পাতা:বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৃষ্ণকান্তের উইল পোষ্টবাবুর ভয় হইল—মাধবী বাবর নাম ও দোর্দণ্ডপ্রতাপ শুনিয়াছিলেন । পোষ্টবাবু একটু চুপ করিলেন । মাধবীনাথ বলিতে লাগিলেন, “আমি যাহা তোমায় জিজ্ঞাসা করি, সত্য সভ্য জবাল দাও । কিছু তঞ্চক করিও না করিলে তোমায় কিছু দিব না—এক পয়সাও নহে । কিন্তু যদি না বল, মিছা বল, তবে তোমার ঘরে আগুন দিব, তোমার ডাকঘর লুঠ করিব, আদালত প্রমাণ করাষ্টব সে, তুমি নিজে লোক দিয়। সরকারী টক। অপহরণ করিমুtছ— কেমন, এখন বলিবে ?" পোষ্ট-বাবু থরহরি কপিতে লাগিলেন, বলিলেন, “আপনি রাগ করেন কেন ? আমি ত আপনাকে চিনিতাম না । বাজে লোক মনে করিয়াই গুরুপ বলিয়াছিলাম—আপনি যখন আসিয়াছেন, তখন যাহা জিজ্ঞাস করিবেন, তাহ৷ বলিব ।” মাপ ! কত দিন অন্তর ব্রহ্মানন্দেব চিঠি আসে ? পোষ্ট । প্রায় মাসে মাসে—ঠিক ঠাওর নাই । মধ । তবে রেজিষ্টার করিয়াই চিঠি আসে ? পোষ্ট । চ11–প্রায় অনেক চিঠি রেজেষ্টারা করা | માન ની દ્રશ્ના- બ્રામિ કે: ૮૮૮૬ઠ્ઠારી ફકંસા আইসে ? পোষ্ট । মনে নাই । মাধ- তোমার অফিসে এক খন। রসিদ থাকে না ? পেষ্ট মাষ্টার রনিদ খুজিয়া বাহির করিলেন । একখানি পড়িল কহিলেন “প্রসাদপুর " “প্রসাদপুর কোন জেলা ? তোমাদের লিষ্টি দেখ ।” পোষ্ট-মাষ্টার কাপিতে দেখিয়া বলিল, “যশোর ।" মাধ। দেখ তবে, আর কোথা কোথ। ইষ্টতে রেজিষ্টারী চিঠি উচ্চার নামে অসিয়াছে । সব রসিদ দেখ ] পোষ্ট বাবু দেখিলেন, ইদানীন্তন যত পত্র আসিয়াছে সকলষ্ট প্রসাদপুর হইতে । মাধবীনাথ পোষ্টমাষ্টার বাবুর কম্পমান হস্তে একখানি দশ টাকার নেট দিয়া বিদায় গ্ৰহণ করিলেন । তখন ও হরিদাস বাবাজার হুক জুটিয় উঠে নাই । মাধবীনাথ হরিদাসের জন্য একটি টাক। রাখিয় গেলেন । বলা বাহুল্য যে, পোষ্ট বাবু তাহ। আত্মসাৎ করিলেন । _ করিয়৷ কাপিতে ছাপান লিষ্টি št v চতুর্থ পরিচ্ছেদ মাধবীনাথ হাসিতে হাসিতে ফিরিয়া আসিলেন । মাধবানাথ গোবিন্দলাল ও রোহিণীর অধঃপতনকাহিনী সকলই লোকপরম্পরায় শুনিয়াছিলেন। তিনি মনে মনে স্থির-সিদ্ধাস্ত করিয়াছিলেন যে, রোহিণী গোবিন্দলাল এক স্থানে গোপনে বাস করিতেছে । ব্রহ্মানন্দের অবস্তাও তিনি সবিশেষ অবগত ছিলেন—জানিতেন যে, রোহিণী ভিন্ন তাহার আর কেহই নাই । অতএব যখন পোষ্ট আফিসে জামিলেন শে, ব্ৰহ্মানন্দের নামে মাসে মাসে রেজেষ্ঠারা হইয়। চিঠি আসিতেছে— তখন বঝিলেন (স, হয় রোহিণী, নয় গোবিন্দলাল তlংশকে মাসে মাসে খরচ পাঠায় । প্রসাদপুর হইতে চিঠি আসে অতএব উভয়েই প্রসাদপুরে কিংব। তাহার নিকটবৰ্ত্তা কোন স্থানে অবশ্ব বাস করিতেছে, কিন্তু নিশ্চয়কে নিশ্চয়তর করিবার জঙ্ক তিনি কণ্ঠালয়ে প্রত্যাগমন করিয়াই ফড়িতে একটি লোক পাঠাইলেন । সব-ইনস্পেক্টরকে লিখিয়া পাঠাইলেন, "একটি কন্‌ষ্ট্রেবল পাঠাইবেন ; বোধ হয়, কতকগুলি চোর। মাল ধরাইয়া দিতে পারিব | সব ইনস্পেক্টর মাধবীনাথকে বিলক্ষণ জানিতেন --ভয় ও করিতেল, পত্রপ্রাপ্তিমাত্র নিদ্রাসিংহ কনষ্টেবলকে পাঠাষ্ট্রয় দিলেন । মাধবীনাথ নিদ্রাসিংহের হস্তে দুইটি টাকা দিয়া পলিলেন, “বাপু হে হিনিমিন্দি কইও ন—ষ বলি, তাই কর । ঐ গাছতলায় গিয়া লুকাইয়া থাক । কিন্তু এমনভাবে গাছতলায় দাড়াইবে, যেন এখান হইতে তোমাকে দেখা যায় । আর কিছু করিতে হইবে না ।" নিদ্রাসিংহ স্বীকৃত হইয়। বিদায় হইল । মাধবীনাথ তখন ব্ৰহ্মানন্দকে ডাকিয়া পাঠাইলেন । ব্ৰহ্মানন্দ আসিয়া নিকটে বসিল । তখন আর কেহ সেখানে ছিল না । পরস্পরের স্বাগত জিজ্ঞাসার পর মাধবীনাথ বলিলেন, “মহাশয় আমার স্বৰ্গীয় বৈবাহিক মহাশয়ের বড় আত্মায় ছিলেন । এখন তাহার ত কেহ নাই –আমার জামাতা ও বিদেশস্থ । আপনার কোন বিপদ-আপদ পড়িলে আমাদিগকেই দেখিতে হয়—তাই আপনাকে ডাকাইয়াছি।” এহ্মানদের মুখ শুকাহল । বলিল, “বিপদ কি মহাশয় ?" মাধবীনাথ গম্ভীরভাপে বলিলেন, “আপনি কিছু বিপদগ্ৰস্ত বটে " ব্র । কি বিপদ মহাশয় ?