বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У\br ffä国-西尔 হাদ্রামাউৎ প্রদেশের প্রাচীনতম নগরী এই সিবাম। এর স্থাপত্যে সৌন্দৰ্য্য নেই, আছে দৃঢ়তা ও শত্রুর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা। আমেরিকার মত আট দশ বারো তলা বাড়ী এখানে অনেক । আরবের মরুভূমিতে “স্কাইস্কেপার’ এত বেশী যে, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না, অথচ এই সব “স্কাই-স্কেপার’ আগাগোড়াই কাচা ইট ও বাজে কাঠে তৈরী । মরুভূমির বালুরাশির প্রান্তে সিবাম সহরের সাদা মিনার দেখে আমাদের প্রথমে মরীচিকা বলে ভুল হয়েছিল। লোহার ফটকের মধ্যে আমরা সহরে প্রবেশ করলাম। সিবামের সুলতান আমাদের যথেষ্ট সমাদরের সহিত অভ্যর্থনা করে তঁর প্রাসাদে নিয়ে গেলেন । সুলতানের বৃহৎ প্ৰাসাদটিও কঁাচা ইটের তৈরী । এদেশে কি রাজপ্ৰাসাদ, কি মসজিদ, কি দুৰ্গ-সবই এই উপাদানে নিৰ্ম্মিত। অথচ কি সুন্দর ও দৃঢ় ! হাদ্রামাউতের স্থপতিদের প্রশংসা না ८ ॐ . স্বাস্থ্যের দিকে অধিবাসীদের দৃষ্টি নেই। পথের দুধারে বড় বড় বাড়ী, প্ৰত্যেক বাড়ীর রান্নাঘর, স্নানাগার প্রভৃতি থেকে তালের গুড়ির খোল বার করা আছে রাস্তার দিকে । বাড়ীর ব্যবহৃত যন্ত নোংরা জল তালের খোল বেয়ে রাস্তার উপরই পড়ে । , রাস্তার মাঝখান বেয়ে আবার খোলা পাকা ড়েন, ময়লা ও আবৰ্জনায় তা কানায় কানায় ভৰ্ত্তি । রাস্তায় চলাও - এক, বিপদ, সব সময় উপরের দিকে চোখ রাখতে হবে, কোনো বাড়ীর নোংরা জল মস্তকে বৰ্ষিত না হয় । আমরা যখন সিবামে ছিলাম, বৎসরের মধ্যে সে সময় সৰ্ব্বাপেক্ষা গরম। দিনমানে একটু রোদ চড়লেই নগর নিস্তািন্ধ, পথে লোকজন দেখা যায় না, কেবল মাত্র খৰ্জ্জুর কুঞ্জের ছায়ায় গভীর কূপ থেকে জলোত্তোলনকারী উটের পদশব্দ ও স্ত্রীলোকদিগের পাখী তাড়াবার উদ্দেশ্যে হাততালি ও চীৎকার ছাড়া অন্য শব্দ শোনা যায় না। দুপুরো যেন নরকাগ্নি জলছে চারিদিকে । কষ্ট ভুলে থাকবার জন্য ঘুমুবার চেষ্টা করাই ভাল। সুৰ্য্য অস্ত যাবার পরে নগর সজীব হয়ে ওঠে, দোকানে ক্রেতাদের ভিড় হয়, পথে পথিকের ভিড় হয়। ধনী লোকে সহরের বাইরে বাগানবাড়ীতে গিয়ে স্নান ও সান্ধ্য উপাসনা করে, বাড়ীর ছাদে মজলিস বসে, চা ও কফি পান সুরু হয়। তবুও বার বার এ কথা আমাদের মনে উঠেছে - এ দেশে বাস করে মানুষে কোন সুপে ?