বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
কারাকাহিনী।

ভারতবাসীদের এরূপ নীচতা এপর্যন্ত দেখা যায় নাই। কিন্তু যতদিন গভর্ণমেণ্টের আইনে কাফ্রিদের সহিত ভারতবাসীকে একসঙ্গে গণনা করিবার ব্যবস্থা, ততদিন এই অবস্থায় বিপদের সম্ভাবনা আছে।

জেলে স্বাস্থ্য

 জেলে অধিকাংশ কয়েদীরই বিশেষ কোন রোগ ছিল না। মিঃ মাওজীর কথা প্রথমে বলিয়াছি। মিঃ রাজু নামে একজন তামিল (মান্দ্রাজী) আমাদের মধ্যে ছিলেন। একবার তাঁহার খুব রক্তামাশয় হয় —তিনি অজ্ঞান হইয়া পড়েন। তাহার কারণ তাঁহার মুখে শোনা গেল, প্রত্যহ ৩০ কাপ্ (পেয়ালা) চা পান করা তাঁহার অভ্যাস ছিল। জেলে আর চা কোথায়, তাই তাঁহার অসুখ বাড়িয়া উঠিল। চা পাওয়ার চেষ্টাও তিনি কৰিলেন, কিন্তু পাওয়া গেল না। তাহার বদলে ঔষধ পাওয়া গেল, এবং জেলের ডাক্তার তাঁহাকে ২ পাউণ্ড দুধ ও রুটি দিবার হুকুম দিলেন। ইহাতে, তিনি সুস্থ হইয়া উঠিলেন। মিঃ রাধাকৃষ্ণ তালেবন্ত সিংহের শরীর শেষ পর্যন্ত খারাপই রহিল। মিঃ কাজী ও মিঃ বাওজীব্ শেষ পর্যন্ত রোগে ভুগিলেন। মিঃ রতনথী সোঢ়া চাতুর্ম্মাস্য ব্রত পালন করিতেছিলেন ও একাহারী ছিলেন, ভাল খাবার না পাওয়ায় তিনি ক্ষুধিতই থাকিতেন। কিন্তু তিনিও শেষাশেষি ভাল হইয়া উঠিলেন। তাহা ছাড়া প্রত্যেককেই অল্প বিস্তর রোগে ভুগিতে হইয়াছিল। কিন্তু দেখিলাম, ভারতবাসীরা কেহই রোগে আতুর হন নাই। দেশের জন্য তাঁহারা সর্ব্বদা সকল কষ্টই সহ্য করিতে প্রস্তুত ছিলেন।