পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
অতিবেগুনী রশ্মি
অতুলকৃষ্ণ মিত্র

প্রবেশ করিলে দর্শনের অনুভূতি জন্মায় তাহাকে দৃশ্যমান বর্ণালী (visible spectrum) বলে। ইহার একপ্রান্তে বেগুনী আলল, তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০০ অ্যাংস্ট্রম ( এক অ্যাংস্ট্রম =১০-৮ সেন্টিমিটার) অন্য প্রান্তে লাল আলাে, তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫০; অ্যাংস্ট্রম। বর্ণালীকে যদি একটি ফোটোগ্রাফিক প্লেটে ফেলিয়া ছবি তােলা হয় তবে লক্ষ্য করা যাইবে বর্ণালীর যে অংশে কোনও আলো চোখে দেখা যায় নাই সেখানেও প্লেটটি কালো হইয়াছে। ইহাতে বেগুনী হইতে লাল এই সীমার বাহিরে অদৃশ্য আলােকরশ্মির অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়। বর্ণালীতে বেগুনী আলাের বাহিরে যে অদৃশ্য আলো তাহাকেই অতিবেগুনী রশ্মি বলা হয়। ইহার তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০০ অ্যাংস্ট্রম অপেক্ষা কম। অতিবেগুনী রশ্মি সহজেই কাচ, বাতাস প্রভৃতি দ্বারা শােষিত হয়। সূর্যের আলােতে যে পরিমাণ অতিবেগুনী রশ্মি আছে তাহার বেশির ভাগ বাতাস শােষণ করে। ৩০০০ অ্যাংস্ট্রমের ছােট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো আমাদের কাছে পৌঁছায় না। সর্বপ্রকার আলােকউংস হইতেই কমবেশি অতিবেগুনী রশ্মি পাওয়া যায়॥ বেশি পরিমাণে এই আলো সৃষ্টির জন্য মার্কারি ভোের ল্যাম্প ব্যবহার করা হয়। সাধারণ কাচের পরিবর্তে এই ল্যাম্পে কোয়ার্টজ, বা সিলিকা ব্যবহার করিলে শােষণের পরিমাণ কম হয়। কোনও কোনও বস্তু (যেমন কুইনাইনের দ্রবণ) অতিবেগুনী রশ্মি শােষণ করিয়া দৃশ্য আলােক (visible light) বিকিরণ করে। ইহাকে ফুরেসেন্স বলা হয়। ফ্লরেসেন্ট টিউবে অতিবেগুনী রশ্মি শােষণ করিয়া দৃশ্য আলাে সৃষ্টির জন্য টিউবের গায়ে ফুরেসেন্ট পাউডার লাগানাে থাকে। অতিবেগুনী রশ্মি চোখের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এইজন্য ওয়েলডিং প্রভৃতি কাজে চোখে রঙিন চশমা ব্যবহার করিতে হয়। অতিবেগুনী রশ্মি জীবাণুনাশক। ইহার দ্বারা জল জীবাণুমুক্ত করা হয়। এই রশ্মি চামড়ার উপর বাদামী রঙ সৃষ্টি করে। এইজন্য সুর্যের আলােয় দেহের রঙ পরিবর্তিত হয়। অনেক সময় ঘা শুকাইবার জন্য অতিবেগুনী রশ্মি ব্যবহার করা হয়। অধিক পরিমাণে ও অত্যন্ত ছােট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনী রশ্মি দেহের পক্ষে ক্ষতিকর। চর্বিজাতীয় বস্তুর উপর অতিবেগুনী রশ্মি প্রয়ােগ করিলে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়। এইজন্য তৈলাক্ত দেহে সূর্যস্নান উপকারী। অতিবেগুনী রশ্মিতে ফুরেসে লক্ষ্য করিয়া অনেক সময় খাদ্যে ভেজাল ধরা যায় এবং আসল ও নকল পাথরের প্রভেদ নির্ণয় করা হয়। আলোেক।

