পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৪৬
মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

করে। মহারাজের বাটতে অঙ্গীকার-পত্রপ্রদানে স্বীকার করিয়া, বুলাকীদাস পান্ধী চড়িয়া, বড়বাজারে হাজারীমলের বাটতে তাহার নিজ বাসায় গমন করে এবং মহম্মদ কমলকে তাহার নিকট পাঠাইতে বলিয়া যায়। বুলাকীদাস জয়দেবকে সঙ্গে করিয়া লইয়া যায়, পরে তাহার বাসায় অঙ্গীকার-পত্র লিখিত ও স্বাক্ষরিত হয়। তথায় অঙ্গীকার-পত্রের লেখক, বুলাকীদাস ও জয়দেব ব্যতীত চৈতন্যনাথ, লালা ডোমন সিংহ এবং ইয়ার মহম্মদ এই কয়েক ব্যক্তি উপস্থিত ছিল।

  জয়দেব চোবের সাক্ষ্যের মধ্যস্থলে মোহনদাস, কৃষ্ণজীবন, মোহনপ্রসাদ প্রভৃতিকে আহবান করিয়া কয়েকটি দলিলপত্রের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়; আমরা পরে সে সমস্ত বিষয়ের কথা উল্লেখ করিতেছি।

 লাল ডোমনসিংহ সাক্ষ্য দেয় যে, সে নিজ চক্ষে বুলাকীদাসকে মহারাজের নামে অঙ্গীকার-পত্র লিখিয়া দিতে দেখিয়াছে। ৪৬ হইতে ৪৮ হাজার টাকার কথা লেখা হয়। কমলউদ্দীন আলি খা ঁমহম্মদ কমল নহে; সে আর এক ব্যক্তি। লাল৷ ডোমনসিংহ ফারসী জানায় কতকগুলি কাগজ দেখিয়া বুলাকীদাসের মোহর প্রমাণ করে।

 চৈতন্যনাথ সাক্ষ্য দেয়, আমি বুলাকীদাসকে জানি; তাহাকে মহারাজের নামে অঙ্গীকার-পর লিখিয়া দিতে দেখিয়াছি। অঙ্গীকার-পত্রে মাতাবরায়, শীলাবৎ ও মহম্মদ কমল সাক্ষী হয়। তাহাতে ৪০ হইতে ৫o হাজার টাকার কথা লিখিত হয়। মহম্মদ কমলের বাট মুর্শিদাবাদে ছিল, এক্ষণে সে মৃত। কমলউদ্দীন মহম্মদ কমল নহে। তাহাকে M চিহ্নিত একখানি নাগরী দলিল দেখান হইলে, সে বলে যে, ইহার বিষয় আমি জানি; তাহা একখানি হিসাবের তালিকা। যখন এই হিসাবের স্থির হয়, তখন তথায় জয়দেব চোবে ও পুরুষোত্তম গুপ্ত উপস্থিত ছিল; পদ্মমোহন দাস ও মোহনপ্রসাদ, মহারাজ ও গঙ্গাবিষ্ণুর সাক্ষাতে ইহাই স্বাক্ষর করিয়া দেয়।

  সেখ ইয়ার মহম্মদ সাক্ষ্য দেয় যে, সে মহম্মদ কমলকে জানে। কমলউদ্দীন ও মহম্মদ কমল এক নহে। মহম্মদ কমল ৫৬ বৎসর হইল মহারাজের কলিকাতার বাটতে মরিয়াছে এবং সে তাহাকে কবর দিয়াছে। মহম্মদ কমলকে সে বুলাকীদাসের অঙ্গীকার-পত্রে সাক্ষী হইতে দেখিয়াছে; সে পত্রে শীলাবৎ ও মাতাবরায়ও সাক্ষী হয়। তাহাতে ৪৮,০২১ টাকা লিখিত হয় বলিয়া মনে হইতেছে।

 মীর আসদ উল্লা সাক্ষ্য দেয় যে, সে বুলাকীদাসকে চিনিত; নবাব মীর কাসেম রোটাস হইতে বুলাকীর নিকট কতকগুলি টাকাকড়ি পাঠাইয়াছিলেন। বুলাকী তৎকালে সাসেরামের নিকট দুর্গাবতী নামক স্থানে সেনাশিবিরে ছিল। সে টাকা তথায় তাহার নিকট দিলে, সে একখানি রসিদে মোহর করিয়া দেয়। সেই রসিদ আসদ উল্লী উপস্থিত করে। আসদ উল্লা যে যে স্থানের কথা উল্লেখ করে, সে সময় তথায় সৈন্যশিবির না থাকার প্রমাণ করিবার জন্য অনেক কাপ্তেন, কর্নেল প্রভৃতিকে আদালত হইতে উপস্থাপিত করা হয়। অন্যান্য সাক্ষীর সম্বন্ধে অধিক বলিবার প্রয়োজন নাই।