বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চীনের নদী NdS এই গ্রামের রাস্তার ধারে পাথর কাটিয়া একটি অভিনয়ের স্থান তৈয়ারী করা হইয়াছে। যে ঐ স্থানটি তৈয়াৱী করিবার জন্য টাকা দিয়াছে, তাহার নাম ও সে কত টাকা দিয়াছে, তাহা একপাশে একটি প্রস্তরফলকে খোদিত 四忆区1 ইউনান প্রদেশের রাস্তাগুলি যতই খারাপ হউক, চলিবার সময় তত কষ্ট হয় না, কিন্তু কষ্টের সুরু হয় তখনই যখন কোন লোকালয়ে প্রবেশ করা যায়। দস্যসংস্কুল পাৰ্বত্যস্থানে লোকালয় হইতে দূরে শৈলপাদমূলে অরণ্যের প্রান্তে রাত্রি-যাপন বিদেশী ভ্ৰমণকারীর পক্ষে আদৌ নিরাপদ নহে, কিন্তু গ্রামে ঢুকিলেই জঞ্জাল, ধূলা, মাছি, উকুন, চণ্ডুর কড়া ধোঁয়া ও গোলমালের দরুণ যে কষ্ট উপস্থিত হয়, দসু্যর হাতে পড়াও তদপেক্ষা বাঞ্ছনীয়। চীনা গ্রামের সহিত র্যাহাদের পরিচয় নাই, তাহদের এ উক্তির তাৎপৰ্য্য বুঝিতে বিলম্ব হইবে । তবুও মনে রাখিতে হইবে যে, আমি শিকু গ্রামের সৰ্ব্বাপেক্ষা পবিত্র ও পরিষ্কার স্থানে আশ্ৰয় পাইয়াছিলাম, অর্থাৎ স্থানীয় মন্দিরে, বুদ্ধমূৰ্ত্তি যে গৃহে অবস্থিত, সেই গৃহেরই এক পার্শ্বে। আমার ঘরের পাশেই আস্তাবল, সেখানে মন্দিরের পুরোহিতের অনেকগুলি অশ্ব ও অশ্বতর বাধা। উঠানে এত কাদা যে, জুতা পায়ে দিয়া হঁটিলে জুতার চামড়ার উপর এক পুরু কৰ্দমের প্রলেপ লাগিয়া যায়। এক পাশে কয়েকটি গ্ৰাম্য কুকুর বিনা কারণে ঘেউ ঘেউ করিয়া ৬াকিতেছে। ইয়াংসি নদীর নামতীরের পাহাড়ের উপর भिा क्लास्छ । পল্লীগ্রামগুলি খুব শান্ত, নদীর দুধারে উচ্চ পর্বতশিখরে ধন মেঘপুঞ্জ খেলা করিতেছে। পথের ধারে একটা খাড়া ব্ৰঙ্গ পাহাড়ের চুড়ায় একটা বৌদ্ধ মন্দির। একটা গ্রামে কেহ মারা গিয়াছে, আত্মীয়-স্বজন শোধিক প্ৰকাশ করিতেছে, বাড়ীর উঠানের বেড়ার গায়ে সারি সারি বঁাশের চটা ও কাগজের তৈয়ারী মানুষের মূৰ্ত্তি, সিডান চেয়ার, বাড়ী, নৌকা, কাগজের ঘোড়া ইত্যাদি। জিজ্ঞাসা করিয়া জানা গেল, এতগুলি মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হইয়াছে, পরজগতে ইহারা তাহার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধান করিবে । ইউনান : মণি-মন্দির। বড় বড় পাথরে ‘মণিপদ্মে হু’ মন্ত্র লিপিত । নদীর ধার দিয়া যে পথ, তার দুই ধারে খুব ঘন জঙ্গল, তবে বড় গাছের চেয়ে ছোট গাছপালা, ঝোপঝাপই বেশী। এক এক জায়গায় দুই দিক্‌ হইতে জঙ্গল আসিয়া পথকে চাপিয়া ধরিয়াছে। প্রত্যেক গাছের ডালপালায় অসংখ্য মাকড়সার জাল, বড় বড় হলদে রংয়ের মাকড়সা জালের কেন্দ্ৰস্থানে ওৎ পাতিয়া শিকারের আশায় वनिम्ना यादृछ् । নদীর এক দিক খুব উঁচু বেলে পাথরের পাহাড়-ঠিক যেন কেহ পাথরের দেওয়াল গাথিয়। রাখিয়াছে, মনে হয় ৷ পাথরের গায়ে জলের দাগ দেখিয়া বুঝা গেল, বর্ষাকালে অনেকদূরে। পৰ্যন্ত জল ওঠে । পথের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। চীন দেশে রাস্তার কখনও সংস্কার করা হয় না। মানুষ পায়ে হঁটিয়া কোন