পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাত্র বিবিধ প্রসঙ্গ—চন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায় Q్సహి কি ফল ? এই জন্য এমন মন লইয়া জন্মিতে ইচ্ছা হয়, যাহা বিন্দুমাত্রও স্বার্থের বশ হইবে না, এবং সত্য প্রকাশ করিবার সাহস যাহার পূর্ণমাত্রায় থাকিবে। কিন্তু এমন পুনর্জন্ম কি কাহারও হয় বা হইবে ? যাহার সম্বন্ধে নিশ্চিত কিছু জানি না, সেইরূপ পুনর্জন্মের আশায় বসিয়া থাকিলে চলিবে না। ইহজন্মেই যথাশক্তি সত্য জানিবার ও বলিবার চেষ্টা করিতে হইবে । প্লেগ এখনও আছে আধুনিক সময়ে প্রায় সাঁইত্রিশ বৎসর পূৰ্ব্বে ভারতবর্ষে প্লেগের আবির্ভাব হয়। বাংলা দেশে ইহার বিশেষ প্রাদুর্ভাব কখনও হয় নাই, কিন্তু অন্য অনেক প্রদেশে হইয়াছিল। প্রাদুর্ভাব কয়েক বৎসর হইতে কোনও প্রদেশে হইতেছে না বটে, কিন্তু কোন বৎসরই ভারতবর্ষ প্লেগশূন্ত হয় নাই। বৰ্ত্তমান বৎসরেও এই রোগের আক্রমণ ও তাহা হইতে মৃত্যু হইতেছে । আজ ২৩শে শ্রাবণ ৮ই আগষ্ট যে সরকারী গেজেট অব ইণ্ডিয়া পাইয়াছি, তাহাতে ১৬ই জুলাই যে সপ্তাহ শেষ হইয়াছে সেই সপ্তাহে এই রোগের আক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা দেওয়া আছে। ঐ সপ্তাহে ২২৫ জন আক্রাস্ত হয় এবং তাহাতে ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়। গত বৎসর ঐ সপ্তাহে আক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা যথাক্রমে ৭৮ ও ৪২ ছিল। গত পাচ বৎসরের ( ১৯২৭—৩১ ) গড় সংখ্যা ১৯৫ ও ১২২ ৷ এই অঙ্কগুলি হইতে বুঝা যাইতেছে, যে, এ বৎসর গত পাচ বৎসরের চেয়ে প্লেগের প্রকোপ বেশী। আক্রমণ ও মৃত্যুসংখ্যা অবগু ভারতবর্ষের মত বৃহৎ দেশের পক্ষে কম। কিন্তু লক্ষ্য করিবার বিষয় এই, যে, অন্য এমন কোন সভ্য দেশ নাই যেখানে ৩৭ বৎসর ধরিয়া প্লেগ লাগিয়া আছে। এই রোগের একটা মূলীভূত কারণ দারিদ্র্য। ভারতবর্ষের দারিদ্র্যের আর একটি প্রমাণ, আমাদের দেশের লোকদের গড় পরমায়ু ২৩২৪ বৎসর। পাশ্চাত্য বহু দেশের গড় ৪৬ হইতে ৫-এরও উপর ; জাপানেরও প্রায় ঐক্ষপ } , P. “মণিরামপুরে হিন্দুদের দুরবস্থা” এই শিরোনামের নীচে বঙ্গবাণী’তে মুদ্রিত নিম্নোদ্ধত সংবাদটি পড়িয়া আমরা সাতিশয় দুঃখ অনুভব করিতেছি : সংবাদপত্র পাঠকগণ যশোহর সদর মহকুমা বিশেষতঃ মণিরামপুর থানার অবস্থা অনেকটা অবগত আছেন । সম্প্রতি ইহা নারী-হরণের প্রধান কেন্দ্র হইয়া উঠিয়াছে। এখানে উপযুপিরি কয়েকটি নারী-হরণ সম্পর্কে পাজিয়া হইতে মহকুমা হিন্দু সভার কল্পিগণ প্রায় সমগ্র থান পরিভ্রমণ করিয়া হিন্দুদের যে দুরবস্থা প্রত্যক্ষ করিয়া আসিয়াছেন তাহা বর্ণনাতীত। প্রকাশ, ঐ থানায় বহুদিন হইতে নিৰ্ব্বিবাদে হিন্দু নারী-ধর্ষণ চলির অাসিতেছে, কিন্তু নানা কারণে তাহ বাহিয়ে প্রকাশ পায় নাই। এক একটি গ্রামে ২৪ বা ৮।১০ ঘর হিন্দুর বাস—তাহাও দ্রুত লোপ পাইতেছে । হিন্দুরা ম্যালেরিয়ায় জীর্ণ, নৈরাপ্ত ও উৎপাহহীনতার প্রতিমূৰ্ত্তি ও ক্ষয়িষ্ণু । ইহার সর্বপ্রকার আত্মসম্মানজ্ঞানবর্জিত, পরপরের প্রতি সহানুভূতিশূন্ত এবং বিচ্ছিন্ন। অত্যাচার ইহীদের এমনি সহিয়া গিয়াছে, কোনও নারীর উপর অত্যাচার হইলে ইহার; বিশেষ কিছু অসাধারণ ব্যাপার মনে করে না ; এবং কোনও প্রকার গোলমাল না করিয়া নীরব থাকে । মণিরামপুর এবং তাহারই মত দুরবস্থাপন্ন আরও অনেক গ্রামের হিন্দুদের সাহায্যাথ ও তাহাদের মনে সাহস ও আশার সঞ্চারের জন্য বিশাল হিন্দু সমাজ কি করিতে পারেন, তাহা সকলেরই ভাবা উচিত এবং যথাসম্ভব শীঘ্ৰ কাৰ্য্যত কিছু সদুপায় অবলম্বন করা কৰ্ত্তব্য । চন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায় স্বৰ্গীয় চন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায় করাচীতে মহাত্মা গান্ধীর নামে নামিড মিউনিসিপ্যাল উদ্যানের অধ্যক্ষ ছিলেন। গত ৫ই আগষ্ট হঠাৎ হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়। বন্ধ হইয় তাহার মৃত্যু হইয়াছে। তাহার বয়স আহমানিক ৫০ বৎসর হইবে, কিন্তু দেখিলে তাহা মনে হইত না । করাচীর ইংরেজী দৈনিক সিন্ধ অবজার্ভারে তাহার সৌজন্য ও অমায়িকতার এবং বাঙালী ও সিন্ধী সকলের সহিত সন্তাবের প্রশংসা মুদ্রিত হইয়াছে। ঐ কাগজে দেখিলাম, তাহার সৌন্দর্য্যবোধ, উদ্যানরচনাদক্ষত৷ ও পরিশ্রমে করাচীর গান্ধী উদ্যান ও অন্যান্য কোন কোন উদ্যান ও পার্ক স্থশোভিত হইয়াছিল। শহরটিরও শোভাবর্ধন তিনি করিয়াছিলেন। সিন্ধুদেশের হায়দরাবাদ শহরও উহার দ্বারা অলঙ্কড হুইয়াছিল । তিনি করাচীর “রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য ও নাট্য সমতি"র সহিত সংযুক্ত 畿