বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in Գեյ- মানিক রচনাসমগ্র কিনা এখন তাহাব লজ্জা আসিযাছে। চোরের মতো মামা তাই অস্বস্তিতে উশখুশ করে। আহা বুড়া মানুষ, সারাটা জীবন ঘূবিদ্যা ঘূরিয়া কাটাইয়া আসিয়া সংসারের পাকা, উপার্জনে অভ্যস্ত লোকগুলিব সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কেন পারিয়া উঠিবে ? টাকা তো পথে ছড়ানো নাই। ঘরে ঘবে যুবক বেকাব হাহাকার কবিতেছে। যাট বছরেব ঘরছাড়া বিবাগি এতগুলো প্রাণীর জীবিকা অর্জনের পথ খুজিয়া পাইবে কোথায় ? শ্যামা বডো মমতা বোধ করে। বলে, অত ভেবো না মামা, ভগবান যাহোক একটা উপায় কববেন। ভগবান ? মামাব বোধ হয় ভগবানের কথা মনে ছিল না। ভগবান যে মানুষেব যাহােক একটা উপায় করেন এও বোধ হয় এতদিন তাহাব খেযাল থাকে নাই। শ্যামা মনে পড়াইয়া দিলে মামা বোধ হয় নিশিচন্ত মনেই শ্যামা ও তাহার চারটি সন্তানকে ভগবানেব। হাতে সমর্পণ করিয়া ভান্দ্রেব তিন তারিখে নিরুদ্দেশ হইয়া গেল। যাওয়ার আগে শুধু বলিয়া গেল, কিছু মনে করিস নে শ্যামা, তোর সেই হাজার টাকাটা খরচ করে ফেলেছি,-শ দেড়েক মোটে আছে, নে। বুডো মামাকে শাপ দিসনে মা, একটি টাকা মোটে আমি সঙ্গে নিলাম। শাপ শ্যামা দেয নাই, পাগলের মতো কী যেন সব বলিয়াছিল। কথাগুলি মিষ্টি নয, কোনো ভাগনিই সাধারণত মামাকে ও সব কথা বলে না। ক্যাম্বিসের ব্যাগটি হাতে করিয়া কম্বলের গুটিানো বিছানাটি বগলে করিয়া মামা যখন চলিয়া গেল, শ্যামা তখনও পাগলের মতো কী সব যেন বলিতেছে। সাত পবেব বছর শবৎকালে,--শামা প্রথম সন্তানের জননী হওয়াল সময পুথিবীতে শবৎকালটা যেমন ছিল এখনও তেমনি থাকাব মতো আশ্চর্য শরৎকাল,--ছেলেমেযেদেব সঙ্গে লইয়া শ্যামা বনগা গেল । বলিল, ঠাকুরবি, আমার আবে তো কোথাও আশ্রয় নেই, খেতে না পেযে আমার ছেলেমেসে মরে যাবে, ওদের তুমি দুটি দুটি খেতে দাও, আমি তোমার বাড়ি দাসী হয়ে থাকব । মন্দা মুখভার করিলা বলিল, এসেছ থাকে, ও সব বােলো না বউ। তেষামুদে কথা আমি ভালোবাসিনে। শ্যামা বনগাঁয়ে বহিয়া গেল। শ্যামার গত বছরের ইতিহাস বিস্তারিত লিখিলে সুখপাঠ্য হইত না বলিযা ডিঙাইযা আসিয়াছিা! এ তো দারিদ্রোব কাহিনি না। শ্যামা যে একবার দুদিন উপবাস করিয়াছিল। সে কথা লিখিয়া কী!! হইবে ? ব্রতপুজা কবিয়া কত জননী আমন অনেক উপবাস কলে, শ্যামা খাদ্যোব অভাবে কবিযাছিল বলিয়া তো উপবাসেব সঙ্গে উপবাসের পার্থক্য জন্মিয়া যাইবে না? শ্যামার গহনাগুলি গিযাছে, বিবাহের সময় মামা শ্যামাকে প্রায় হাজাব টাকার গহনাই দিয়াছিল, নিজেব প্রেস বিকিয়া করি যা শীতলেব দীর্ঘকাল বেকার বসিযা থাকার সময় চুড়ি হার বালা আল নাক ও কানোবা দুটি একটি ছুটকে গহনা ছাড়া বাকি সব গিয়াছিল, কমল প্রেসের চাকবির সময় দোতলায় ঘব তুলিবার ঝোকে শ্যাম টাকা জমাইযাছে, হাঙরমুখে পুরানো প্যাটার্গের বালা ভাঙিয়া আব্ব একটু ভারী তারেব বালা গড়ানাে ছাড়া নতুন কোনো গহনা সে কখনও করে নাই। এক বছরেই তাই ঘরের বিক্রয়যোগ্য আসবাবের সঙ্গে শ্যামার গহনাগুলিও গিয়াছে। থাকিবার মধ্যে আছে একটি আংটি আর দুহাতে দুগাছি চুড়ি। বিধানকে বড়োলোকের স্কুল হইতে ছাড়াইয়া কাশীপুরের সাধারণ স্কুলটিতে ভর্তি কবিয়া দিয়াছিল, বিধান হাঁটিয়াই স্কুলে যাইত। ধোপার সঙ্গে শ্যামা কোনো সম্পর্ক রাখিত না, বাড়িতে সিদ্ধ করিয়া কাপড়জামা সাফ করিত,-কাপড়জামা দুই সে কিনিত কমদামি মোটা, টিকিত অনেকদিন। খোকার জন্য দুধ কিনিত এক পোয়া, দুবছর বয়সের আগেই খোকা দিবি| ভাত খাইতে শিখিয়াছিল,