বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন বিবিধ প্রসঙ্গ—সাম্প্রদায়িক রাজত্ব ও দাসত্ব প্রথ৷ b-br。 ব্যতিরেকে কাৰ্য্যত পশুর মত হস্তান্তর করিতেছে, তাহাই আমরা দেখাইতে চাই । * ভারতবর্ষের কতকগুলি প্রদেশে হিন্দুদের সংখ্যা বেশী, অন্য কয়েকটিতে মুসলমানের সংখ্যা বেশী । প্রাদেশিক সাম্প্রদায়িক ভাগবাটোয়ারার ব্যবস্থায় যে-যে প্রদেশে হিন্দুদের সংখ্যা বেশী সেগুলিতে মুসলমান প্রতিনিধিদিগকে দ্ব্যবস্থাপক সভায় তাহাদের সংখ্যার অনুপাতের অতিরিক্ত আসন দিলেও তাহার অধিকাংশ আসন হিন্দুদেরই অধিকৃত থাকিবে । ঐ সকল প্রদেশের ব্যবস্থাপক সভায় যে-সব হিন্দু অধিকাংশ আসন দখল করি। থাকিবেন, র্তাহাদের নির্বাচনে মুসলমানদের কোন হাত থাকিবে না ; অথচ সেই সব হিন্দু মুসলমানদিগকেও শাসন করিবেন। ইহার মানে এই, বে, কয়েকটি প্রদেশে ইংরেজ গবন্মের্ণট মুসলমানদিগকে হিন্দু মনিবদের শাসনে হস্তাস্তরিত করিতেছেন। হিন্দুরা ত ঐ সব প্রদেশ ইংরেজদের হাত হইতে জয় করিয় লয় নাই, যে, মুসলমানদের সন্মতি ব্যতিরেকেও তাঁহাদের উপর প্রভূত্ব করিবে ? এই প্রকার আর কয়েকটি প্রদেশে মুসলমানদের সংখ্যা বেশী বলিয়া মুসলমান প্রতিনিধির তথাকার ব্যবস্থাপক সভাগুলিতে অধিকাংশ আসন আইন অনুসারে দখল করিয়া তথাকার হিন্দুদিগকেও শাসন করিবে ; অথচ এই মুসলমান প্রতিনিধিদিগের নির্বাচনে হিন্দুদের কোন হাত থাকিবে না। কাৰ্য্যতঃ ইহার অর্থ এই দাড়ায়, যে, এই কয়েকটি প্রদেশের হিন্দুদিগকে ইংরেজরা মুসলমানদের হাতে হস্তান্তরিত করিতেছেন। মুসলমানরা এই প্রদেশগুলি ইংরেজদের হাত থেকে জয় করেন নাই । সুতরাং তথাকার হিন্দুদিগকে তাহদের সম্মতি ব্যতিরেকে মুসলমানদের হাতে সপিয়া দেওয়া বৈধ রাজনীতির কোন নিয়ম সম্মত ? উহ! কি দাস হস্তান্তর করণের মত নয় ? মুসলমানদের মধ্যে র্যাহারা সাম্প্রদায়িকতাগ্রস্ত র্তাহারা বলিবেন, “আমাদিগকে কয়েকটা প্রদেশে প্রভুত্ব করিতে দাও, তাহা হইলে আমরা অন্য প্রদেশগুলিতে মুসলমানদের উপর হিন্দুদের প্রভূত্বে সম্মতি দিব।” কিন্তু প্রশ্ন এই, "হিন্দুপ্রধান প্রদেশগুলির মুসলমানদিগকে এই প্রকারে | হলুদের হাতে সপিয়া দিবার অধিকার আপনাদিগকে কে দিল ? মুসলমানপ্রধান প্রদেশগুলিতে হিন্দুদিগকে শাসন করিবার অধিকারই বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদিগকে কে দিল ?” মুসলমানরা পশু নয়, হিন্দুরাও পশু নয়, যে, ইংরেজরা যেখানে যাহার হাতে খুশী তাহাদিগকে সপিয়া দিবে। সাম্প্রদায়িক জনসংখ্যার অনুপাতে ব্যবস্থাপক সভায় আসন-সংরক্ষণ এবং স্বতন্ত্ৰ নিৰ্ব্বাচনের যাহার পক্ষপাতী তাহারা বলিবেন, আসন সংরক্ষণ না-করিয়া সম্মিলিত নিৰ্বাচন প্রথাতেও সমগ্ৰ ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় হিন্দুর অধিকাংশ আসন পাইবে, সুতরাং সমগ্রভারতে হিন্দুর প্রভুত্বই হইবে । এরূপ মত ও উক্তির মধ্যে একটি গুরুতর ভ্রম নিহিত রহিয়াছে । আসন-সংরক্ষণ না থাকিলে ও সম্মিলিত নিৰ্ব্বাচন হইলে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভাগুলিতে র্যাহার প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচিত হইবেন, তাহীদের ধৰ্ম্মমত যাহাই হউক তাহারা সকল সম্প্রদায়ের লোকদের দ্বারা নিৰ্ব্বাচিত হওয়ায় সকলেরই প্রতিনিধিরূপে সকলেরই মঙ্গলামঙ্গলের জন্য দায়ী থাকিবেন, এবং প্রত্যেক বারের নির্বাচনে ংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ভুক্ত লোকেরাই যে সৰ্ব্বাধিক সংখ্যায় প্রতিনিধি নির্বাচিত হইবেন, তাহাও নিশ্চিত নহে। এই জন্য এরূপ গণতান্ত্রিক প্রথায় সাম্প্রদায়িক রাজত্ব কোথাও প্রতিষ্ঠিত হইবে না। আমাদের মত আরও খুলিয়। বলিতেছি । আমেরিকায় ও ইংলণ্ডে এবং অন্য অনেক সভা দেশেও ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মাবলম্বী লোক বাস করে । সেখানে ব্যবস্থাপক সভায় প্রটেষ্টাণ্ট, বা রোমাম কাথলিক, বা ইহুদী কম বা বেশী হইল, তাহা লোকে দেখে না ; কোন রাজনৈতিক দলের সভ্য বেশী হইলে, তদনুসারে সেই দল মন্ত্রীসভা গঠন করিয়া দেশ শাসন করে । সেই দল পরবর্তী নির্বাচনে পরাজিত হইলে আবার অন্য দল কিছু কাল দেশ শাসন করে। কাজ এই ভাযে চলিতে থাকে । আমাদের দেশে কৃত্রিম উপায়ে সাম্প্রদায়িক মনোভাব অতিরিক্তরূপে বাড়াইয়া দেওয়ায় জামরা গণতান্ত্রিক শাসনের উৎকর্ষ ও সুবিধা বুঝি না । o কোন শ্রেণীর জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক আসন সংরক্ষিত না থাকিলে এবং গণতান্ত্রিক প্রথা অনুসারে সম্মিলিত বা