বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
বিবিধ সমালোচন।

রাখিয়াছেন। কিন্তু, ইহাও বক্তব্য যে, এই স্ত্রীমূর্ত্তিই প্রথম ও দ্বিতীয় গুহায় ব্যাঘ্রেশ্বরী ভবানী বলিয়া অভিহিত হইয়াছে।


 “‘দুমার লয়না’ অর্থাৎ বিবাহশালা নামে অপর এক সর্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ গুহা আছে। ইহা ১২৫ হস্ত দীর্ঘ, এবং ১০০ হস্ত প্রস্থ। এই গুহার গর্ভস্থানে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত আছে। ইহাতে অনেক দেব দেবীরও মূর্ত্তি সকল দেখিতে পাওয়া যায়, কিন্তু তন্মধ্যে হরপার্ব্বতীর বিবাহ ব্যাপার খোদিত থাকায় এই গুহার নাম বিবাহশালা হইয়াছে।

 “ইলোরার আর একটা প্রসিদ্ধ গুহার নাম ‘কৈলাস;’ ইহা ৩৬৭ হস্ত দীর্ঘ এক বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণ মধ্যে নির্ম্মিত। ইহার প্রবেশ দ্বারে এক চমৎকার নহবৎখানা আছে, এবং এতন্মধ্যে এত অধিক সংখ্যক দেবতাদিগের লীলাপ্রকাশক মূর্ত্তি সকল দৃষ্ট হয় যে, তাহার তুলনা পৃথিবীর আর কোথাও প্রাপ্ত হওয়া যায় না। প্রাঙ্গণের তিন দিকে স্তম্ভযুক্ত অলিন্দ এবং তাহার ভিত্তিতে বহুল দেবাদির মূর্ত্তি সকল খোদিত আছে। গোপুরের পশ্চাতে কৈলাসের প্রাসাদ, ইহা পাঁচটা মন্দিরে সম্পূর্ণ। মধ্যস্থ মন্দির সর্ব্বাপেক্ষা উচ্চ; ইহা 88 হস্ত দীর্ঘ, এবং ৩৭ হস্ত প্রস্থ। এই মন্দির সকল খোদিত গজ ও শার্দ্দূলযুক্ত উপানোপরি স্থাপিত। এই গুহার পশ্চাদ্ভাগে একটা চাঁদনীর মধ্যে এত দেব দেবীর মূর্ত্তি আছে যে, ইহাকে হিন্দুদেবতাদিগের প্রদর্শন গৃহ বলিয়া প্রতীয়মান হয়।

 এই গুহার সন্নিকটে অনেক গুহা দেখিতে পাওয়া যায়, এবং তৎসমুদয়ই পর্ব্বত খোদিত হইয়া প্রস্তুত হ‍ইয়াছে। স্তম্ভ, ছাদ, প্রাচীর, অলিন্দ, গুম্বজ এবং অসংখ্য দেব দেবীর মূর্ত্তি—এ সকলই একখণ্ড প্রস্তর, ইহার কোন অংশ গ্রথিত নহে।