বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মাণ্ডূক্যোপনিষদ্‌ - প্রথম খণ্ড (রামদয়াল দেবশর্ম্মা).pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

1 و ] হীন এ সব উক্তি আত্মার নহে-এ সব উক্তি অজ্ঞানীর। আমি বৃদ্ধ হইতেছি, আমার জরা আসিতেছে, আমায় মরিতে হইবে, আমার আবার জন্ম হইবে এ সমস্ত কথা আত্মা সম্বন্ধে প্রয়োগ করা যায় না । কারণ আত্মা “ন জায়তে মিয়তে বা কদাচিং” আত্ম “ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে” লোকে যে বলে আমি মরিলাম, আমি দুঃখী, লামি জরাগ্রস্ত এ সমস্তই অজ্ঞানীর উক্তি মাত্র। তার পরে আত্মার যেমন জনম মরণ নাই সেইরূপ আত্মার ক্ষুধা পিপাসাও নাই, আত্মার শোক দুঃখও নাই অর্থাৎ জরা, মরণ, ক্ষুধা, পিপাস, শোক, মোহ এই যে বড়োৰ্ম্মিতে জীব লুটপুট খাইতেছে ইহার কোন কিছুই আত্মাতে নাই। ষাড়াৰ্ম্মি কেবল অজ্ঞানের কল্পনা মাত্র । তবেষ্ট দেখ আত্মা সদা পূর্ণ সদা শান্ত, সদা আনন্দময়। আত্মাতে কোন অজ্ঞান নাই তিনি জ্ঞানস্বরূপ । আত্মাতে কোন অভাব নাই তিনি সদাপূর্ণ এবং তিনি মাত্রই নিত্য। এই সৎ চিৎ আনন্দ স্বরূপ আত্মা অতি রমণায় দর্শন । আর জীব যখন জানিতে পারে যে সে আত্মা, সে চেতন, সে জড় নহে—তখন বল জীবের আর কোন অভাব থাকিবে, কোন ছট পটানি থাকিবে, কোন ভয় থাকিবে ? তুমি যতক্ষণ ক্ষুদ্র হইয়া থাক ততক্ষণই তোমার অভাব থাকিবেই। আত্মাই পূর্ণ। সেই জন্য আত্মভাবে না থাকা পর্যন্ত তোমার অভাব ঘুচিবে না। তুমি যদি আত্মাকে জানিতে পার, আত্মাকে দেখিতে পার, জানিয়া দেখিয়া আত্মভাবে স্থিতিলাভ করিতে পার—তবে তুমি চিরতরে জরা, মরণ, শোক, মোহ, আধি, ব্যাধি সর্বপ্রকার দুঃখের হাত হইতে এড়াইতে পারিবে । আহা-আত্মার কথা শুনিতে শুনিতে আমি কিরূপ হইয় যাইতেছি । এখন বল এই আত্মাকে দর্শন করিব কিরূপে ? এখন তোমার দ্বিতীয় প্রশ্ন উঠিল। আত্মদর্শন এত কঠিন কিরূপে ? শ্রবণ কর। দর্শন হয় চক্ষু দ্বারা । কিন্তু দর্শন করে কে ? চেতন না থাকিলে চক্ষু ত দর্শন করিতে পারে না। তবে চৈতন্যই দ্রষ্টা।