বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মাণ্ডূক্যোপনিষদ্‌ - প্রথম খণ্ড (রামদয়াল দেবশর্ম্মা).pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| ૨ | প্রার্থনাতে যে তিনি বাধিত হইবেন এমন আশ্বাস কি সাহসে করিতে পারি?” “কেহ যদ্যপি অপরিমিত ভোজন করে আর তুন্নিমিত্তে তাহার জঠরে বেদন উপস্থিত হয় তবে ঈশ্বরের নিয়ম অনুযায়ী ঔষধ সেবন না করিয়া কেবল আরোগ্য হইবার প্রার্থনা করিলে তিনি কি সে প্রার্থনা গ্রাহ করিবেন ?” প্রথম দৃষ্টিতে মনে হয় যুক্তি ঠিক। আমি যেমন কৰ্ম্ম করিব সেইরূপ ফল পাইব ইহা ঈশ্বরের নিয়ম। অশুভ কৰ্ম্ম করিলাম, করিয়া ঈশ্বরের নিকট শুভ কামন করলাম, তাহার নিকট ক্ষমা চাহিলাম–এ প্রার্থনা তিনি শুনিবেন কেন ? এই যুক্তিতে পূর্বোক্ত ব্যক্তিগণ বলেন প্রার্থনার আবশ্যকতা নাই । .** প্রার্থনার আবশ্যকতা আদে নাই এ কথাটি যুক্তিযুক্ত নহে। শুভ কৰ্ম্ম বা অশুভ কৰ্ম্ম যে যাহাই করুক না কেন—কৰ্ম্মনিষ্পত্তি জন্য শক্তি প্রার্থনা করিবার অবসর সর্ব কৰ্ম্মকালেই আছে। - শ্রুতিতে এই জন্য প্রার্থন দেখিতে পাওয়া যায় । পরমেশ্বর আপন নিয়ম লঙ্ঘন করিতে পারেন না এই যে মতটি প্রচলিত হইয়া গিয়াছে এটিও অজ্ঞানীর উক্তি মাত্র। শ্রীভগবান সৰ্ব্বশক্তিমান-তিনি ত আর জড়বস্তু নহেন যে, নিয়ম অতিক্রম করিবার শক্তি তাহার থাকিবে না ? যদি একথা ঠিক হইত তবে অগ্নি সর্বদাই দগ্ধ করিত, পৰ্ব্বত প্রস্তর সর্বদাই জলে ডুবিত। কিন্তু আমরা ত ইহার বিপরীত অনেকসময়ে দেখি । শ্ৰীভগবানের ইচ্ছায় ভক্ত-প্রস্লাদকে অগ্নি দগ্ধ করেন নাই, সেতুবন্ধকালে জলেও প্রস্তর ভাসিয়াছিল, তপস্যার বলে চন্দ্র সূর্ঘ্যের গতিও স্থগিত হইত ; আনিম, লঘিম, মহিমা, প্রাকাম্য, প্রাপ্তি, ঈশিত্ব, বশিষ্ট্র, কামবসায়িত্বাদি অষ্টসিদ্ধি, দিব্যদৃষ্টি প্রভৃতি অলৌকিক ব্যাপার, পরকায় প্রবেশাদি কাৰ্য্য, মৃত্তিকানিম্নে শ্বাস প্রশ্বাস রোধ করিয়া অবস্থান—এই সমস্তই হইয়া থাকে। ভক্তের জন্য শ্ৰীভগবান আপন প্রাকৃতিক নিয়ম পরিবর্তন করিয়া থাকেন ইহা সৰ্বকালেই দেখা যায়।