বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আর্য্যজাতির সূক্ষ্ম শিল্প।
৯১

কিন্তু গ্রন্থারম্ভে, সাধারণতঃ সূক্ষ্ম শিল্পের উৎপত্তি বিষয়ক একটি প্রবন্ধ আছে। প্রবন্ধটি পাঠযোগ্য।

 তৎপরে গ্রন্থকার, অস্মদ্দেশীর শিল্পকার্য্যের প্রাচীনত্ব সপ্রমাণ করিতে চেষ্টা পাইয়াছেন। এ দেশের শিল্পকার্য্য যে প্রাচীন, তদ্বিষয়ে সংশয় নাই, কিন্তু শ্রীমাণি বাবু ইহার যেরূপ প্রাচীনতা প্রতিজ্ঞাত করিয়াছেন, সেরূপ প্রাচীনতা প্রমাণিত করিতে পারেন নাই। অশোকের পূর্ব্বকালিক স্থাপত্য বিদ্যার কোন চিহ্ণ এ দেশে যে বর্ত্তমান নাই, তাহা আপাততঃ স্বীকার করিতে হইবে।

 এই গ্রন্থে প্রাচীন আর্য্যগণের স্থাপত্য বিষয়ে যাহা লিখিত হইয়াছে, তাহাই ইহার উৎকৃষ্টাংশ, তাহা পাঠ করিয়া ভারতবর্ষীয় মাত্রেই প্রীতিলাভ করিবেন। প্রাচীন ভারতবর্ষীয়ের পৃথিবীর কোন জাতির অপেক্ষায় স্থাপত্য দক্ষতায় ন্যূন ছিলেন না। ভারতবর্ষীয়েরা, কাব্য, দর্শন, গণিত প্রভৃতি নানা বিদ্যায় প্রাধান্যলাভ করিয়া ছিলেন, কিন্তু স্থাপত্যে যেরূপ তাঁহাদিগের প্রাধান্য প্রতিবাদের অতীত,বোধ হয়, সেরূপ আর কোন বিদ্যায় নহে। ফর্গুসন সাহেবের যে কয়টি কথা শ্রীমাণি বাবু উদ্ধৃত করিয়াছেন, আমরাও তাহা পুনরুদ্ধৃত না করিয়া থাকিতে পারিলাম না। তিনি বলেন, যে—

 “ইহা সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন ও ভূমণ্ডলস্থ অন্যান্য জাতীর স্থাপত্য হইতে এত পৃথক্ যে, মিথ্যা ও ভ্রমাত্মক সংস্কারোৎপত্তির আশঙ্কা না করিয়া ইহার সহিত কোন জাতীয় স্থাপত্যের তুলনা করা যাইতে পারে না। * * * ইহার অঙ্গ প্রত্যঙ্গাদির বহ্বায়াস- সাধ্য-গঠননৈপুণ্য ভূমণ্ডলে আদ্বতীয়। ইহার অলঙ্কার প্রাচুর্য্যই আশ্চর্য্য ভাব উদ্দীপক এবং ইহার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গঠনগুলির ভিন্ন অংশ সকলের সৌন্দর্য্য ও মাধুরি এবং প্রধান