বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মাণ্ডূক্যোপনিষদ্‌ - প্রথম খণ্ড (রামদয়াল দেবশর্ম্মা).pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণ্ডুকোপনিষদ। অন্তঃপ্রজ্ঞ বহিঃপ্রজ্ঞ ইত্যাদি যে অজ্ঞানের আরোপ হয় সেই অজ্ঞান সরাইতে পারিলেই আত্মজ্ঞান হইবে। আমি বাহিরের জগৎ জানি আমি ভিতরের বাসনাময় সূক্ষ জগৎ জানি এই সমস্ত অজ্ঞানের বিনাশ হওয়া ভিন্ন আত্মজ্ঞান বা আত্মভাবে স্থিতি হইবে না। শুধু অজ্ঞান নাশ হইলেই আত্মজ্ঞান হয়। আর অজ্ঞানের রাজ্য কতদূর তাহাত দেখিতেছ? জাগ্রৎ স্থান স্বপ্নস্থান স্থযুপ্তি স্থান, সৰ্ব্বজ্ঞ এই সমস্তই অজ্ঞানের রাজ্য। আত্ম-স্বরূপটি যাহা তাহাই জ্ঞান রাজ্য। সেখানে আর কিছুই নাই। শুদ্ধ নিৰ্ম্মল জ্ঞান। মায়ার কোন স্পন্দন পর্য্যন্ত সেখানে নাই । এই অজ্ঞান নাশই সাধন । মুমুক্ষু। অজ্ঞানের নাশ হইলেই কি জ্ঞান লাভ হয় ? জ্ঞানের সম্বন্ধে অন্য কোন প্রমাণ কি আবশ্যক করে না ? ' শ্রীতি। না, অন্য কোন প্রমাণের আর আবশ্যক হয় না। অন্ধকারে আচ্ছন্ন একটি ঘট রহিয়াছে। অন্ধকারের নাশ হইলেই ঘটের জ্ঞান হয় । মুমুক্ষু। কিরূপে তাহা হইবে ? ঘটকে অন্য কোন বস্তু—অর্থাৎ কমণ্ডলুও ত বোধ হইতে পারে ? শ্রুতি। ঘটকে কমণ্ডলু বোধ হয় না। তুমি নাম দিতে ভুল করিতে পার কিন্তু গোলাপকে গোলাপ বল বা অন্য নাম দিয়া ডাক কথা কিন্তু একই। অন্ধকারস্থ ঘটকে জানিতে হইলে দীপের সাহায্যে অন্ধকার নাশ ভিন্ন অন্য প্রমাণের আবশ্যকতা নাই। মনে কর অন্ধকার নাশকে ছেদন ক্রিয় বলা হইতেছে। ছেদন ব্যাপারটা হইতেছে ছেদ্য বস্তুর অবয়ব সম্বন্ধ ধ্বংস করা। জ্ঞানটি সৰ্ব্বব্যাপী পদার্থ। ইহার অবয়ব স্বরূপে উঠিয়াছে এই অজ্ঞান এবং অজ্ঞান প্রসূত এই পরিদৃশ্যমান জগৎ। অবয়ব সম্বন্ধ ধ্বংস করাটিই যেমন ছেদন ব্যাপার সেইরূপ অজ্ঞানটি ধ্বংস করাই আত্মভাবে, জ্ঞান ভাবে পূর্ণভাবে স্থিতির ব্যাপার। জ্ঞানে স্থিতির জন্য অজ্ঞান নিবৃত্তি ভিন্ন অন্য কোন ব্যাপারের আবশ্যকতা নাই।