পাওয়া যাইতেছে না। শাস্ত্রের মধ্যে তিনি তৈত্তিরীয়সংহিতার এক কণ্ডিকা ও মনুসংহিতার চারি বচনের আলোচনা করিয়াছেন; দুর্ভাগ্যক্রমে, উহাদেরও প্রকৃতরূপ অর্থবোধ ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে পারেন নাই; তৎপরে, দক্ষ প্রজাপতির এক পাত্রে বহুকন্যাদান ও রাজা দুষ্যন্তেই যদৃচ্ছাকৃত বহুবিবাহরূপ প্রমাণপ্রদর্শনার্থে মহাভারতের আদিপর্ব্ব হইতে কতিপয় শ্লোক উদ্ধৃত করিয়াছেন। অতএব, যিনি যত বড় পণ্ডিত বা পণ্ডিতাভিমানী হউন, তাঁহার, এতন্মাত্র শাস্ত্র অবলম্বনপূর্ব্বক, বহুবিবাহ “শাস্ত্রত নিষিদ্ধ বলিয়া প্রতিপন্ন হইতেছে না”, এরূপ নির্দ্দেশ করিবার অধিকার নাই। আর, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহ “শাস্ত্রসম্মত বলিয়া স্থিরকরণার্থ বিশেষ শাস্ত্রানুসন্ধানে বা ধীসহকৃত কালব্যয়ে প্রবৃত্ত হওয়া নিতান্ত নিষ্প্রয়োজন”; এ স্থলে বক্তব্য এই যে, আমার বিবেচনাতেও তাহা নিতান্ত নিষ্প্রয়োজন। কারণ, যদৃচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিবাহ শাস্ত্রসম্মত বলিয়া স্থিরীকরণার্থ শাস্ত্রানুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইয়া, সমস্ত বুদ্ধিব্যয় ও সমস্ত জীবনক্ষয় করিলেও, তদ্বিষয়ে কৃতকার্য্য হইবার সম্ভাবনা নাই। যাহা হউক, এক্ষণে তাঁহার অবলম্বিত বেদবাক্য উল্লিখিত হইতেছে।
যদেকস্মিন্ যূপে দে রশনে পরিব্যয়তি
তন্মাদেকো দ্বে জায়ে বিন্দতে।
যন্নৈকাং রশনাং দ্বয়োর্যপয়োঃ পরিব্যয়তি
তন্মান্নৈকা দ্বৌ পতী বিন্দতে (১২)॥
যেমন এক যুপে দুই রজ্জু বেষ্টন করা যায়, সেইরূপ, এক পুরুষ
দুই স্ত্রী বিবাহ করিতে পারে। যেমন এক রজ্জু দুই যুপে বেষ্টন করা
যায় না, সেইরুপ এক স্ত্রী দুই পুৰুষ বিবাহ করিতে পারে না।
এই বেদবাক্য দ্বারা ইহাই প্রতিপন্ন হইতেছে, আবশ্যক হইলে পুরুষ, পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায়, পুনরায় দারপরিগ্রহ করিতে
- ↑ (১২) তৈত্তিরীযসংহিতা, ৬ কাণ্ড, ৬ প্রপাঠক, পঞ্চম অনুববাকক, ৩ কণ্ডিকা।