বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
কারাকাহিনী।

কাফ্রিদের সঙ্গে একত্র আমাদিগকে লইয়া গেল। খুব শক্ত, তা কোদাল দিয়া খুঁড়িতে হইবে। কাজটা ছিল বেশ কঠিন, রৌদ্রও বেশ প্রখর। ছোট জেল হইতে জায়গাটা প্রায় দেড় মাইল দূরে। ভারতবাসীরা সকলে বেশ স্ফুর্ত্তির সঙ্গে চট্ করিয়া কা আর করিয়া দিলেন, কিন্তু অভ্যাস নাই—তাই সকলেই খুব ক্লান্ত হইয়া পড়িলেন। বাবু তালেবন্ত সিংহের পুত্র রবিকৃষ্ণও এই দলে ছিল। তাহাকে কাজ করিতে দেখিয়া আমার মন ব্যথিত হইয়া উঠিতেছিল, কিন্তু তাহার পরিশ্রম দেখিয়া আমি আনন্দও পাইতেছিলাম। দিন, যেমন বাড়িতে লাগিল, কাজের ভাযরও তেমনই শক্ত মনে হইতে লাগিল। ওয়ার্ভার ছিল একটু কড়া মেজাজের; সে সর্ব্বদা “চলাও, চলাও” চীৎকার করিতেছিল, তাহাতে ভারতবাসীরা একটু ভয় পাইয়া গেলেন। অনেককে ত আমি কঁদিতে দেখিলাম। একজনের পা ফুলিয়া উঠিয়াছে দেখিয়া আমায় বুক ফাটিয়া যাইতে লাগিল। তবু আমি সকলকেই বলিতেছিলাম—সকলেই এমন মন দিন কাজ কর যাহাতে দারোগার কথা বলিবার অবসরই না হয়। আমি নিজেও ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম। হাতে বড় বড় ফোস্কা পড়িয়া গেল, সেগুলি ফাটিয়া জল পড়তে লাগিল। ঝুঁকিতে কষ্ট হইতেছিল, কোদালও ভারি বোধ হইতে লাগিল। আমি ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করিলাম, আমার মুখ রক্ষা কর; আমাকে এমন ৰল দাও কেন আমি অসমর্থ না হইয়া বারাবর কাজ করিয়া যাইতে পারি। আমি সর্ব্বদাই তাঁহার উপর বিশ্বাস রাখিয়া কাজ করিতাম। দারোগা আমাকে তাগাদা করিতে লাগিল। আমি ক্লান্ত হইলে সে কাজ করিতে বলিত। আমি তাহাকে বলিলাম, কিছু বলিবার দরকার নাই, আমি প্রাণপণে কাজ করিবার লোক ফাঁকিবাজ নহি। যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ প্রাণপণ খাটিব। এই সময়ে দেখিলাম, মিঃ জিনাভাই দেশাই মুর্চ্ছিত হইয়া পড়িয়া গেলেন। জায়গা