পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8وع سوا সকলকে টেক্কা দিয়াছে – টেক্কা দিয়া উপরে উঠিয়াছে ; তারিণীর সারা বুকে খুশী উপছাইয়া পড়িল ! এবার জয় মানুষ হইয়াছে—বুদ্ধি হইয়াছে—এবার বাপের কথা রাখিবেই ! জয় এথন নিতান্ত ছেলেমানুষ নয় —তাহার বিবাহ দেওয়া দরকার ! ছোট টুকটুকে একটি বউ ঘর আলো করিয়া.বাড়িময় ঘূৰ্ব ঘুৰ্ব করিয়া বেড়াইবে । কিন্তু বিবাহের পূৰ্ব্বে ঘর দুটির সংস্কার দরকার। মধু বলিল—বিয়ে ? বিয়ে মাষ্টার করচে না-দেখে নিও —বলে কি শুনবে ?—বলে—আমি রোজগার করব তার পাচ ভূতে লুটে-পুটে খাবে- সে অামি দেখতে পারব না। তারিণী ভাবিল—ন, বিয়ে আবার করিবে না ! জয়চণ্ডীপুরের ছীমন্ত হালদারের মেয়েটিকে দেখিলে আর ন। বলিতে হুইবে না ! যে দেখিয়াছে সে-ই বলিয়াছে ধন্তি মেয়ের রূপ! দাড়াও না—কালই তারিণী গিয়া কথা দিয়া অসিতেছে! ছেলে এখন রোজগার করিতেছে, গহনাপত্র ছাড়া নগদ একশ’টি টাকার কমে কিছুতেই ছাড়িবে না ; বলিবে—তাই বললে কি হয় ভায় ?—অমন ছেলে এ দিগরে পাবে না-ওই পুরোপুরি এক-শ, বুঝলে ? তারপর ছেলে-বউ রহিল ; উহাদের ঘর-সংসার, উহার দেখিয়া শুনিয়া বুঝিয়া লউক-ডাহার আর ক'দিনই বা ! উহাদের স্বর্থী দেখিয়াই তাহার শাস্তি ! নোনীগঞ্জের বাবুদের বাড়ির চণ্ডীমণ্ডপের একধারে বসিয়া দলের লোকের হৈ-চৈ করিতেছিল । অধিকারী একটি একপোয়ে বাটিতে তেল লইয়৷ মাখিতে বসিয়াছিল। বলিল-ও মল্লিকে-মাষ্টারকে ডেকে দে ত ঝপ ক’রে-ইনি ডাকছেন—আপনি বক্ষন তারিণী খালি চৌকিটার উপর বসিল । ইনিই তাহ। হইলে অধিকারী—তাহার ছেলে জয়ার মনিব । বেশ লোকটি ত—আপনি আজ্ঞে করিয়া কথা বলে । তারিণী বলিল,-জুয়ার বিয়ের সময় যাবেন কিন্তুকৃ— নিয়ে যাব আমি এসে—মোদ্ধা একমাস ওকে ছুটি দেওয়া চাই—ছেলে-বউ দু-দিন লোকে দেখবে কি-না !—বুঝতেই পাচ্ছেন S00áు সিগারেট টানিতে টানিডে একটি ছোকুর প্রবেশ করিল। তারিণীর দিকে একটু তেরছ চাহিয়৷ বলিল - কে-আমায় কে ডাক্‌ছে রে মল্লিকে ? বলিয়৷ ছোকরাটি থিয়েটারী ভঙ্গীতে অধিকারীর দিকে চাহিল। অধিকারী তারিণীকে বলিল—এই যে এরই নাম জয়-ইনি তোমায় খুজছেন— তারিণী তখন সম্মুখে ভূত দেখিয়াছে। ভূত দেখিলেও কাহারও মুখের চেহারা অমন বদলাইয়া যায় না ! এ জয়া ত তাহার ছেলে জয় নয় ! একে ত সে চাহে নাই—আশ্চৰ্য্য—ইহার নামও জয় ! ছোকরাটি বলিল—কি বলবেন—বলুন ন—তবে আগেই ব’লে রাখছি মশাই—নাইট পিছু আমার এক টাকা রেটু-আর জলখাবার গাড়ীভাড়া—সে যা হয়— আপনাদের খুশী-মাফিকৃ— কথা আর শেষ হইল না। তারিণী উঠিল। উঠিয়৷ পাগলের মত চলিতে লাগিল । আবার সেই মাঠের পথ ! হাওয়ায় ধূলা উড়াইয় তারিণীর মুখেচোখে ঢুকিয়া একেবারে বিপর্যন্ত করিয়া দিল-ওই অশ্বখ গাছটি পার হইলেই জোনের মাঠ— সার সার ধানের মাঠ চলিয়া গিয়াছে—সবুজ রঙের ঢেউ বুকে লইয়৷ পৃথিবী সেখানে আপন মনে খেলা করে— কিন্তু তারিণী অতদূর পৌছিতে পারে নী—মাথার উপর অগ্নির পিণ্ড জালিয় তাহার মাথা হইতে পা পৰ্য্যন্ত কে যেন পোড়াইয়া দিল—একট। খেজুর গাছের গোড়ায় প৷ লাগিয়া তারিণী আচমকা পড়িয়া গেল । জ্যৈষ্ঠের শেষ ! ক্ষুদে ক্ষুদে লাল ফলওয়ালা কুঁচ-বন— সজিনার পাকা পাতার রাশ–গাছভৰ্ত্তি পিটুলি ফল— বেড়াঘেরা কলা বাগান—ৰ্কাটাভরা বাবলাগাছ—একটা গরু-তারও ও-পাশে কচার বেড়—বেড়া পার হইয়া একটা মদ। তাল গাছ--নিকিরিদের কুঁড়ে চালের উপর লাউয়ের ডগা—দু-টি শাদা পায়রা ; তাহার পর মুরু হইয়াছে আমবাগান—তারপর বন—বনের মাথায় আকাশ—আকাশ–শেষ নাই—