পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আর্য্যজাতির সূক্ষ্ম শিল্প।
৯৩

অতীব বিস্তৃতা ও মনোহারিণী। ইহার অভ্যন্তররস্থ স্তম্ভ সকল ইদানীন্তন কালের ন্যায় নহে—একটী হাঁড়ী বিপরীত ভাবে স্থাপিত করিয়া তাহাকে পদ্ম পাপড়ী দ্বারা বেষ্টন করিলে অত্রস্থ স্তম্ভ বোধিকার গঠন প্রণালী কথঞ্চিৎ বোধগম্য হইতে পারে, কিন্তু উল্টা হাঁড়ী বলিয়া আমাদিগের অনাদর করা উচিত নহে। কারণ, হাঁড়ীর গঠন কিছু বিশ্রী নহে, প্রত্যুতঃ শ্রীসম্পন্ন, তাহাতে ইহার মনোহর ভাস্কর্য; এবং সমুদয় স্তম্ভের বিভূষণসংযুক্ত গঠন দেখিলে হৃদয় যে অপূর্ব্ব ভাবে উচ্ছ্বাসিত হইবে তাহা বিচিত্র নহে। অপরন্তু, এই বোধিকা সকল উৎকল দেশীয় বিমান সকলের চূড়ার নিম্নে আম্লাশিলার (আমলকী ফলের ন্যায় বর্ত্তুলাকার ও পল বিশিষ্ট বলিয়া আম্লাশিলা নামে খ্যাত) আকারে খোদিত। এই গুহার প্রশস্ত গৃহ সকলের বহিঃপ্রকোষ্ঠে শোভনীয় কীলকশ্রেণী বা গরাদিয়া সকল কর্ত্তিত হইয়াছে। অপর, ইহার প্রবেশ দ্বার অতীব মনোহর গঠনে গঠিত—দ্বাদশটী সূক্ষ্ম স্তম্ভোপরি অপূর্ব্ব কারুকার্য্য খচিত ইহার দিবা গুম্বজ অদ্যাপিও সুশোভিত হইয়া রহিয়াছে। তৃতীয় চিত্রপটে ইন্দ্র সভায় যে চিত্র প্রদত্ত হইল তদ্দ্বারা পাঠক ইহার “সুচার রচনাচাতুর্য কিয়ৎপরিমাণে হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিবেন।

 “ইন্দ্রসভার অন্তঃপাতী তিনটী গুহা আছে। একটি ৬০ পাদ দীর্ঘ এবং ৪৮ পাদ প্রস্থ; ইহার ভিত্তিতে অনেক বুদ্ধমূর্ত্তি সকল খোদিত আছে; ইহার গর্ভস্থানে ব্যাঘ্রেশ্বরী ভবানী ও বুদ্ধদেবের মূর্ত্তি বিরাজমান। দ্বিতীয় গুহা-গর্ভের বাম ও দক্ষিণ পার্শ্বের ব্যাঘ্রেশ্বরী ভবানীর মূর্ত্তিদ্বয়ের মধ্যে পরশুরামের মূর্ত্তি খোদিত আছে। তৃতীর গুহার বহিঃপ্রকোষ্ঠে গজারূঢ়-পুরুষ এবং শার্দ্দূলপৃষ্ঠে উপবিষ্ঠা এক স্ত্রীর মূর্ত্তি থাকায়, ইহাদিগঞ্চে ইন্দ্র ও শচী অনুমানে ব্রাহ্মণেরা এই গুহাত্রয়ের নাম ইন্দ্রসভা