আমাদিগকে পরিত্রাণ কর। অনন্তর বিক্রমাদিত্যকে কহিলেন দেখ আমরা এই বিপদ সমুদ্রে পড়িয়াছি, কূল দৃষ্টি হয় না, এখান হইতে গমন করিতে না পারিলে অবশ্যই মৃত্যু হইবে। তুমি অঙ্গীকার করিয়াছিলে আমার বিপদ কালে উদ্ধার করিবে, ইহা অপেক্ষা আর অধিক বিপদ কি আছে, আমরা কালের মুখে পড়িয়াছি, অতএব এই বিপদ হইতে আমাদিগকে উদ্ধার কর। বণিকের এই সকল বাক্য শ্রবণ করিয়া বিক্রমাদিত্য খঙ্গ চর্ম্ম গ্রহণ পূর্ব্বক রজ্জ, ধারণ করিয়া সাগরযানের নিমভাগে জলের মধ্যে ডুবিয়া গেলেন, এবং লঙ্গর উত্তোলন করিবার অনেক কৌশল করিলেন কিন্তু কোন প্রকারে পারিলেন না। তাহাতে তিনি জল হইতে অর্ণবযানে আসিয়া কর্ণধারকে বাদাম তুলিয়া দিতে কহিলেন। কর্ণধার বাদাম উত্তোলন করিলে বিক্রমাদিত্য জলে লম্ফ দিয়া পড়িয়া লঙ্গরের রজ্জ কাটিয়া দিলেন। তাহাতে তৎক্ষণাৎ শ্রোতঃ ও বায়ু সহকারে সাগরযান একবারে উড়িয়া চলিল। বিক্রমাদিত্য সাগরযানে উঠিতে না পারিয়া দৈবনির্ব্বন্ধ ক্রমে সাগরে ভাসিয়া চলিলেন।
এই দুদৈবের পর রাজা এক দ্বীপে উঠিলেন। ঐ দ্বীপে সিংহবতী নামে এক কন্যা থাকিতেন। রাজা নগর-দ্বারে যাইয়া দেখিলেন দ্বারের উপর লেখা আছে রাজা বিক্রমাদিত্যের সহিত সিংহবতীর বিবাহ হইবেক। তদৃষ্টে রাজা অতিশয় বিস্ময় যুক্ত হইলেন।