চক্ষুর জলেতে মোর বুক ভাগি যায়।
আইঞ্চল[১] ধরিয়া মোছি পানি না ফুরায়॥
না দেখি পন্থের কায়া[২] জোর[৩] আখির জলে।
তরাইতে দরদী[৪] নাই বিপদের কালে॥
সাত জন্মের সুহৃদ মোর মৈষাল বন্ধু ছিল।
গোয়ালায় যাইবার কালে পন্থে দেখা হইল॥
জন্মের সুহৃদ মোর বাপের সমান।
তিন দিন দিল মোর গোয়ালেতে স্থান॥
মায়া-মমতায় সে যে বাপের চাইতে বাড়া।
এইখানে পাইলাম সুখের আছরা[৫]॥
এইত মইষাল বন্ধু বড় সাক্ষী মোর।
জাতিকুল বাচাইল দুঃখ করল দূর॥
একে একে কহিলাম সকল সাক্ষীর কথা।
এইখানে সাক্ষী মোর প্রাণের দেবতা॥
শ্রাবণ মাসেতে দেখ ঘন বরিষণ।
বিলের মাঝে কোড়া-কোড়ি করয়ে গর্জন॥
কোড়া শীকার করতে আইল রাজার কুমার।
মৈঘালের বাসে দেখা হইল তাহার॥
পরিচয় চাইল মোর রাজার কুমার।
এক দিন পরিচয় দিবাম তাহার॥
সময় পাইলে কইবাম আমার পরিচয়-কথা।
আর কিছু কই আমি করমের কথা॥
“ভাণ্ড ভরিয়া দিলাম জল পরাণ শীতল।
অন্তরে ফুটিল মোর সোণার কমল॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬০
মৈমনসিংহ-গীতিকা