বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, ১ম সংখ্যা ] সেমেন স্থানচু্যত রেলের উপর দাড়াইয়৷ রহিল ; তা’র কুঠিওলা তার পায়ের কাছে পড়িয়া রহিল। যে ট্রেনটা জুলিতেছিল সে মালগাড়ী নয়—সে প্যাসেঞ্জার ট্রেন ; থামাবারুমতো তাহার কাছে কিছুই ছিল না। তাহার কাছে নিশান ছিল না। সে রেলট। ঠিক জায়গায় বসাইতে পারে ন—খালি-হাতে সে রেল-গোজ গুলা বাধিতে পারে न। . अट्षtषमीश्च यशांतःि बनिश्वांश्च क्षश्च उश् िच दूेीनि ছটিয়া যাইতে হইবে। নহিলে প্ৰাণ-বাচানো ভার! সেমেন্‌ তাহার গৃহের দিকে বেদম ছুটিতে লাগিল । মধ্যে-মধ্যে যেন পড়িয়া যাইবে এইরূপ মনে হইল—অবশেধে বনভূমি পার• হইয়া গেল, আর ৭• • কদম গেলেই তাহার কুটার-গৃহে আসা যায়—সেই সময় হঠাৎ কারখানার শিট শুনিতে পাইল। এখন ৬টা, ৬টার দু’মিনিট পরেই ট্রেন্ট ঐখান দিয়া চলিয়া যাইবে । ভগবান! রক্ষা করে এই নির্দোষীদের । তাহার চোখের সামনে সে যেন দেখিতে লাগিল—এঞ্জিনের ব-চাকাটা কাটা রেলটাকে এখনি আঘাত করিবে, কাপিয়া উঠিবে, একদিকে হেলিয়া পুড়িবে, রেলপাত কাষ্ঠখণ্ডগুলোকে চুরমার করিয়া ভাঙিয়া ফেলিবে, আর ঠিক এইখানে রেলট বাকিয়া গিয়াছে ; এবং বঁiধটা রহিয়াছে । এইখানে এঞ্জিন, গাড়ী—সব একসঙ্গে নীচে পড়িয়া যাইবে, ৭৭ ফুট উচ্চ স্থান হইতে পড়িয়া যাইবে । তৃতীয় শ্রেণীর গাড়ীগুলো লোকে-ভরা, তাহার ভিতর ছোটে। ছেলেরাও আছে। উদ্বারা এখন শান্তভাবে নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া আছে ! না, সে তাহার কুটার-গৃহে পৌছিয়া, আবার ফিরিবার সময় পাইবে না । G সেমেন তাহার গৃহে ছুটিয়া যাইবার মৎলব ত্যাগ করিল ; সে পথ হইতে ফিরিয়া আরো দ্রুতপদে রেললাইনে ফিরিয়া আসিল । তাহার মাথা ঘুরিতে লাগিল । কি ঘটিবে সে কিছুই বুঝিতে না পারিয়া, কাট-রেল পৰ্য্যন্ত সে ছুটিয়া আসিল । তাহার কাঠিগুলা চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িয়াছিল। সে নীচু হইয় একটা কাঠি কুড়াইয়া লইল । কেন যে কুড়াইল তাহাসে জানিত না । আরো আগে ছুটিয়া গেল। তাহার মনে হইল, ট্রেন্ট কাছে আসিয়াছে। সে একটা দুরের শিট শুনিতে পাইল—রেলের কাপুনি শুনিতে নিশান é> পাইল । রেল তালে-তালে ও শাস্তভাবে কঁাপিতেছে। তাহার ছুটিবার আর শক্তি ছিল না। সাংঘাতিক স্থান হইতে প্রায় ৭•• ফুট আসিয়া সে থাকিল। হঠাৎ তাহার মাথায় একটা মংলৰ আসিল , সে তাহার টুপি খুলিয়া তাহা হইতে একটা রুমাল লইল । পায়ের বুট হইতে একটা ছুরি বাহির করিল, তার পর ক্রুশের চিহ্ন ইঙ্গিত করিয়া ঈশ্বরের আশীৰ্ব্বাদ যাজ্ঞা করিল। তাহার ছুরি দিয়া তাহার বাম বাহুর একটু উপরে এক কোপ মারিল, তপ্ত রক্ত-স্রোপ্ত ছিটুকাইয় পড়িল । সেই রক্তে রুমালট। ডুবাইল, প্রসারিত করিয়া বেশ সমান করিয়া লইল । পরে উহ! তাহার কাঠিতে বাধিল, এইরূপে একট লাল নিশান তৈয়ারী করিয়া সেই নিশান দোলাইতে লাগিল। তখন ট্রেন্ট দেখা যাইতেছে । , এঞ্জিন-চালক তাহাকে দেখিতে পায় নাই, আরো নিকটে যাইতে হইবে । কিন্তু ৭০ - কদম দূরে অমন একটা ভারী ট্রেন সে কখনই থামাইতে পারিবে না ! - তাহার বাহু হইতে ক্রমাগত রক্তস্রাব হুইতেছিল— সেমেন তাহার পাশ্বদেশ হাত দিয়, চাপিয়া ধরিল, কিন্তু তাহাতেও রক্ত বন্ধ হইল না। নিশ্চয়ই কাটাট একটু গভীর হইয়াছিল। সে চারিদিকু অন্ধকার দেখিল । তাহাধ মাথা ঘুরিতে লাগিল। তাহার চোখের সামনে যেন কতকগুলো কাজে মাছি ঘুরিতেছিল। তার পর সমস্ত একবারেই অন্ধকার হইয়া গেল ; উচ্চ ঘন্টাধ্বনি তাহার কানে টিং-টিং করিয়া বাজিতেছিল—আর সে ট্রেন দেখিতে পাইল না, আর সে ট্রেনের শব্দ শুনিতে পাইল না । কেবল একটা কথা তাহার মাথায় জাগিতেছিল ; “আমি আর দাড়াইয়া থাকিতে পারিব না, আমি পড়িয়া যাইব, নিশানটা ফেলিয়া দিব; আমার উপর দিয়া ট্রেনটা চলিয়া যাইবে – ভগবান! ভগবান! আমাকে রক্ষা করে, আমাকে উদ্ধার করতে কাউকে পাঠাe—” তা’র অন্তরাত্মা একেবারে খালি হইয়া গিয়াছিল, নিশানটা তাহার হাত হইতে খসিয়া পড়িল। কিন্তু ঐ রক্তময় নিশান মাটিতে পড়ে নাই। একজনের হস্ত উহা ধরিয়া ফেলিল এবং নিকটে অগ্রসর ট্রেনের সম্মুখে উহা তুলিয়া ধরিল। চালক উহাকে দেখিতে পাইয়া এঞ্জিনটা খামাইল ।