বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سيast Sకులిశు (অর্থাৎ দেশে দেশে ) কাৰ্য্যতঃ প্রকাশ পাইলে তাহ। যেমন দোষের বিষয়, একই দেশের ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণী বা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের মধ্যে প্রকাশ পাইলে তাহাও তেমনি দোষের বিষয় । আবার ব্যক্তিবিশেষ অন্য ব্যক্তিবিশেষকে বধ করিলে বা বধ করিবার চেষ্টা করিলে তাহাও দোষের বিষয় । এই জন্য সাফল্য লাভ করিতে হইলে সকল ক্ষেত্রে সকল রকমের যুদ্ধাভিমুখতা বা জিঘাংসার বিরুদ্ধে চেষ্টা চালাইতে হইবে। যুদ্ধাভিমুখতার মূলীভূত মনোবৃত্তিকে সংযত ও মুনিয়ন্ত্রিত করিতে না পারিলে কেবল যুদ্ধসজ্জা হ্রাস দ্বার যে যুদ্ধের স্থায়ী উচ্ছেদ করা যাইবে না, তাহা আমরা শ্রাবণের প্রবাসীতে দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছি। ইহাও দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছি, যে, কোনও গবন্মেণ্টকে,কোনও জাতিকে { নেস্তানকে ) এবং কোনও জাতির মানুষদিগকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র করা যাইবে না, করা উচিত নয়। যুদ্ধের ইচ্ছা থাকিলে, কামান বন্দুক শেল বোমা তলোয়ার সঙ্গীন প্রভৃতির অভাবে মান্তস কৃষি পণ্যশিল্প রন্ধনাদিতে ব্যবহৃত হাতিয়ার ও যন্ত্ৰাদি দ্বারা যুদ্ধ করিতে পারে ; এবং তাহার অভাবে লাঠি, লাথি, ঘুষি, দাত ৪ নখের সাহায্যে যুদ্ধ করিতে পারে । অতএব যুদ্ধের উচ্ছেদ করিতে হইলে সমষ্টিগত ও ব্যক্তিগত যুদ্ধ জিনিষটা যে গহিত, এই বিশ্বাস সকলের মনে বদ্ধমূল করিতে হইযে। যুদ্ধাভিমুখ মনোবৃত্তির একটা কারণ পরের ধনে লোভ । দিগ্বিজয়ী রাজার দিগ্বিজয় ইচ্ছা বা সাম্রাজ্যবিস্তার দ্বারা নিজের গৌরববৰ্দ্ধন ইচ্ছা হইতে যুদ্ধ আজকাল হয় না । যে-সব জাতি পণ্যদ্রব্য উৎপাদন বেশী করে, তাহারা তাহা বিক্রীর জায়গা নিজেদের দেশের বাহিরে খোজে । পণ্যশিল্পে অনগ্রসর বড় একট। দেশের সহিত বাণিজ্য চালাইতে পারিলে এই সব জিনিষ বিক্ৰী করিয়া অনেক লাভ হইতে পারে। ক্রেতার জাতিকে যদি অধীন রাখা যায় এবং শিল্পে অনগ্রসর করা বা রাখা যায়, তাহা হইলে আরও সুবিধা । পণ্যশিল্পেব কারখানায় পণ্যদ্রব্য উৎপাদন করিতে হইলে কাচা মালের দরকার। পণ্যশিল্পে অনগ্রসর কোন কোম. বড়; দেশ e নিজেদের অধীন থাকিলে কাচা মাল সংগ্রহের সুবিধাও হয়। কোন কোন জাতি আবার অন্ত দেশে উপনিবেশ স্থাপন দ্বারা নিজেদের ঘনবসতি দেশকে অপেক্ষাকৃত বিরলবসতি করিতে চায়। এই অন্য দেশকে নিজেদের অধীন করিতে পারিলে উপনিবেশ স্থাপনের কাজটা চলে ভাল। জাপানের মাঞ্চুরিয়া দখল করিবার ইহা একট। কারণ । ব্যক্তিগত ভাবে যে মানুষ লোভের বশবর্তী হইয়া পরস্ব অপহরণ করে, সে অপরাধী ও দণ্ডনীয়, এ বিশ্বাস সভ্য মানুষদের মনে জন্মিয়াছে। ফলে অধিকাংশ মানুষ চুরি করে না। কিন্তু জাতিগত ভাবে কোনও মানবসমষ্টির পক্ষেও যে পরস্বাপহরণ দোষ, এ বিশ্বাস এখনও মানবসমাজে বদ্ধমূল হয় নাই, কিন্তু হওয়া দরকার। ঈশোপনিষদে আছে— ঈশাবাস্তমিদংসৰ্ব্বং ধংকিঞ্চ জগত্যাং জগৎ । তেন ত্যক্তেন ভূঞ্জাখা মা গৃধঃ কস্তস্বিদ্ধনম্। তাৎপর্য । জগতে যাহাঁ-কিছু আছে তাহার মধ্যে জগদীশ আছেন । র্তাহার প্রদত্ত যাহা, তাহার দ্বারা ভোগ কর । কাহারও ধনে লোভ করিও না । এই উপদেশ যেমন ব্যক্তিগত ভাবে, সমষ্টিগতভাবে পালনীয় । পুথিবীর বর্তমান অবস্থায় সত্য কথা বলিবার লোকের বিশেষ আবশ্যক । সভ্য উপলব্ধি জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ধৰ্ম্মবিষয়ক পক্ষপাতে দুষ্ট মনের কাজ নয় ; ধনিক বা শ্রমিকের, কৃষক বা ভূম্যধিকারীর, শাসক বা শাসিতের, শাদা পীত কাল বা ধূসর জাতির অনুকূল বা প্রতিকূল মন লইয়। সত্যান্বেষণে প্রবৃত্ত হইলে সফলপ্রধত্ব হওয়া যায় না। অথচ আমাদের মন উক্তরূপ সব সংস্কার হইতে মুক্ত নহে। এই জন্য ঐ প্রকার সমুদয় সংস্কার হইতে মুক্ত মন লইয়া আবার জন্মিতে ইচ্ছা হয়। তাহা হইলে সত্য উপলব্ধি করিতে পারিবার সম্ভাবনা অধিক হইত। কেবল সত্য উপলব্ধি করিতে পারিলেই হইবে না। আমরা যদি স্বার্থের দাস হই এবং সত্য বলিবার সাহস যদি আমাদের না থাকে, তাহা হইলে সত্য জানিয়াই বা তেমনি