বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

فتواج নিয়াতর হতে ক্রীড়নকের মত সে অগ্রসর হইতেছে, আবার তাহারই নিষ্ঠুর লীলায় যখন তাহাকে বিদায় হইতে হইবে, তখন নিজের কিছু বলিবার থাকিবে না। উপরের তলায় আসিয়া পৌছিতেই যামিনী ছুটিয়৷ আসিয়া বলিল, “মা এইখানে আছেন।” তাহার বিশাল চোপ দুটি জলে ভাসিয়া যাইতেছে, অবধ্য অধর কঁপিয়া কঁপিয়া উঠিতেছে। এমন দুঃসময়েও প্রতাপ না ভাবিয়া পারিল না যে, কি আশ্চৰ্য্য সুন্দর এই তরুণী। ডাক্তারও যে একবার এই আলুলায়িতকুন্তলা, মেয়েটির দিকে বিস্মিত দৃষ্টিতে চাহিয়| দেপিল, তাহও প্রতাপেব চোখ এড়াইল না। বঙ্কিমচন্দ্রের কথা মনে হইল, “সুন্দর মুথের জয় সৰ্ব্বত্র ।” জ্ঞানদা শয়নকক্ষ হইতে বাহির হইয়৷ মানের ঘরের দিকে যাইতেছিলেন, বোধ হয় মাঝপথেই অজ্ঞান হইয়৷ পড়িয়া গিয়াছেন । প্রতাপের কথামত র্তাহীকে সেখান হইতে সরাইবার চেষ্ট৷ কেহ করে নাই । আয় তাহার মাথার কাছে বসিয়া বিলাপ করিতেছে, মিহির পায়ের কাছে বসিয়া হতবুদ্ধির মত বসিয়া আছে। চাকরবাকরগুলিও সব এধারে-ওধারে দাড়াইয়া আছে । ডাক্তার মাটিতেই ইট্রি গাড়িয়া বসিয়া জ্ঞানদাকে পরীক্ষা করিতে লাগিলেন । যামিনীর ভয়ব্যাকুল দৃষ্টি প্রতাপের বুকে ছুরির খোচার মত বিধিতে লাগিল । কোনো উপায়ে কি ইহাকে একটু আশ্বাস দেওয়া যায় না । সে ধীরে ধীরে তাহার কাছে গিয়ু বলিল, “বেশী ভয় পাবেন না । তেমন কিছু হয়নি বোধ হয় ।” যামিনী কৃতজ্ঞ দৃষ্টিতে একবার তাহার মুখের দিকে চাহিল, কোনো কথা বলিল না। ডাক্তার উঠিয় দাড়াইয় বলিলেন, “একে ঘরে নিয়ে গেলে ভাল হয়, এরকম ক’রে থাকতে ওঁর নিশ্চয়ই কষ্ট হচ্ছে।” যামিনীর দিকে চাহিয়া বলিলেন, “খুব বেশী বাস্ত হবেন না, সামলে উঠবেন বলেই বোধ হচ্ছে ।" যামিনী মুখ ফিরাইয় চোখ মুছিয়া ফেলিল। আয়, প্ৰতাপধুমস্থির এবং ডাক্তার ধরাধরি করিয়া গৃহিণীকে ঘরে লইয়া গিরা শয়ন করাইল। ডাক্তার চেয়ার টানিয়। আশাসজলনৈত্র S99ఉు ہی سہی۔-- লইয়া ব্যবস্থ-পত্র লিখিতে, বসিলন । র্ত হার উপদেশমত জ্ঞানদা মাথায় বরফ দিবার ব্যবস্থা করা হইল । তখনকার মত কি কি করিতে হই:ব, সব বলিয়, এবং দরকার হইলে তঁহাকে তৎক্ষণাং খবর দিতে বলিয়: ডাক্তার সিড়ি দিয়া নামিয়া চলিলেন । যামিনী মিহিরের কাছে ছুটিয়া গিয়া বলিল, “ডাক্তারকে ত ফাঁস দেওয়া হ’ল না খোক ?” মিহির প্রতাপের কাছে ছুটিল। প্রতাপ হাসিয়; তাহাকে আশ্বস্ত করিয়া বলিল, “ভাবনা নেই, উনি এই পাড়ারই লোক, পরে দিলেই চলবে।” ডাক্তারকে বিদায় করিয়া প্রতাপ আবার উপরে উঠিয়া আসিল । হয়ত না সাসিলেও চলিত, কিন্তু লোভ সংবরণ করিতে পারিল না । মিহির একটু কাতরভাবে তাহাকে জিজ্ঞাস করিল, “আজকেও কি আমাকে পড়াবেন স্ত্যার ?” প্রতাপ বলিল, “ন । আমি ভাবছি, তোমার বাবাকে গিয়ে খবর দিয়ে আসব। তাঁর আপিসের ঠিকানাট কি ?" মিহির ঠিকান বলিয়া দিয়া, মায়ের ঘরে গিয়৷ ঢুকিল। প্রতাপ একবার চারিদিকে তাকাইয়া দেখিল, কোথাও সে আছে কি না। তাহার অনুসন্ধান বিফল হইল না, নিজের শয়নকক্ষের স্বারের কাছে যামিনী দাড়াইয় ছিল । প্রতাপকে নীচে যাইতে উদ্যত দেখিয় সে অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল, “বাব আপিসে না থাকলেও আপনি খোজ ক’রে র্তাকে একেবারে নিয়ে আসবেন । আমাদের বড় ভয় করছে।” প্রতাপ যেন কৃতার্থ লইয়া গেল। যামিনী যদি দুরন্ত ভাষায় তাহাকে ধন্যবাদ জানাইত, সেটাকে এতখানি মূল্য প্রতাপ দিত না। সে ত শুধু ভদ্রতা মাত্র। কিন্তু এইটুকু অনুরোধ করিয়া যামিনী যেন তাহাকে পরিচিতের দলে, এমন কি আত্মীয়ের দলে টানিয়া লইল । এতখানি সৌভাগ্য যে তাহার জন্য অপেক্ষা করিয়া আছে, তাহা কি হতভাগ্য প্রতাপ আজ ঘুম ভাঙিয়া কল্পনাও করিয়াছিল ? জ্ঞানদার পীড়াতে দুঃখিত হওয়াই উচিত। কিন্তু প্রেমিকের মন সৰ্ব্বদা দয়াধৰ্ম্মকে মানিয়া চলে না। প্রতাপ: