পড়িতে কখন ধে ঘুমের ক্রোড়ে ঢলিয়া পড়িল, তাহা নিজেই জানিতে পারিল ন৷ জাগিয়া দেখিল বেলা গড়াইয়া আসিয়াছে। একটু হাসিয়া বলিল, “ওম, খুব এক ঘুম দিলাম যা হোক, আজ আর রাত্রে আমাকে ঘুমতে হবে না। মা খেলেন কি ন৷ কে জানে ৷” কিন্তু মায়ের ঘরের দরজা বন্ধ, কাজেই সে ফিরিয়া আসিল। ল্যাশুিঙে কিস্মতিয়া বিপুল নাসিক গর্জন সহকারে ঘুমাইতেছে। মিহির আর আধঘণ্ট খানিক পরে আসিয়া জুটিবে, তখন আর বুড়ীকে ঘুমাইতে হইবে না। আয়ার পিছনে লাগা মিহিরের বড় প্রিয় কাজ । যামিনী ছোট্ট কে ডাকিয়া মিহিরের জলখাবারের জোগাড় করিতে বলিল । সকালে ভাল করিয়া খাইয় যায় নাই, বিকালেও যদি খাইতে না পায় তাহা হইলে সে আর কাহাকেও টিকিতে দিবে না । মা যদি তাহার গোলমাল শুনিতে পান, তাহা হইলে তাহার বিরক্তির সীমা থাকিবে না। বাড়ির আর সকলের মত যামিনীও মায়ের বিরক্তির ভাবনাট সবার আগে ভাবিত । স্বধু আর একটু পশ্চিমে হেলিয়া পড়িতে ন পড়িতেই মিহির স্কুল হইতে ফিরিয়া আসিল । টেবিলের উপর বইয়ের গাদ সজোরে ছুড়িয়া ফেলিয়া বলিল, “শীগগির খেতে দাও, এক্ষুনি ত মাষ্টার এসে হাজির হবে।” যামিনী বলিল, “মাষ্টার কি তোমার দরোয়ান যে ওরকম ক'রে কথা বলছ ?” মিহির বলিল, “আচ্ছা, সে ভাবনা তোমায় ভাবতে হবে না। মায়ের হয়ে অন্য কাজগুলো করতে পার বা নাই পার, তার হয়ে লেকচার বেশ দিতে পার ।” ছোট এই সময় খাবার আনিয়া হাজির করাতে, মিহিরের লেক্চারও থামিয়া গেল। তাহার প্রিয় খাবার দুই-চার রকম প্রস্তুত হইয়াছে দেখিয়া তাহার মনটাও একটু খুশী হইল। সে বসিয়া বসিয়া আরাম করিয়া থাইতে লাগিল । যামিনী আবার উপরে চলিয়া গেল । তাহার তখনও চুলবাধা, গা-ধোওয়া কিছু হয় নাই । গরম জলের জন্য একবার ভূত্যকে তাগিদ দিয়া গেল । প্রতাপের কোনোদিন পড়াইতে আসিতে দেরি হইত না । আজ বরং সে দু-তিন মিনিট আগেই আসিয়া পড়িয়াছিল। ছোট তাহাকে বসাইয়া, তাড়াতাড়ি গিয়া মিহিরকে খবর দিল, “খোকাবাবু, মাষ্টারবাবু ত আ গিয়া ।” মিহির তাহাকে মুখ ভাঙচাইয়া বিদায় করিয়া দিল। তাহার প্লেটে তখনও বড় এক টুকরা পুডিং সশরীরে বিরাজ করিতেছে, সেটার সদগতি না করিয়া সে যায় কি করিয়া ? কিন্তু জ্ঞানদার বক্তৃতা উদায়াস্ত শুনিয়া তাহার কোনোই উপকার হয় নাই, তাহ বলা যায় না। একমুখ খাবার লইয়াই সে ছুটিয়া গিয়া একবার প্রতাপকুে দেখা দিয়া আসিল । বলিল, “আমার এখনি হয়ে যাবে স্যার, . দু-মিনিটের মধ্যে আসছি।” প্রতাপ হাসিয়া বলিল, "আচ্ছ, আচ্ছা, ধীরে স্বত্ত্বে খাও কোনো তাড়া নেই।” মিহির আবার খাবার ঘরে চলিয়া গেল । প্রতাপ বসিয়া একখানা পুরাতন ম্যাগাজিন উন্টাইতে লাগিল। বাড়িতে চারিদিকে পদধ্বনি উঠিতেছে, নামিতেছে, ঘোরাঘুরি করিতেছে। ইহার ভিতর কোনটি