বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b"b"b" প্রবাসনী 88 S90కు পূর অসহযোগী রূপে কাগজ চালান। তিনি কিছুদিন কংগ্রেসের বঙ্গীয় প্রাদেশিক সমিতির সভাপতি এবং বাংলা দেশের কংগ্রেস ডিক্টেটর হইয়াছিলেন । কাজে কাজেই তাহার কারাবাস ঘটে । এবার তিনি ছয় মাস বন্দী ছিলেন। মুক্তি পাইয়া তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের যশোর অধিবেশনে সভাপতির কাজ করেন । “সার্ভেণ্ট” কাগজ বন্ধ হইবার পর তিনি অধুনালুপ্ত ইংরেজী দৈনিক বহুমতী’র সম্পাদক হইয়াছিলেন। “সার্ভেণ্ট”কে “নিউ সাৰ্ভেণ্ট” নাম দিয়া কিছু দিন বাহির করিয়াছিলেন । সমুদয় দুঃখকষ্ট ও ক্ষতি স্বীকার করিয়াও স্বদেশের স্বাধীনতা লাভ-প্রয়াসে আত্মনিয়োগ করিবার ইচ্ছা যে শ্যামসুন্দরের ছিল, কোন সন্দেহ নাই । সে ইচ্ছা দীর্ঘকাল কার্য্যে পরিণতও করিয়াছিলেন । প্রতিকুল অবস্থার নিকট পরাজিত হইয়। তিনি যে কখন কখন তাহ করিতে পারেন নাই, তাঁহার জন্য র্তাহার সমালোচনা আমরা করিতে পারি না, অজেয় নিখুঁত মামুযেরা হয়ত তাহা করিতে পারেন । সাম্প্রদায়িক রাজত্ব ও দাসত্ব প্রথা কেবল যুদ্ধ দ্বারা কিংবা যুদ্ধের সহিত অন্য কোন কোন উপায় অবলম্বন করিয়া এক দেশের লোক আদ্য দেশের লোককে নিজেদের অধীন করিয়া সেই অবস্থায় রাখিলে, তাহাতে পরাধীন দেশের ও তাহার অধিবাসীদের উপর বিজেতাদের কোন ন্যায়সঙ্গত অধিকার জন্মে না । তথাপি, যুদ্ধে জয় দ্বারা দেশ দখল করার রীতি চলিয়৷ আসিতেছে বলিয়। পরাধীন দেশের লোকেরা যত দিন পর্য্যন্ত স্বাধীন না হয়, ততদিন বিজেতাদের প্রভুত্ব মানিতে বাধ্য হয়। কিন্তু যুদ্ধে জয়ের কথা ছাড়িয়া দিয়া, অন্য সময়ে ও অবস্থায় কতকগুলি লোককে অন্য কতকগুলি লোকের অধীন হইতে বলা নিতান্ত অযৌক্তিক ও অন্যায়। উহা কতকটা দাস ক্রয়-বিক্রয় প্রথার মত। পৃথিবীর সষ সভ্য জাতি যে এখন দাসক্রয়বিক্রয় প্রথার নিন্দ করে, এবং ঐ প্রথা যে প্রকাখ্য আকারে সকল সভ্য দেশ হইতে উঠিয়া গিয়াছে, তাহার তাহাতে কারণ কি ? দাসের নিজ মাতৃভূমি হইতে আত্মীয়স্বজনের মধ্য হইতে সেতারণা বা নিষ্ঠুরতা সহকারে আনীত হইয়া অন্তের নিকট বিক্রীত হইত এবং তাহদেব ক্রেতা মনিবের। তাহদের প্রতি কঠোর নিষ্ঠুর ব্যবহার করিত, ইহা একটি প্রধান কারণ বটে। কিন্তু ক্রীত দাসদের প্রত্যেক মনিব তাঁহাদের প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করিত না । এইজন্য, দাসত্ব প্রথার বিরুদ্ধে সৰ্ব্বস্থলে বিদ্যমান একটা প্রধান আপত্তি এই, যে, উহা কতকগুলি মানুষকে পশুর মত ক্রয়বিক্রয়ের নামান্তর মাত্র। ঐ প্রথ অনুসারে বিক্রীত ও ক্রীত মানুষদের কোন মন্তযোচিত স্বাধীনতা ও স্বাধীন ইচ্ছা স্বীকৃত হইত না ; দাসদেব মনিবেরা তাহাদিগকে হস্তান্তরিত করিতে পারিত— যেমন ঘোড়া গোরু কুকুর গাধা ভেড়ার মনিবের তাহাদিগকে হস্তান্তরিত করে । মানুষদিগকে এইরূপ হস্তান্তর করা কি ন্যায়সঙ্গত ও ধৰ্ম্মসঙ্গত ? উহা কি হস্তান্তরকারী ও হস্তান্তরিতদের মহুষ্যত্ব সঙ্গত ? এখন ভারতবর্ষের প্রত্যেক প্রদেশ ইংরেজদের অধীন আছে । কেহ যদি তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করে, “কেন তোমরা অমুক অমুক প্রদেশ শাসন করিতেছ,” তাহার শেষ সুস্পষ্ট উত্তর কেবল এই হইতে পারে, যে, “আমরা উহা জয় করিয়াছি।” উহাকে ইংরেজীতে বলে “দি রাইচ্‌ অব কংকোয়েষ্ট" অর্থাৎ জয়োৎপন্ন অধিকার। ইহা স্যায্য অধিকার কিনা, তাহার আলোচনা এখানে আবখ্যক নাই । এখন যদি অন্ত কোন জাতি ইংরেজ ও ভারতীয় উভয়কেই পরাস্ত করিয়া ভারতবর্ষের প্রভু হয়, তাহা হইলে তাহারাও ঐরূপ “জয়োৎপন্ন অধিকারে’র দাবি করিতে পরিবে । এখন ইংরেজরা বলিতেছেন, র্তাহারা ভারতবর্ষকে স্বশাসনের অধিকার দিবেন। তাহারা যেরূপ ব্যবস্থা করিতে যাইতেছেন, তাহাতে কিন্তু তাহাদেরই প্রভুত্ব বজায় থাকিবে, ভারতীয়দের চূড়ান্ত ক্ষমতা কোন দিকে কোন বিষয়েই থাকিবে না । সে আলোচনা ছাড়িয়া দিয়া, তাহারা যে স্বশাসনই দিতে চাহিতেছেন তাহ মানিয়া লইয়া, তাহাদের সাম্প্রদায়িক ভাগবাটোয়ারার ব্যবস্থা যে রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে মানুষকে তাহার সম্মতি