বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Se e বিচিত্র-জগৎ ক্রমে হয়ত চলিতে পারে, কিন্তু এসব পথে যানবাহন চলাচল একরূপ অসম্ভব। একটি মন্দিরে আট দশ বৎসরের একটি ক্ষুদ্র বালক একমাত্র সেবাইত। সে মন্দিরের দুয়ারে দাড়াইয়া আমাদের দিকে হঁ করিয়া চাহিয়া রহিল, হয়ত সে তাহার আট বৎসরের জীবনে কোন ইউরোপীয়কে কখনও দেখে নাই । পাঁচ দিনের দিন আমরা চু-তি-য়েন পৰ্যন্ত ভীষণ অন্ধকারময় বনভূমি, বড় বড় বার্চ ও পপলার, একদিকে বহু নিয়ে খরস্রোত। ইয়াংসি, অন্যদিকে দুরারোহ পৰ্ব্বত-প্রাচীর। অশ্বতরের পদষ্মলন হইলেই ইয়াংসি অভিযানের ছুটি! চু-তি-য়েন গ্রানে পৌছবার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি নামিল। আশ্রয়স্থান খুজিতে খুজিতে একটা ছোট নালার ধারে একটি পাথরের ঘর পাওয়া গেল। ঢুকিয়া দেখি সেটা গ্রামের স্কুল-ঘর। একটিমাত্র চীনা বালক বড় বড় চীনা হরফে বোধ হয়-হস্তলিপি অভ্যাস করিতেছে। কিন্তু কোন গুরুমছাশয়কে দেখিলাম না । লেখাপড়ার প্রতি ছাত্রটির মনোযোগের প্রশংসা না করিয়া উপায় কি ? সেখানেই আশ্ৰয় লইলাম। বৃষ্টি থামিলে অধ্যবসায়ী ছাত্রটি বিদায় হইল। আমরা ঘরের মেঝেতে বিছানা পাতিলাম। বাতাস চলাচলের কোন অভাব নাই ঘরে, তবে সে বাতাস জানালা দিয়া আসিতেছে না।--আসিতেছে মাথার উপরের ছাদ দিয়া । মেঘउद्धा थांकांटभ छू' अbi यां' नयल উঠিয়াছিল, তাহাও চোখ উপরের দিকে তুলিয়া দেখিলে বেশ দেখা যায়। • গ্রামের লোকের স্কুলের প্রতি যে খুব দৃষ্টি আছে, ঘরের অবস্থা দেখিয়া মনে হইল না । . . . সন্ধ্যার বাতাসটি অদ্ভুত ধরণের আরামদায়ক, অবশ্য ইহাও দেখিতে হইবে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠ হইতে স্থানটীর উচ্চতা ৯০০০ ফুট । বৃষ্টি থামিয়া গেল ; আকাশে এখন বেশ নক্ষত্র উঠিয়াছে , আমরা পথের কষ্ট ভুলিয়া কাপুঃ নাশি লামা । r (? | পাশেই দুইঘর চীনা পরিবার থাকে, তারা আমাদের জল ও কাঠ সরবরাহ করিয়া দিল। তারা এখন তাদের প্ৰাপ্য অর্থের অংশ লইয়। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া সুরু করিয়া দিল-আমরা যতক্ষণ সেখানে ছিলাম, তাদের ঝগড়া থামে নাই। ইয়াংসি ও মেকং নদীর মধ্যবৰ্ত্তী পৰ্ব্বত-মালার পাইন ও শুস গাছের অরণ্যের ভিতর দিয়া আমরা চলিলাম। আরও কিছু দূরে গিয়া লিটিশিং পৰ্বতশ্রেণী, এই পৰ্ব্বতের উপর দিয়া যে পথ, সমুদ্র-পৃষ্ঠ হইতে তাহার উচ্চতা ১১০০ • হাজার ফুট । w বড় বড় গাছের নীচে ঘন বেত-বন, মাঝে মাঝে সমতলভূমিতে জেনসিয়ান ফুল ফুটিয়াছে। পৰ্ব্বতের হাওয়া যেন নূতন জীবনের সঞ্চার করিয়াছে আমাদের মধ্যে, কি সুন্দর পাখীর ডাক চারিদিকে। এসিয়ার এই সব অঞ্চলে লোক কেন যে বেড়াইতে আসে না, তা’ই ভাবি ৷ রেল নাই, মোটর নাই, হোটেলওয়ালাদের উৎপাত নাই, বৰ্ত্তমান সভ্যতার সর্বপ্রকার চিহ্ন হইতে বহুদূরে মধ্য-এসিয়ায় এই অরণ্য ও পর্বতের নিন্তব্ধতা ও গাষ্ঠীৰ্য্যের মধ্যে প্রাচীন