বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কারাকাহিনী।
৫৩

দিন ত’ প্রায় শতাবধি ভারতবাসী তাঁহাদের নেটালের বন্ধুদের সহিত দেখা করিতে আসিয়াছিলেন, সেদিন টেলিগ্রাফের সংখ্যা দেখে কে?

বিবিধ।

 জেলে সাধারণতঃ খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকা যায়; এরূপ ব্যবস্থা না থাকিলে রোগ সহজেই সংক্রামক হইয়া উঠিতে পারিত। তথাপি অনেক বিষয়ে অপরিচ্ছন্ন ভাব দেখা যাইত। গায়ে দিবার কম্বল প্রায়ই অদল বদল হইত, এমন কি, কাফ্রিদের গায়ে দেওয়া খুব ময়লা কম্বলও মাঝে মাঝে ভারতবাসিদের ভাগ্যে জুটিত। সেগুলি প্রায়ই থাকিত উকুণে ভরা, দুর্গন্ধও বাহির হইত খুব। রৌদ্র উঠিলে সেগুলি প্রায়ই আধঘণ্টা ধরিয়া রৌদ্রে রাখিতে হইবে, ইহাই ছিল নিয়ম। কিন্তু এ নিয়ম কখনও পালন করা হইত কি না সন্দেহ। যারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকিতে ভালবাসে, তাহাদের পক্ষে এই গোলমাল নিতান্ত সামান্য কথা নয়। পরণের কাপড়েরও অনেক সময়, এইরূপ দশা হইত। কয়েদীদের মুক্তির সময় তাহাদের পরিত্যক্ত কাপড় প্রায়ই ধোওয়া হইত না, সেই ময়লা কাপড়ই নূতন কয়েদীকে দেওয়া হইত। ইহা বড় ঘৃণার কথা।

 জেলে কয়েদীদিগকে যেমন তেমন ভাবে রাখা হইত। জোহান্সবর্গে স্থান ছিল দুই শত কয়েদীর, কিন্তু ঠাসা হইয়াছিল চারিশত। প্রত্যেক কুঠুরীতে যত লোক রাখার নিয়ম, তাহার দ্বিগুণ কয়েদী প্রায়ই রাখা হইত, সময় সময় তাহারা প্রয়োজনমত কম্বলও পাইত না। এ কষ্ট নিতান্ত সামান্য নহে। কিন্তু প্রকৃতির বিধান এমনই যে নির্দ্দোষ ব্যক্তি, যে অবস্থায়ই পড়ুক না, আত্মরক্ষা করিবার ক্ষমতা তাহার থাকিয়া যায়। ভারতীয় কয়েদীদের অবস্থাও তদ্রুপ হইয়াছিল। এমন বিপদেও তাঁহারা