বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আর্য্যজাতির সূক্ষ্ম শিল্প।
৯৭

ভাস্কর্য্যের ইহা একটী প্রধান ধর্ম্ম—সর্ব্বত্রেই ইহার গৌরবের কথা শ্রবণগোচর হয়। পাঠক! বোধ করি আপনি অবগত আছেন যে এইরূপ সুখস্পর্শ ও কোমলগঠন এবং মনোহর অঙ্গ বিশ্বাস প্রভৃতি শ্রেষ্ঠ ভাস্কর্যের লক্ষণ। অতএব আপনি শুনিলে আনন্দিত হইবেন যে আর্য্যগণ এই সকল উৎকষ্ট লক্ষণ দ্বারা অলঙ্কৃত করিয়া অধিকাংশ প্রতিমূর্ত্তাদি বিশেষ নৈপুণ্য সহকারে নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন! এই জাতীয় শিল্পের অপর একটী উৎকৃষ্ট ধর্ম্ম “প্রয়োজम সিদ্ধি” অর্থাৎ, শিল্পী পুত্তলিকাদিগকে যে যে কার্য্যে নিয়োজিত করিবার কল্পনা করিয়াছেন দৃষ্টিমাত্রে দর্শকের মনে সেই সেই উদ্দেশ্য-সাধন ভাবের উপলব্ধি হয়। আমি আহ্লাদের সহিত ব্যক্ত করিতেছি যে অনেক বিখ্যাত ইউরোপীয় পণ্ডিত অস্মদ্দেশীয় পৌরাণিক ভাস্কর্য্যে এই মহদ গুণের অস্তিত্ব স্বীকার করিয়াছেন!"

 পরে মথুরার বিখ্যাত পুত্তলিকা সকলের বিস্তারিত বর্ণনা করিয়াছেন। অনেকে উহা গ্রীক শিল্পিনির্ম্মিত সাইলেনসের প্রতিমূর্ত্তি বিবেচনা করেন। শ্রীমাণি বাবু এ কথার প্রতিবাদ করিয়াছেন।[১] তিনি বলেন যে উহা হিন্দু শিল্পকরের খোদিত কৃষ্ণলীলা বর্ণন। সাইলেনস নহে— বলরাম। যদি এই ভাস্কর্য্য হিন্দু প্রণীত হয়, তবে সে হিন্দু গ্রীকদিগের নিকট শিল্প শিক্ষা


  1. গ্রীক্ জাতিরা মথুরা পর্য্যন্ত আসিয়াছিল, একথা অসম্ভব বলিয়া শ্রীমাণি মহাশয় যে আপত্তি করিয়াছেন, তাহা অকিঞ্চিৎকর। হণ্টর সাহেব প্রমাণ করিয়াছেন, যে গ্রীক জাতীয়েরা মধ্য ভারতবর্ষের নানা স্থানে বাস করিত। মহাভাষ্যের বিখ্যাত উদাহরণ অরুণৎ যবনো সাকেতম,” শ্রীমাণি মহাশয় কি বিস্মৃত হইয়াছেন? যখন গ্রীকেরা অযোধ্যা অবরোধ করিয়াছিল তখন মথুরার না আসিবে কেন?