বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

निौश भङ्गभि ইজিপ্টের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে, ইজিপ্ট ও ত্রিপোলির মধ্যে লিবীয় মরুভূমি। এই মরুভূমির সর্বত্রই বেদুইন আরব জাতি বাস করে। ‘বেদুইন” আরবী শব্দ, ইহার অর্থ ‘মরুবাসী”-কিন্তু আজকাল বেদুইন বলিতে যে কোনো ভ্ৰাম্যমান পশুপালক জাতি বোঝায়- তাহারা শ্বেতকায় হৌক বা কৃষ্ণকায় হৌক, আরব হৌক বা নিগ্ৰেী হৌক । আসল বেদুইন জাতি আফ্রিকার নিগ্রো অপেক্ষা সুশ্ৰী:- শ্বেতকায় বেদুইন প্রায়ই আরব ; কৃষ্ণকায় বেদুইন (বিশেষতঃ যাহারা লিবীয় মরুর দক্ষিণে বাস করে ) প্ৰধানতঃ তিন শ্রেণীতে বিভক্ত-টেবু, গোরান ও বিদিয়াৎ। অনেকে সেন্ন, সি সম্প্রদায়কে বেদুইন আরবের একটি শ্রেণী বলিয়া ভুল করেন-কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেলুসি কোন একটি পৃথক জাতি নহে, ইহা একটি ধৰ্ম্মসম্প্রদায়, মুসলমান ধৰ্ম্মেরই একটি ভিন্ন সম্প্রদায় মাত্র। উত্তর আফ্রিকার সর্বত্রই এই সম্প্রদায়ের ধৰ্ম্মমত প্ৰবল। প্রায় একশত বৎসর পূর্বে আলজিরিয়া হইতে সিদি মোহাম্মদ ইবন আলি এল সেন্ন, সি নামে জনৈক সাধুপুরুষ মক্কায় তীর্থযাত্রা করেন ও সেখান হইতে ফিরিয়া আসিবার পরে এই ধৰ্ম্মমত প্রচার করেন । ইহার অনেক শিষ্য অন্য - অন্য দেশেও প্রচার কাৰ্য্যে চলিয়া যায় দেখিতে দেখিতে কুফ্রার উত্তরে সমগ্ৰ স্থানে সেন্ন, সি মত বিস্তৃতি লাভ করে। সেন্ন, সি প্ৰসিদ্ধ জগাবাহৰ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন। জগৃবাহব লিবীয় মরুভূমির প্রান্তবৰ্ত্তী একটি ওয়েসিস ও ক্ষুদ্র সহর। এই জগদ্বিখ্যাত বিদ্যাকেন্দ্ৰই ইহার সবটুকু, মসজিদ ও বিদ্যালয়ের বাহিরে সহরের কোনো পৃথক অস্তিত্ব নাই বলিলেও চলে। মসজিদে একসঙ্গে ৫০০ ||৬০০ শত লোক বসিয়া উপাসনা করিতে পারে এবং ইহার সুবৃহৎ গম্বুজের নীচে সিদি মোহাম্মদ সেন্নাসির সমাধি भक्षुङ्गभिद्र श्रीशं । অবস্থিত। সেন্ন, সি সম্প্রদায়ের লোকের নিকট ইহা একটি পবিত্ৰ তীৰ্থস্থান-বহুদূর হইতে লোকে এখানে তীর্থ করিতে আসে। জগৰাহৰ ওয়েসিস ছাড়াইয়া একশত মাইল দক্ষিণ পূর্ব কোণে সিউয়া ওয়েসিস। এখানকার পেজুর প্রসিদ্ধ। পৃথিবীর সর্বত্র এখান হইতে খেজুর রপ্তানী হইয়া থাকে। এখানে পেজুরের বাজারে একটি অদ্ভুত ধরণের প্রথা প্রচলিত আছে। বাজারে যখন শুষ্ক বা সুপক্ক খেজুর স্তুপীকৃত করা থাকে, তখন যে কোনো ভিক্ষুক বা পথিক তাহা হইতে পেট ভরিয়া যত ইচ্ছা খেজুর খাইতে পারে, কিন্তু সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইতে পারে না। সিউয়ায় কেহ উপবাসী থাকে না। সিউয়া লিবীয় মরুভূমির একটি প্রাচীনতম ওয়েসিস-খেজুর ও জলপাইয়ের প্রসিদ্ধ বাণিজ্য-কেন্দ্র। এখানকার ব্যবসায়িগণ প্রায়ই শ্বেতকায় বেদুইন আরব। সিউয়া হইতে দক্ষিণ-পশ্চিমে জাকো-আর একটি প্ৰসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র। এখানকার বাণিজ্যদ্রব্য হস্তীদন্ত, খেজুর ও অষ্ট্রীচের পালক। এখানকার ব্যবসায়ে বেদুইন আরবদের স্থান নাই-মাজারা জাতিই এখানকার প্রধান ব্যবসায়ী এবং সুবিস্তৃত লিবীয় মরুভূমির মধ্যে ইহারাই সৰ্ব্বাপেক্ষা ধনী। এক একজন সওদাগর এক হাজার দেড় হাজার উটের মালিক, উত্তর আফ্রিকায় সর্বত্র ইহাদের উট যাতায়াত করে।