শ্যামল সেনগুপ্ত

অতীশদীপংকর জ্ঞান তিব্বতী পরম্পরানুসারে অতীশ ( ১১শ শতাব্দী) বিক্রমণীপুররাজ কল্যাণশ্রীর পুত্র। বিক্রমণীপুরকে সাধারণতঃ পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুর রাজ্য বলিয়া মনে করা হয়। অতীশ প্রথমে মাতার নিকট এবং পরে ভারতের বিভিন্ন বিদ্যাকেন্দ্রে, সুবর্ণদ্বীপে এবং সিংহলে | অধ্যয়ন সমাপনান্তে বিক্রমশীলামহাবিহারে একান্নজন আচার্য এবং একশত আটটি মন্দিরের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। তিব্বতের রাজা জ্ঞানপ্রভের ঐকান্তিক আগ্রহে বৌদ্ধধর্মপ্রচারার্থ তিনি ১০ ৪০ খ্রীষ্টাব্দে তিব্বত যাত্রা করেন। তাঁহার চেষ্টায় ভােট দেশে আদিম ধর্ম পরিত্যক্ত এবং বৌদ্ধধর্মাচার পরিগৃহীত হয়। বৌদ্ধ ক-দম্ (পরবর্তী নাম গে-লুক) সম্প্রদায় অতীশই প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অনেক সংস্কৃত গ্রন্থ তােট ভাষায় অনুবাদ করেন এবং স্বয়ং রত্নকরণ্ডোঘাট’, ‘বােধিপাঠপ্রদীপ’, ‘বােধিপাঠপ্রদীপপঞ্জিকা প্রভৃতি গ্রন্থ এবং সম্রাট নয়পালের উদ্দেশ্যে বিমলতুলেখ নামক পত্র রচনা করেন। তাহার মূল সংস্কৃত রচনাগুলি কালক্রমে বিলুপ্ত হইয়াছে। তিব্বতী ভাষায় উহাদের অনুবাদ পাওয়া যায়। অতীশ তিব্বতে বুদ্ধের অবতাররূপে পূজিত হন। লাসার নিকটে তাঁহার সমাধিস্থান তিব্বতের অতি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র। ভারতে অবস্থানকালে অতীশ সম্রাট নয়পাল এবং পশ্চিমদেশীয় কর্ণ ( কনােজ?) -রাজের বিবাদে মধ্যস্থতা করিয়া দেশে শান্তিস্থাপন করিয়াছিলেন।

অনন্তলাল ঠাকুর

অতুলকৃষ্ণ গোস্বামী কলিকাতার শিমুলিয়ানিবাসী সুপ্রসিদ্ধ বৈষ্ণব পণ্ডিত। নিত্যানন্দপ্রভুর বংশে ইহার জন্ম। ১৮৯৮ খ্ৰীষ্টাব্দে বলাইচাঁদ গােম্বামীর সহযােগিতায় ইনি শ্রীরূপের লঘু-ভাগবতামৃতের একটি সটীক সানুবাদ সংস্করণ প্রকাশ করেন। তাহার পর শ্রীচৈতন্যভাগবতের বহু পুথি মিলাইয়া একটি টীকা-টিপ্পনীযুক্ত প্রামাণিক সংস্করণও প্রকাশ করেন। বৈষ্ণব-গ্রন্থ বিদ্বজ্জনের গবেষণার উপযােগী করিয়া সম্পাদনা করিবার কার্যে ইনিই পথপ্রদর্শক। রাসপঞ্চাধ্যায়ের পদ্যানুবাদ করিয়া ইনি কবিখ্যাতি লাভ করিয়াছিলেন। ইহার রচিত ঈশ্বর পুরীর জীবনী ও ‘ভক্তের জয়’ গ্রন্থ বৈষ্ণবসমাজে যথেষ্ট আদর পাইয়াছিল।

বিমানবিহারী মজুমদার
অতুলকৃষ্ণ মিত্র (১৮৫৭-১৯১২ খ্রী) অতুলকৃষ্ণ কোন্নগরের বিখ্যাত মিত্রবংশীয় রাজকৃষ্ণ মিত্রের পুত্র।
৩৯