কার্ত্তিকের সমান রূপ তাহারে দেখিয়া।
পরাণে মজিলাম আমি দগ্ধ হৈল হিয়া॥
মনে প্রাণে সপিলাম পরাণ তার পায়।
আমার পরাণ বন্ধু ঘরে লইয়া যায়॥
উপায় না দেখি কান্দি কই মনের কথা।
ঘরেতে থাকিব আমি লইয়া বুকের ব্যথা॥
“চলিল সোণার পান্সি ভরা নদী দিয়া।
লিলুয়ারী[১] বাতাসে দেখ পাল উড়াইয়া॥
কতদিনে আসিলাম এইত রাজার পুরে।
দাসী হইয়া আসি আমি রাণীর দুয়ারে॥
মনের আগুন মোর মনে জ্বলে নিবে।
আর কত দিন দুঃখ পরাণে সহিবে॥
মায়ের মতন রাণী আমারে ভুলায়।
সদাকাল আছি আমি ধইরা রাণীর পায়॥
“একদিন শুনি নগরের মধ্যি খানে।
ঢাক-ঢোল বাজে আর নাচে সর্ব্বজনে॥
দাস দাসীগণ যত আনন্দে অপার।
অঙ্গেতে বসন পড়ে যা আছে যাহার॥
“কিসের ঢাক কিসের ঢোল কিসের বাদ্য বাজে।
শায়ন্যা সংক্রান্তে[২] রাজা মনসারে পুজে॥
বাড়ীর কথা মনে পড়ে পড়ে মায়ের কথা।
শক্তিশেলে হাণে বুকে নিদারুণ ব্যথা॥
বাপের বাড়ীর মণ্ডপ শূন্যি কেবা পূজা করে।
অভাগিনী মাও মোর কান্দ্যা কান্দ্যা ফিরে॥
দরদ পাইয়া ছাইড়া আইলাম অভাগিনী মায়।
আমার দুঃখের কথা কইতে না জুয়ায়॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কমলা
১৬১
21—1918 B.T.