চারি দিকে দেবগণ ইন্দ্র সভামাঝে।
হংসাসনে বিষহরি আইলা নিজ কাজে॥
পদ্মার কপটে উষার তাল যে ভাঙ্গিল
ক্রুদ্ধ হইয়। দেবরাজ শাপ তারে দিল॥
“মনুষ্য হইয়া জন্ম থাকিবে ধরায়।”
এহি কথা শুনি ঊষা করে হায় হায়॥
ঊষার কান্দনে তবে কান্দে দেবগণ।
কিঞ্চিত গলিল তায় বাসবের মন॥
ইন্দ্র বলে “রাজা আছে চম্পক নগরে।
অনিরুদ্ধ জন্ম গিয়া লউক তার ঘরে॥
ঊষা গিয়া জন্ম লউক সাহ রাজার ঘরে।
মরা পতি জিয়াইবে মনসার বরে॥”
গন্ধর্ব্ব আছিল শাপে মানুষ হইল।
কর্ম্মসিদ্ধিহেতু পদ্মায় ধরায় আনিল॥[১]
অনিরুদ্ধ জন্ম লইল চন্দ্রধরের ঘরে।
লক্ষ্মীন্দর নাম রাখে চান্দ সদাগরে॥
হইল ঊষার জন্ম সাহরাজার পুরী।
ঊষার রাখিল নাম বেহুলাসুন্দরী॥
কোটীশ্বর দাস[২] কহে পূর্ব্বজন্মকথা।
এহি খানে কহি শুন বিবাহের কথা॥
গণকের কথা রাজার মনে যে পরিল।
কেশাই কামারে রাজা ডাকিয়া আনিল॥
মনেতে ভাবিয়া তবে চান্দ সদাগর।
শীঘ্র করি বানাইল লোহার বাসর॥
লোহার কপাট আর লোহার দিছে ছানি।
লোহা দিয়া গড়িয়াছে বড় বড় ঠুনী॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৬
মৈমনসিংহ-গীতিকা