বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বত্রিশ সিংহাসন - নীলমণি বসাক.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পুত্তলিকা।
৪৩

রাজা গৃহ দর্শনার্থ গমন করিলেন, এবং তৎসমভিব্যাহারে এক অতি দীন ব্রাহ্মণও চলিল। অনন্তর যখন রাজা অট্টালিকা অবলােকন করেন তখন ঐ ব্রাহ্মণ কৌতুক ভাবে হাস্য করিতে করিতে কহিল যদি আমি এই অট্টালিকা পাই তবে এখানে থাকিয়া সদানন্দে কাল যাপন করি, আর কুটীরে কখন যাই না। এই কথা শ্রবণ মাত্র রাজা কোন চিন্তা না করিয়া তৎক্ষণাৎ গঙ্গাজল ও তুলসী-পত্র আনাইয়া ঐ অট্টালিকা ব্রাহ্মএকে উৎসর্গ করিয়া দিলেন। ব্রাহ্মণ, সুধাপানে তৃপ্ত চকোরের ন্যায় অট্টালিকা পাইয়া আনন্দ-সাগরে মগ্ন। হইল, এবং আপন ভিক্ষাধার ও বস্ত্রাদি আনিয়। সে রাত্রি ঐ অট্টালিকাতে বাস করিল।

 অনন্তর ব্রাহ্মণ সায়ং সন্ধ্যাদি করিয়া প্রথম প্রহর রাত্রে পরমানন্দে পর্য্যঙ্কে শয়ন করিয়াছে এমত সময়ে রাজলক্ষ্মী তাহার সম্মুখে আসিয়া হাস্য মুখে বলিলেন বৎস তুমি বল, আমি তােমার গৃহ মণি মুক্তাদি বিবিধ রত্নে পরিপূর্ণ করি। ব্রাহ্মণ লক্ষ্মীদেবীকে উপদেবী জ্ঞান করিয়া আতঙ্কে মৃতকল্প হইয়া রহিল, কমলা তখন চলিয়া গেলেন। পরে দ্বিতীয় প্রহর রজনীতে পুনর্ব্বার আসিয়া বলিলেন অরে অজ্ঞান ব্রাহ্মণ আমাকে বল আমি কোথায় রত্ন বর্ষণ করি। ব্রাহ্মণ তখনও কোন উত্তর করিল না, এবং ভয় ও চিন্তাতে সমস্ত রাত্রি অজ্ঞানাভিভূত থাকিল, প্রত্যুষে গাত্রোত্থান করিয়া মলিন বদনে রাজ সদনে গমন করিল।