বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন সাহস হইল না। সে চলিয়া গেলে ভ্রাতাভগিনী যেমন বসিয়াছিলেন নীরবেই বহুক্ষণ সেইভাবে বসিয়া বুহিলেন । খাইতে বসিয়া ঐশ্রিল বলিল, "এবারে আসতে পথে তোমাদের স্বভদ্রবাবুকে দেখলাম।” বীণ। বলিল, “কই, আগে বলিস্নি ত? আলাপ झ्'ल ?” “উহু, কথা যদিও বললাম অনেকগুলো ।” “তোকে চিনতে পারলেন না ?” “কি ক’রে চিনবেন ? স্বলতাদিদের বাড়ীতে আমিই ৪কে দেখেছি, আমার পরিচয় কেউ ওঁকে দিয়েছে ব’লে ত মনে হয় না ।” “কি কথা হ’ল ?” “দেওয়ানজী প’ড়ে গিয়ে একটু চোট পেয়েছিলেন, তাকে ধ’রে র্তার কেবিনে দিয়ে আসতে বললাম।” “দিলেন ?” “E o "তারপর তুই কি বললি ?” “কি আবার বলব, একটু কেবল হাসলাম।” “ধন্তি মেয়ে বাবা তুই, একটু ধন্যবাদ ত দিতে হয় ?” “বাংলা ভাষায় সেট ত আর দেওয়া চলে না, মধুত দিতাম ।” “স্বভদ্রবাবু তোর হাসি দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেলেন বোধ হয় ?” “সম্ভব ।” “কি বললেন ?” “বললেন, আমার সঙ্গে টিংচার আইওডিন আছে দিচ্ছি, ওঁর পিঠে একটু লাগিয়ে দেবার ব্যবস্থা করুন।” “উ:, একেবারে পূরোদস্তুর রোমান্স । তারপর কি হ’ল শুনি ।” “Exit or Curtain t” “এই নাকি তোর অনেকগুলো কথা ?” “তা বই কি, কথা আবার লোকে কত বলে ?” বীণা কলকণ্ঠে হাসিয়া বলিল, “সত্যি, আমার বদলে তুই আমার বাবার মেয়ে হ'লে পারতিল।” শৃঙ্খল b"& 3 ঐন্দ্রিলা সে হাসিতে যোগ দিল না, কি মনে করিয়া গম্ভীর হইয়া গেল । খাওয়া শেষ করিয়া দু-জনে উঠিয়া পড়িবে কি না ভাবিতেছে এমন সময় খাবার ঘরের পাশে বাগানের মুরকি-ঢালা রাস্তায় মোটরের চাকার শব্দ শোনা গেল । বীণা বলিল, “এত রাত্রে কে আবার আসে রে বাবা ।” গাড়ীবারান্দার নীচে সিড়িতে পায়ের শব্দ, তার পরেই স্মিতহাস্তে মুখ ভরিয়া বিমান আসিয়া একেবারে খাবার ঘরের দরজায় দাড়াইল । ঐন্দ্রিলা অল্প একটু তাহার দিকে পিঠ দিয়া সরিয়! বসিল। বীণা অত্যন্ত বিস্মিত মুখ করিয়াছিল। অকস্মাৎ হাসিয়া উঠিয়া বলিল, “আপনি এমন সময়ে হঠাৎ ?” বিমান নত হইয়া দুই বোনকে নমস্কার করিল, তারপর অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল, “আপনার এই বইটা ক’দিন ধ’রে ক্লাবে প’ড়ে ছিল, দিতে এসেছি।” হাত বাড়াইয়া বইটা লইয়া বীণ। বলিল, “ক্লাবের দরোয়ানকে দিয়ে পাঠিয়ে দিলেই ত হ’ত, নিজে কেন এলেন কষ্ট ক’রে ?” বিমান কহিল, “কষ্ট আবার কি, pleasure বলুন ।” বাণ হাসিয়া কহিল, “তথাস্তু।” বিমান দাড়াইয়াই ছিল, কহিল “একবার বস্তেও যে বললেন না বড় ?” বীণ অবলীলায় কহিল, “বসতে বললেই খেতে বলতে হয়, কিন্তু খেতে দেবার মত কিছু আর দু-বোনে বাকী রাখিনি ।” বিমান একটা চেয়ার টানিয়া গুছাইয়া বসিল, কহিল, “রাত্রের খাওয়া একটু সকাল-সকালই সেরে ফেলেন বুঝি ?” বীণা কহিল, “হা, আর বেশী রাত করলে ভোরবেলার চা-খাওয়াটাও সঙ্গে সঙ্গে সেরে নিতে হয় ।” বিমান কহিল, “আমার দেখুন দিনের বেলাটা এত বেশী sordid লাগে, যে, বেঁচে থাকবার মত সময় যেটুকু রাত্রেই আমাকে ক’রে নিতে হয়। অন্ধকারে মনটা তৰু অনেকখানি ছাড়া পায়, যে-দিকে যা-খুশী কল্পনা করে নেওয়া চলে ।” w