দিশা:—বিনোদিনী রাই। গোকুল ছাড়িযা বৃন্দাবনে যাই।
ডোমনীর বচন শুনিয়া মহেশ্বর।
ঝটীতে উঠিল গিয়া নায়ের উপর॥
খেয়া দেয় ডুমুনী যে ধরিয়া কাঁড়াব।
সাতারিয়। বৃষ গোটা নদী হৈল পার॥
ডুমুনীর রূপ দেখি অতি সুলক্ষণ।
কামেতে পাগল ভোলা স্থিব নহে মন॥
শিব বলে “শুনলো ডুমুনী তুমি আমার সই।
তোমার কাছেতে কিছু দুঃখের কথা কই॥
এমন যৌবন তোমার বৃথা বৈয়া যায়।
তোমারে ছাড়িয়া ডুমনা গিয়াছে কোথায়॥
ডুমুনী বলে “মোর ডোম গিয়াছে গাওয়ালে[১]।
একাকিনী খেয়া দেই এই ঘাটকূলে॥”
ডুমুনীর বোলে শিব পরম কৌতুক।
চোরে ধন পাইলে যেমন মনে হয় সুখ॥
কাঁড়াল[২] ধরিয়া ডুমুনী বৈঠা বায় লাসে।
ক্ষণেতে ডুমুনীর গায়ের কাপড় খসে॥
শিব বলে “শুন কই সরুয়া[৩] ডুমুনী।
ক্ষণে ক্ষণে দেখি যেন সাক্ষাৎ ভবানী॥
তোর রূপ দেখি মোর স্থির নহে প্রাণ।
প্রাণ রক্ষা কর মোরে দিয়া রতি দান॥”
ডুমুনী বলে “দাড়ী-চুল পাকাইলা কেনে।
আপনার কথা বুড়া না বুঝ আপনে॥
বানরের মুখে যেন ঝুনা নারিকেল[৪]।
কাকেতে খাইতে আশা যেন পাকা বেল॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১০
মৈমনসিংহ-গীতিকা