বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যবদ্বীপের আগ্নেয়গিরি S¢ዓ আমরা বেশীক্ষণ সেখানে ছিলাম না-সে রাত্রেই আমরা নর্ডর উঠিয়ে অন্ধকারে সিঙ্গাপুঃকে পেছনে ফেলে বাটাভিয়ার দিকে রওনা হই এবং বিষবরেখা পার হয়ে, অয়স্কান্ত মণির মতে নীল, শাস্তু সমুদ্র পার হয়ে, বাটাভিয়া থেকে মোটরযোগে কুড়ি মিনিটের রাস্তা তানজোন প্রিয়োক বন্দরে পরদিন নাঙর ফেলি। বেলা তখন প্ৰায় আর নেই, রাত্রে কোথায় যাব, অপরিচিত স্থান । জাহাজের কাপ্তেনকে জিজ্ঞাসা করলাম, কাল সকালে তো জিনিসপত্র নিয়ে জাহাজে আসতেই হবে, রাত্রে আমরা জাহাজে থাকতে পারব কি না | কাপ্তেন বললেন—আমাদের নিয়ম নেই। বন্দরে জাহাজ থামলে যাত্রীকে তীরেই যেতে হবে। বড় মুস্কিল। হঠাৎ এমন বৃষ্টি সুরু হয়েছে যে নামতে গেলেই কাপড়-চোপড় ভিজে যাদে । কাপ্তেন আমাদের অবস্থা। বুঝে বললেন-আচ্ছা, জাহাজে থাকার ব্যবস্থা আমি করতে পারি, কিন্তু যা খাওয়াব তা খেতে হবে, আর মশা যদি রাত্রে লাগে, তবে কিছু বলতে পারবে না । মশারি। আমি দিতে পারব না । আমরা বললাম—মশা খুব বেশী লাগবে না কি ? --রাত্রে কেবিনের দোর বন্ধ করে। (द्धo qन्९ थicनां भिति७ मां । মশার কথা বলব না বলে প্ৰতিশ্রুতি দিয়েছি বলেই সে সম্বন্ধে বেশী কিছু বললাম না। এটুকু বললেই যথেষ্ট হবে যে, সে রাত্রে ঘুম আদৌ হয় নি। এর চেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে তীরে নেমে কোন ভাল হোটেলের মশারিঘেরা শয্যায় আশ্ৰয় নেওয়াই আমাদের পক্ষে ভাল ছিল । মশার উপদ্রবের কাহিনী বাটাভিয়ার ডাচ ঔপনিবেশিক ইতিহাসের একটী বিখ্যাত অধ্যায়। ডাচেরা যখন প্ৰথম এদেশে এল, তখন স্বদেশের খাড়িগুলির স্মৃতি তাদের মনে সমুজ্জ্বল রয়েছে। বড় বড় বাড়ী ও কফিক্ষেত্র তৈরী হ’ল এখানকার খাল ও জলাভূমির ধারে। কিছুদিন পরে হাজারে হাজারে লোক মরতে সুরু করলে ম্যালেরিয়ায়। তখন সকলে বুঝলে, ইউরোপে নেদারল্যাণ্ডসে খালের ধারে বাস করা চলে, কিন্তু জাভায় নয় । ১৭৭৭ খৃষ্টাব্দে কাপ্তেন কুক দক্ষিণ প্ৰশান্ত মহাসাগরে ভ্রমণ শেষ করে দেশে ফিরবার পথে বাটাভিয়ায় তার জীর্ণ জাহাজ মেরামত করবার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন এবং এখানেই তার টাছিটী দ্বীপের দোভাষী বন্ধু টুপিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা পড়েন । জাভা ও জাতীয় ঐক্যন্তান গ্যামেলান বাদকদল।